প্রকাশ: শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২, ৯:৪০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
টানাটানির সংসার। নূন আনতে পান্তা ফুরায়, পান্তা আনতে নুন এমনই অবস্থা। পরিবারের অন্ন জোটাতেই যেখানে হিমশিম খাচ্ছেন বাবা-মা। সেখানে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচ দেয়া মানে তাদের পরিবারের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য। তবে, এতো অভাব ও শত কষ্টের মধ্যে থেকেও দমে যাননি দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার রানীগঞ্জ শীধল গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের সান্ত্বনা মালো।
জেলে ডেনিশ মালো ধনেশ্বর ও কৃষাণী করবিনা মালোর মেয়ে সান্ত্বনা মালো এখন দুনীতি দমন কমিশনে কনস্টেবল পদে চাকুরীতে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন। অভাবী জেলে বাবা ধনেশ্বর মালো মেয়ের লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করতে না পারলেও থেমে যাননি সান্ত্বনা মালো। টিউশুনি করে নিজের লেখাপড়ার খরচ যুগিয়েছেন। এখন সেই গরীব পরিবারে বইছে আনন্দের জোয়ার।
এখন তাকে দেখতে ও অভিনন্দন জানাতে আসছেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ। অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ঘোড়াঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রাফে খন্দকার সাহানশা, ঘোড়াঘাট উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি (শিক্ষক ও সাংবাদিক) মনোরঞ্জন মোহন্ত ভুট্টু। চার ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট সান্ত্বনা মালো। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পাস করেছেন বিরামপুর উপজেলার ধানজুরি বিদ্যালয় এবং এইচ এস সি ও স্নাতক পাস করেছেন ঘোড়াঘাট সরকারি কলেজ থেকে।মাস্টার্স ভর্তি হয়েছেন বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজে।
ঘোড়াঘাট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এস এম মনিরুল ইসলাম বলেন, সান্ত্বনা মালো আমাদের সামনে জীবনে অনেক পরিশ্রম করে বড় হয়েছে। ছোটবেলা থেকেই খুব মেধাবী ছিল। এখন তার সফলতায় এলাকায় মানুষ গর্বিত।
সান্ত্বনা মালোর বাবা জেলে ডেনিশ মালো ধনেশ্বর জানান, আমার পরিবারের সকলেই আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল এবং আমি খুবই গরীব মানুষ। মাছ ধরে বিক্রি করে আমার সংসার এবং চার ছেলে-মেয়েকে উচ্চ শিক্ষিত করেছি। দুনিয়ার অর্থ সম্পদের প্রতি কখনো আমার লোভ ছিল না এখনো নেই। আমার বাবাও ছিলেন জেলে। অভাবের মধ্যেই ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করেছে। এখন আমার মেয়ে দুনীতি দমন কমিশনে চাকুরী হয়েছে এটা ঈশ্বরের দান। আমি যেভাবে সারাজীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি ঠিক তেমনিভাবে যেন আমার মেয়ে সান্ত্বনা মালো তার উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারে সেজন্য সকলের কাছে দোয়া ও আশির্বাদ কামনা করছি।