আওয়ামী লীগের ২২তম ত্রিবার্ষিক জাতীয় কাউন্সিলে ১০ম বারের মতো দলটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন শেখ হাসিনা ও তৃতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ওবায়দুল কাদের।
শনিবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত ত্রিবার্ষিক জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচিত হন তারা। এই কাউন্সিলে অংশ নেন প্রায় ৭ হাজার কাউন্সিলর এবং ১৪ হাজার প্রতিনিধি।
দীর্ঘ নির্বাসন কাটিয়ে ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর থেকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তারই ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনা টানা ১০ম বারের মতো দলটির সভাপতি নির্বাচিত হলেন।
অন্যদিকে ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদকের পদ পান ওবায়দুল কাদের। ২১তম কাউন্সিলে তিনি পুনর্নির্বাচিত হন। ২২তম জাতীয় সম্মেলনে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়ে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে হ্যাটট্রিক করলেন তিনি।
শনিবার সম্মেলনের শুরুতে সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সঙ্গে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় প্রধানমন্ত্রীকে জাতীয় সংগীত গাইতে দেখা যায়। তার সঙ্গে উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মীরাও জাতীয় সংগীতে সুর মেলান।
পরে দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী পর্বে শোকপ্রস্তাব উপস্থাপন করেন দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া। সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ওবায়দুল কাদের।
সম্মেলনের প্রথম পর্ব শেষে দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয় বিকেল ৩টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে। এ অধিবেশনেই দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়। এ সময় দলের নেতৃত্ব নির্বাচনে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদেরকে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হয়েছেন
বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি
শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি
কাজী জাফর উল্লাহ
ইঞ্জি. মোশারফ হোসেন এমপি
শ্রী পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য
নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি
ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি
লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি
মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন
শাজাহান খান এমপি
জাহাঙ্গীর কবির নানক
আব্দুর রহমান
এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম
অ্যাড. কামরুল ইসলাম এমপি
সিমিন হোসেন রিমি
মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি
ডা. দীপু মণি এমপি
ড. হাছান মাহমুদ এমপি
আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম
এইচ. এন. আশিকুর রহমান এমপি
অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক
ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি
আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক
ড. শাম্মী আহমেদ
ফরিদুন্নাহার লাইলী
ড. সেলিম মাহমুদ
আমিনুল ইসলাম
দপ্তর সম্পাদক
ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া
অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা
ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি
বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক
দেলোয়ার হোসেন
ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আবদুস সবুর
জাহানারা বেগম
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি
যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক
খালি
শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক
শামসুন নাহার চাঁপা
মোঃ সিদ্দিকুর রহমান
শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক
খালি
সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক
শ্রী অসীম কুমার উকিল এমপি
স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক
ডা. রোকেয়া সুলতানা
সাংগঠনিক সম্পাদক
আহমদ হোসেন
বি. এম মোজাম্মেল হক
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি
এস. এম কামাল হোসেন
মির্জা আজম এমপি
অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন
শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল
সুজিত রায় নন্দী
উপ-দপ্তর সম্পাদক
সায়েম খান
উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক
খালি
সদস্যদের নির্বাচিত করবে প্রেসিডিয়াম সভায় নির্বাচন হবে।
ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের এখন পর্যন্ত সভাপতি হয়েছেন আটজন। এর মধ্যে বর্তমান সভাপতি শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ ১০ বার, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তিনবার করে সভাপতি নির্বাচিত হন। এ ছাড়া মওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ দুবার এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও আবদুল মালেক উকিল একবার করে সভাপতি নির্বাচিত হন। আর সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন একবার দলের আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। এ ছাড়াও মহিউদ্দিন আহমেদ দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন নয়জন। সবচেয়ে বেশি চারবার করে হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জিল্লুর রহমান। এ ছাড়া তাজউদ্দীন আহমদ ও ওবায়দুল কাদের তিনবার এবং আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী দুবার করে এবং প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক ও আবদুল জলিল একবার করে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরান ঢাকার রোজগার্ডেনে গণতান্ত্রিক কর্মী সম্মেলনের মধ্য দিয়ে জন্ম নেয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। পরে ১৯৫৫ সালের তৃতীয় জাতীয় সম্মেলনে সব ধর্ম-বর্ণের প্রতিনিধি হিসেবে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে দলের নাম করা হয় আওয়ামী লীগ।