পৌষের আগমনের সাথে সাথে ধীরে ধীরে শীত জেঁকে বসেছে। ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) ক্যাম্পাস। নিজের পুরো সৌন্দর্যকে প্রকাশ করার জন্য শীতের সাজে সেজেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১ একর জুড়ে নয়নাভিরাম ক্যাম্পাস।
পৌষ মাসের শুরু থেকে সকাল থেকে কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসের সর্বত্র। এতদিন মোটামুটি শীত অনুভূত হলেও কুয়াশার তেমন দেখা মেলেনি। তবে পৌষের শুরু থেকে তীব্র কুয়াশা পড়তে দেখা যায় ক্যাম্পাসে। একই সঙ্গে বেড়েছে শীতের তীব্রতা।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) সবুজের নৈসর্গিক শোভামÐিত শীত আসে চিরচেনা রূপের বাইরে আরও কিছু মুগ্ধতা ও অনবদ্য কিছু বৈশিষ্ট্য। নোবিপ্রবির প্রকৃতি ও পরিবেশটা অনেকটাই গ্রামীণ আবহে তৈরি। নানান প্রজাতির ফুলের সৌরভে মুখরিত হয়ে আছে ক্যাম্পাস।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, তীব্র কুয়াশা পড়ায় এক আবাসিক হল থেকে অন্য আবাসিক হল ও একাডেমিক ভবন থেকে অন্য একাডেমিক ভবন দেখা যাচ্ছে না। কিছু দুর গেলে কোনো মানুষকেও চোখে পড়ছে না।বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস গেট পেরিয়ে গোলচত্বর, প্যারিস রোড, নীল দিঘির পাড়সহ সবকিছুই প্রকৃতিপ্রেমীদের ডেকে নিয়ে আসে ¯িœগ্ধ সকালে শীতের রূপ-রস আস্বাদনে। কুয়াশায় মোড়া অল্প আলো ক্যাম্পাসের প্রকৃতিকে করে তোলে আরও রহস্যময়, আরও মোহনীয়। ভবনগুলো তার নিজস্বতা ফিরে পায় শিশির আর কুয়াশার মাঝে। গাছের পাতায় ও ঘাসের ডগায় ডগায় জমে আছে শিশির। এদিকে শীতকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে লগো ও নাম সংবলিত হুডি বানানোর ধুম।
বেলা বাড়ার সাথে সাথে গাছের ফাঁক গলে শিশির ভেজা ঘাসের উপর সূর্যের শীতল উত্তাপহীন কিরণ এসে পড়ে। তখন শিশির ও কুয়াশাকে কাটিয়ে তুলে। প্রাণভরে শ্বাস নেয়া যায় অনায়াসে। আর শীত যেন এই ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য আরও অনেক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। শীতের আগমনে ক্যাম্পাসের রঙ-বেরঙের ফুল যেন সবার মন কাঁড়ে। গোলাপ, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, কসমস, অ্যাস্টার, সিলভিয়া, জিনিয়া, গাঁদাসহ নানান প্রজাতির ফুলের সৌরভে মুখরিত থাকে ক্যাম্পাস।
সকালে তীব্র কুয়াশার মধ্যে দেখা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ১৬ তম ব্যাচের সাজিয়া আফরিনের সাথে। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে প্রচুর কুয়াশা পড়ছে। এই কুয়াশায় ক্যাম্পাসটা অতিরিক্ত সুন্দর লাগছে, এমনিতেই আমাদের ক্যাম্পাস অনেক সুন্দর। ক্যাম্পাসে এসে কুয়াশা উপভোগ করার আনন্দটা বর্ণনাতীত। ছোট বেলায় কুয়াশা দেখতে পারতাম না কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে উপভোগ করতে পারছি।
ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান শরীফ বলেন, নোবিপ্রবির ১০১ একর ক্যাম্পাস হলো সৌন্দর্যের লীলাভূমি। সকালের কুয়াশায় সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কুয়াশার সাথে অনেকে ছবি তুলতে আসে। আমিও ছবি তুলতে বের হয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবাহন চালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, শিশির আর কুয়াশা ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বাড়ায়। অনেক ভাল লাগে দেখতে। সাত সকালের কুয়াশা উপভোগ করার মতো।
কুয়াশার মধ্যে গাড়ি চালাতে গেলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। অনেক সাবধানে চলাচল করতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ এন্ড মেরিন সাইন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক প্রিয়াঙ্কা রানী মজুমদার বলেন, নাগরিক জীবনে এখন মানুষ কুয়াশা খুব বেশি দেখতে পায় না। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘন কুয়াশা মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। যেনো স্বর্গীয় সৌন্দর্য। কুয়াশার মধ্যে শীতের পাখি এসেছে নোবিপ্রবিতে।