বিশ্বে বায়ুদূষণের শীর্ষে থাকা শহরগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার নাম উঠেছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ারের সূচক এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) ৩০৮ স্কোর নিয়ে বুধবার সকাল ৯টায় এই তালিকায় প্রবেশ করে ঢাকা।
একই সময়ে চীনের হুবেই প্রদেশের শহর উহানের একিউআই স্কোর ছিল ২৫২ এবং বায়ুদূষণে প্রায় সময়েই শীর্ষে থাকা নয়াদিল্লির স্কোর ছিল ২১৪।
দুপুর ১টার দিকে অবশ্য এ তালিকায় শীর্ষে উঠে আসে নয়াদিল্লি। ভারতের রাজধানী শহরটির একিউআই স্কোর এ সময় ছিল ২৪৩। তারপরেই ২২১ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল ইরাকের রাজধানী বাগদাদ।
এছাড়া এসময় ১৮৯ স্কোর নিয়ে পাকিস্তানের বাণিজ্যিক রাজধানী করাচি ছিল তৃতীয় স্থানে এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা ১৮৯ স্কোর নিয়ে নিয়ে চতুর্থ স্থানে ছিল।
এদিকে, বুধবার সকালের তুলনায় দুপুরে ঢাকার বাতাসের দূষণের মাত্রা হ্রাস পেয়েছিল বলে জানা গেছে। একিউ সূচক বলছে, দুপুর ১টার দিকে ১৬২ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত নগরীগুলোর তালিকায় দশম স্থানে ছিল ঢাকা।
প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয়; পাশপাশি বাতাসের গুণাগুণগত পরিস্থিতির জেরে তাদের জন্য কোন ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে, তাও জানায়।
সাধারণত ৫ ধরণের দূষণের ওপর ভিত্তি করে একিউআই স্কোর নির্ধারিত হয়— অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা পিএম১০ এবং পিএম২, কার্বন ডাই অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, সালফার অক্সাইড এবং ওজন।
একিউ সূচক অনুযায়ী, কোনো শহরের বাতাসের গুণাগুণ যদি ০ থেকে ৫০ পয়েন্টের মধ্যে থাকে তাহলে তা ‘ভালো’, ৫১ থেকে ১০০’র মধ্যে থাকলে ‘সন্তোষজনক’, ১০১ থেকে ২০০ পয়েন্টের মধ্যে থাকলে ‘সহনীয়’, ২০১ থেকে ৩০০’র মধ্যে থাকলে ‘খারাপ’, ৩০১ থেকে ৪০০’র মধ্যে থাকলে ‘খুব খারাপ’ এবং ৪০১ থেকে ৫০০’র মধ্যে থাকলে ‘গুরুতর’।
ঢাকার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে যেসব সমস্যার মধ্যে আছেন, সেসবের মধ্যে বায়ুদূষণ একটি। বিশেষ করে শীতকালে এই দূষণের মাত্রা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়।
২০১৯ সালে ঢাকার বায়ুদূষণ পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল বিশ্বব্যাংক। সেখানে বলা হয়েছে, ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উৎস হচ্ছে ইটাভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত কাজের ফলে সৃষ্ট ধুলো।
জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেবলমাত্র বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বে প্রতি বছর মারা যায় ৭০ লাখ মানুষ, যাদের একটি বড় অংশই শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক।