#গৌরবোজ্জ্বল বিজয় আমাদের এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা: অধ্যাপক ড. ফারুক মির্জা। #বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও বাংলাদেশ একসূত্রে গাঁথা: আফছার খান সাদেক।
প্রকাশ: শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২২, ১০:৩৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
মহান বিজয় দিবস বাঙালির শ্রেষ্ঠ অর্জন। মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতীয় জীবনে এক গৌরবময় অধ্যায়। তাই, মহান বিজয় দিবস প্রতিটি বাঙালির সামনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আজ এই স্বাধীন বাঙালি জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই অদম্য স্পৃহা ও অনুপ্রেরণার কারণেই মাত্র এক যুগের মধ্যে বিশ্বের বুকে ডিজিটাল ও মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বাংলাদেশ।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৯১৯তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা, বেলজিয়াম বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফারুক মির্জা, লন্ডন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক, বহির্বিশ্বে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য প্রতিষ্ঠাতা আফছার খান সাদেক। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ।
অধ্যাপক ড. ফারুক মির্জা বলেন, মহান বিজয় দিবস বাঙালির শ্রেষ্ঠ অর্জন। মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতীয় জীবনে এক গৌরবময় অধ্যায়। তাই, মহান বিজয় দিবস প্রতিটি বাঙালির সামনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। মহান বিজয় দিবস আমাদের সত্য ও ন্যায়ের পথে লড়াই করতে অনুপ্রেরণা যোগায়। বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় এ মাসের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয়। স্বাধীন জাতি হিসেবে সমগ্র বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূখণ্ড। আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বিজয়ের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় এ দিনে। বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্নপূরণ হবার পাশাপাশি বহু তরতাজা প্রাণ বিসর্জন আর মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই অর্জন হওয়ায় বেদনাবিধূর এক শোকগাঁথার মাসও এই ডিসেম্বর। এ মাসেই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর আল শামসদের সহযোগিতায় দেশের মেধা, শ্রেষ্ঠ সন্তান-বুদ্ধিজীবী হত্যার নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। সমগ্র জাতিকে মেধাহীন করে দেয়ার এ ধরনের ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞের দ্বিতীয় কোন নজির বিশ্বে নেই। ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা এবং জাতীয় চার নেতাকে খুনের পর যে দুঃসহ পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যেতে হয় বাংলাদেশকে, সেই হিংস্র থাবায় কিছুটা দিকভ্রান্ত হয়ে পড়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাকারী দল আওয়ামী লীগও। কিন্তু পরবর্তীতে দেশে ফিরে এসে, আওয়ামী লীগ পুনর্গঠনের মাধ্যমে, নিপীড়িত বাঙালি জাতিকে আবারো জীবনের স্বপ্ন দেখান শেখ হাসিনা। সুদীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশবাসী সাংবিধানিক-গণতান্ত্রিক অধিকার সমুন্নত রেখে দেশকে নিয়ে যাচ্ছেন উন্নয়নের চরম শিখরে।
আফছার খান সাদেক বলেন, ১৬ ডিসেম্বর। বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে আমাদের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটেছিল। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে মুক্তির মহামন্ত্রে উজ্জীবিত করে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের পথে এগিয়ে নিয়ে যান। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ’৪৮-এ বাংলা ভাষার দাবীতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের পথ বেয়ে ’৫২-এর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়লাভ, ’৫৬-এর সংবিধান প্রণয়নের আন্দোলন, ’৫৮-এর মার্শাল ’ল বিরোধী আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ’৬৬-এর বাঙালির মুক্তির সনদ ৬-দফার আন্দোলন, ৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ’৬৯-এর রক্তঝরা গণঅভ্যুত্থান, ৬-দফা ভিত্তিক ’৭০-এর ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন, ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ খ্যাত কালজয়ী ঐতিহাসিক ভাষণ ও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন প্রভূত ঘটনা প্রবাহের মধ্য স্বাধীনতা অর্জনের চূড়ান্ত লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠে বাঙালি জাতি। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের কালো রাত্রিতে পাকহানাদার বাহিনী কর্তৃক বাঙালির উপর নির্বিচারে গণহত্যা শুরু হলে ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙালি জাতি। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী জনযুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী যৌথবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে এবং পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামে নতুন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। আজ এই স্বাধীন বাঙালি জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই অদম্য স্পৃহা ও অনুপ্রেরণার কারণেই মাত্র এক যুগের মধ্যে বিশ্বের বুকে ডিজিটাল ও মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বাংলাদেশ।