পুলিশ বলছে, তাদের ব্যাপারে কারাগারে থাকা একাধিক জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা চলছে বলে জানান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মইনুল হাসানের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মাধবপুরে। আবু সিদ্দিকের বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেটেশ্বর গ্রামে। দুজনই জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য। ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার একটি মামলায় ২০ নভেম্বর তাদেরকে সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছিল।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, এই ছিনতাই ঘটনার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত থাকায় সিয়াম নামে জঙ্গি সংগঠনের এক সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে মূল পরিকল্পনাকারী। এছাড়া, জঙ্গি সংগঠনের বেশ কয়েকজন সদস্যকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে এখনও সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি যে, পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গি দেশে রয়েছে কিনা, নাকি এরই মধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তারা এখনও এ ব্যাপারে মুখ খুলছেন না।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এরই মধ্যে রেড অ্যালার্টের পাশাপাশি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে। রাজধানীর বেশ কয়েকটি জায়গায় জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা আত্মগোপনে থাকতে পারে— এমন তথ্যের ভিত্তিতে হোটেল ও আবাসিক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। যদিও অভিযানে পলাতক দুই জঙ্গির হদিস মেলেনি। কিংবা কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
এর মধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে দুই জঙ্গিকে ধরিয়ে দিতে সন্ধান দেওয়ার জন্য ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। তার পরও কোনও তথ্যই পাননি তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ওই দুই জঙ্গি কারাগারের সেলে অন্য যে জঙ্গিদের সঙ্গে থাকতো, তাদের সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। কারাগারে বসে ওই দুই জঙ্গি মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছে— এমন তথ্য পাওয়া গেছে। পরিকল্পিতভাবে তারা এ ঘটনার ঘটিয়েছে।
কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এ পর্যন্ত আমরা ছিনতাই হওয়া দুই জঙ্গির অবস্থান শনাক্ত করতে পারিনি। তবে তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে। আমরা ধারণা করছি, তারা দেশের মধ্যেই রয়েছে। দেশ ছেড়ে যেতে পারেনি।’
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘আদালত চত্বর থেকে ছিনতাই হওয়া দুই জঙ্গি সদস্যের অবস্থান সম্পর্কে আমরা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। সাইবার ওয়ার্ল্ডসহ বিভিন্ন নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।’
জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ৫ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তারা হলেন— সিএমএম আদালতের হাজতখানার কোর্ট ইন্সপেক্টর মতিউর রহমান, হাজতখানার ইনর্চাজ (এসআই) নাহিদুর রহমান ভুইয়া, আসামিদের আদালতে নেওয়ার দায়িত্বরত পুলিশের এটিএসআই মহিউদ্দিন, কনস্টেবল শরিফ হাসান ও কনস্টেবল আব্দুস সাত্তার।