প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ৯:২০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বাঁশের তৈরী বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বিক্রি করে দিনানিপাত হচ্ছে শ্রী সঙ্গীত কুমার দেব (৩৫) নামে এক যুবকের। বাঁশের তৈরী পণ্য কাঁধে ও হাতে করে ঘুরে বেড়ান এ অঞ্চলের রাস্তাঘাট, পাড়া-মহল্লা ও হাটবাজার। দিন শেষে সঙ্গীতের রাত কাটে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে। তার ঝুলিতে রয়েছে বিভিন্ন আকার ও সাইজের নানান রংয়ের কুলা, ফলের ডালা, ঢোলা, খালই, ঝুড়ি, দোলনা, চালনসহ হস্তশিল্পের নানা সব পণ্য সামগ্রী। তার হাতে থাকা ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পের নান্দনিক এসব বাঁশ পণ্য সামগ্রী নজর কারছে শিশুসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষের। ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে বাঁশের এসব পণ্য। সঙ্গীত কুমার দেবের বাড়ি রাজবাড়ি এলাকার গোয়ালন্দ। সে ওই এলাকার শ্রী সৃষ্টি কুমার দেবের পুত্র। হস্তশিল্পের এসব পণ্য বিক্রি করে মাসে গড়ে প্রায় ২০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে তার।
জানা গেছে, ৫ ভাই বোনের মধ্যে সঙ্গীত দেব বড়। নিজস্ব ভিটাবাড়ি না থাকায় পিতা মাতাসহ পরিবার পরিজন নিয়ে গোয়ালন্দে ভাড়া বাসায় থাকেন সঙ্গীত দেবরা। পরিবারটি হস্তশিল্পের ওপর নির্ভরশীল। পুরো সংসার চলে বাঁশের পণ্য সামগ্রী তৈরী ও বিক্রির আয়ে। সঙ্গীত দেব বাঁশের এসব পণ্য বিক্রি করছেন মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর, লৌহজং, সিরাজদিখানসহ বিভিন্ন স্থানে। এ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন মেলা-উৎসবে আসা দর্শনার্থীদের কাছে তুলে ধরছেন কুটির শিল্পের তৈরীকৃত বাঁশের বিভিন্ন পণ্য।
এক সাক্ষাৎকালে সঙ্গীত কুমার দেব দৈনিক ভোরের পাতা পত্রিকার প্রতিনিধিকে বলেন, নিজস্ব হস্তশিল্পের বাঁশের পণ্য বিক্রি করতে বিক্রমপুরে এসেছেন। বিক্রির দিন শেষে আপাদত অস্থায়ীভাবে থাকছেন শ্রীনগর বাজার এলাকায়। মাঝে মধ্যে পার্শ্ববর্তী সিরাজদিখান উপজেলার নিমতলা বাজারেও অবস্থান করেন তিনি। ঘুরে ফিরে দৈনিক ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা বেচাকেনা হচ্ছে তার। পরিবারের সদস্যরা সবাই হস্তশিল্পের কাজের সাথে জড়িত। ভাড়া বাড়িতেই তারা বাঁশের এসব পণ্য তৈরী করেন। পাইকারীর পাশাপাশি খুচরাভাবে বিক্রি করছেন।
তবে শিশুদের খেলনা হিসেবে বাঁশের তৈরী পণ্য এখন বেশী বিক্রি হচ্ছে। সাংসারিক কাজে ব্যবহারযোগ্য বাঁশের অসংখ্য পণ্য সামগ্রীও তৈরী করছেন। তবে প্লাস্টিকের দাপটে পরিবেশ বান্ধব বাঁশের এই হস্তশিল্পটি হারাতে বসেছে। তার পুর্ব পুরুষরাও এ হস্তশিল্প পেশায় ছিলেন। তাই ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পটি ধরে রাখার চেষ্টা করছি বলেন তিনি।