প্রকাশ: শনিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:৪০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
সরিষা ফুলের হলুদ হলুদে অপরূপ সাজে সেজেছে মাঠের পর মাঠ জুড়ে। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিস্তৃত মাঠ। সরিষার ভালো ফলনে কৃষকদের মুখেও সোনা রাঙা হাসি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরাঞ্চল, বরেন্দ্র অ ল আর নদীর ধারে সরিষার আবাদ। সামান্য পরিচর্যা আর অল্প খরচে সরিষা চাষে লাভের আশা করছেন চাষিরা। আর প্রতিটি ফুলে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন।
আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ফলন ভাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, সরিষা চাষে খরচ ও পরিশ্রম দু’টোই কম হওয়ায় চাষীদের মধ্যে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার ৫টি উপজেলায় আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্য করা হয়েছিল ১৭ হাজার ৮’শ হেক্টর জমিতে। এর বিপরীতে আবাদ হয়েছে ২১ হাজার ৪’শ ৭০ হেক্টর জমিতে। এবার ৪ হাজার ৩৯০ হেক্টর জমিতে আবাদ বেশী হয়েছে। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ৬ হাজার ৮০ হেক্টর, নাচোলে ৬ হাজার ৫’শ হেক্টর, শিবগঞ্জে ৪ হাজার ২’শ হেক্টর, গোমস্তাপুরে ৩ হাজার ৩’শ ২০ হেক্টর ও ভোলাহাটে ১ হাজার ৩’শ ৭০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে।
সরেজমিনে চরাঞ্চল বেষ্টিত সুন্দরপুর ইউনিয়নের যোগান্দারপাড়া ও খড়িবোনা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে হলুদ আর হলুদ ও ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে সরিষা ক্ষেত। আমন ধান কাটার পর জমি কয়েক মাসের জন্য পরিত্যক্ত থাকে। আর সেই জমিতেই অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। কোন কোন মাঠে সরিষার দানা বাঁধতে এবং আবার কোথাও পুরোদমে ফুল ফুটতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে এবং রোগ-বালাই না হলে ভাল ফলনের আশা করছেন চাষিরা। খড়িবোনা এলাকার আব্দুল খালেক জানান, প্রতি তার জমিতে বিভিন্ন ফসল আবাদ করে থাকেন। এবার ১৫ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। ১ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করতে খরচ হয় সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা। শুধুমাত্র বীজ ও আর সামান্য সার দিলেই সরিষা আবাদ করা যায়। যদি আবহাওয়া অনুকুলে থাকে তাহলে ফলন ভাল হবার আশা করছেন। আরেক চাষী জালাল উদ্দিন জানান, ফলন পাওয়া যায় বিঘা প্রতি ৫ থেকে ৬ মণ।
তিনি আরো জানান, অগ্রহায়নের মধ্য ভাগ থেকে সরিষার চাষ শুরু করা হয় এবং পৌষ মাসের মধ্য ভাগে মাড়াই শুরু হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কানিজ তাসনোভা জানান, সরিষা চাষে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। উপসহকারী কর্মকর্তারা নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। এ বছর সরিষার ভালো ফলনের হাতছানি দিচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, সরিষা চাষে কৃষকরা যেভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছে, যা ইতিবাচক। এটি কৃষি ক্ষেত্রে আরেকটি সাফল্য। চাষাবাদে খরচের পরিমাণ কম ও পানি ২/৩বার দিলেই হয়। বারি ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ জাতের এবং বিনা ৪ ও ৯ জাতের সরিষা জেলায় আবাদ হয়েছে। দেশী জাতের সরিষার ৭০ থেকে ৭৫ দিনে ফসল উৎপাদন এবং উচ্চ ফলনশীল জাতের ৭৫ থেকে ৮০ দিনের ফলন হয়ে থাকে।