শনিবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের হয়ে রান তাড়া করতে নামেন আনামুল হক বিজয় ও লিটন দাস। প্রথম চার ওভারে দুজন যোগ করেন ৩৩ রান। যা ম্যাচের পরিপ্রেক্ষিতে বেশ ভালো শুরুই বলা যায়। তবে পরের ওভারেই ছন্দপতন।
পঞ্চম ওভারে আক্রমণে আসেন আক্সার প্যাটেল। তার করা প্রথম বলেই উড়িয়ে মারতে গিয়ে মোহাম্মদ সিরাজের তালুবন্দী হন ৮ রান করা বিজয়। এর কিছু পরেই সাজঘরে ফেরেন লিটন। তিনি করেন ২৯ রান।
দলের বিপদের মুখে নেমে আরো একবার ব্যর্থতা উপহার দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। আক্সার প্যাটেলের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হওয়ার আগে মাত্র ৭ রান করেন তিনি। দলে সুযোগ পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেননি ইয়াসির আলী রাব্বি। ২৫ রান করে আউট হন এই ব্যাটার।
দলের হয়ে একাই লড়তে থাকা সাকিব ফিরলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি ভারতের হাতে চলে আসে। কুলদীপ যাদবকে কাট করতে গিয়ে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন টাইগার অলরাউন্ডার। তিনি করেন ৪৩ রান।
বাকি ব্যাটারদের মাঝে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২০ রান করেন। আর কেউই দুই অংকের ঘরে রান করতে পারেননি। মুস্তাফিজুর রহমান আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস, নিশ্চিত হয় টাইগারদের বড় হার।
ভারতের হয়ে একাই ৩ উইকেট নেন শার্দুল ঠাকুর। আক্সার প্যাটেল নেন দুই উইকেট। এছাড়া মোহাম্মদ সিরাজ, উমরান মালিক, কুলদীপ যাদব ও ওয়াশিংটন সুন্দর প্রত্যেকে একটি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস। বল হাতে শুরুতেই সাফল্যের দেখা পায় টাইগাররা। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ৩ রানে ফেরেন শিখর ধাওয়ান।
এরপর কোহলিকে আউট করার সুযোগ পেলেও তা হারায় টাইগাররা। ভারতীয় ইনিংসের সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলে মিরাজের ফ্লাইটে ধোঁকা খেয়ে ফ্লিকে ডিপ মিডে বল তুলে দেন তিনি। তবে বলের গতি আন্দাজ করতে পারেননি লিটন, করেন মিস।
এরপর বাংলাদেশকে আর কোনো সুযোগ দেননি কোহলি। মিরাজের বলে লং অনে সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটি পূরণ করেন তিনি। এর আগে আপন গতিতে সেঞ্চুরির মাধ্যমে আক্রমণাত্মক ইনিংসের পূর্ণতা দেন ঈশান কিষাণ। আফিফ হোসেনকে সুইপ করে ৮৫ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি।
এদিন ঈশানের মনে ছিল অন্য কিছু। ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়া যেন তার জন্য অমাবস্যার চাঁদ। যে কয়টি ম্যাচ খেলেছেন, কখনোই পাননি সেঞ্চুরির দেখা। সেই তিনি যেন সেঞ্চুরির পর ধারণ করেন রুদ্ররূপ।
একেরপর এক বল সীমানার বাইরে পাঠাতে থাকেন ঈশান। যার মাধ্যমে তুলে নেন দুর্দান্ত এক ডাবল সেঞ্চুরি। একইসঙ্গে ঢুকে যান ইতিহাসের পাতায়। আউট হওয়ার আগে একগাদা রেকর্ডকে সঙ্গী করে ২১০ রান করেন তিনি।
ঈশানের বিদায়ের পরই ব্যাটিং ধসে পড়ে ভারত। অল্প সময়ের ব্যবধানে সাজঘরে ফেরেন শ্রেয়স আইয়ার, লোকেশ রাহুল ও বিরাট কোহলি। আইয়ার ৩ ও রাহুল ৮ রানে ফিরলেও ক্যারিয়ারের আরেকটি সেঞ্চুরির দেখা পান কোহলি। তিনি করেন ১১৩ রান।
ইনিংসের শেষদিকে ওয়াশিংটন সুন্দরের ৩৭ ও আক্সার প্যাটেলের ২০ রানের দুই ক্যামিওতে ৪০০ পার করে ভারত। বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন আহমেদ, সাকিব আল হাসান ও এবাদত হোসেন দুটি এবং মুস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ একটি করে উইকেট শিকার করেন।