কাতার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে ব্রাজিল-ক্রোয়েশিয়ার লড়াইয়ে ১২০ মিনিটের খেলা ১-১ ব্যবধানে ড্র হয়। এরপর পেনাল্টিতে ৪-২ ব্যবধানে জিতেছে ক্রোয়েশিয়া। একইসঙ্গে প্রথমবারের মতো ব্রাজিলের বিপক্ষে জয়ের দেখা পেয়েছে দলটি।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে লক্ষ্যভেদ করে ব্রাজিল শিবিরে স্বস্তি ফিরিয়েছিলেন নেইমার। এরপর ১১৭ মিনিটে গোল করে অবিশ্বাস্যভাবে ক্রোয়াটদের ম্যাচে ফেরান ব্রুনো পেটকোভিচ।
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ফেভারিট হিসেবেই কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াইয়ে খেলতে নেমেছিল ব্রাজিল। তবে মাঠের খেলায় সেলেসাওদের সঙ্গে সমানতালে লড়াই করেছে ক্রোয়াটরা। তবে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে নেইমারের গোলে এগিয়ে ব্রাজিল।
ম্যাচের ৪৪ শতাংশ সময় বলের দখলে রেখে ব্রাজিলের গোলমুখে নয়বার শট নেয় ক্রোয়েশিয়া। যার মাঝে ১১৭ মিনিটের গোল হওয়া শটটিই ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে ব্রাজিলের কাছে বলের দখল ছিল ৪১ শতাংশ সময়। নেইমার-ভিনিসিয়ুসরা ১৯টি শট নেয়, যার মাঝে এগারোটি লক্ষ্যে ছিল।
এর আগে কখনোই ব্রাজিলকে হারাতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া। তবে মাঠের খেলায় আগের ইতিহাসের ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি। শুরু থেকেই ব্রাজিলের ওপর একেরপর এক আক্রমণ শানায় ক্রোয়েশিয়ার খেলোয়াড়রা।
ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে গোলের জন্য প্রথম আক্রমণ করেন ব্রাজিলের ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ছয় মিনিট পর গোলের সুবর্ণ সুযোগ মিস করেন ক্রোয়েশিয়ার জুরানোভিচ। এরপর ধীরে ধীরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা।
বলতে গেলে ম্যাচে বারবার ব্রাজিলের রক্ষণে ভীতি ছড়িয়েছে ক্রোয়েশিয়া। তবে ফিনিশিং দুর্বলতায় নির্ধারিত ৯০ মিনিটে তারা কোনো শটই লক্ষ্যে রাখতে পারেনি। বিপরীতে ব্রাজিল যে একেবারে ছেড়ে কথা বলেছে তা নয়। তবে অল্প সুযোগের প্রতিটিই ঠিকঠাক লক্ষ্যে রেখেছে তারা। শুধু গোলের দেখাটাই পায়নি।
ম্যাচে ব্রাজিলের জয়ের পথে একাই ঢাল হয়ে দাঁড়ান ক্রোয়াট গোলকিপার ডমিনিক লিভানকোভিচ। নেইমার, ভিনিসিয়ুস, রিচার্লিসনদের একেরপর এক আক্রমণ আটকে দেন তিনি। বলা যায় তার নৈপুণ্যেই গোলের দেখা পায়নি ব্রাজিল। যে কারণে নির্ধারিত সময়ে কোনো দল গোলের দেখা পায়নি। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথম ১৫ মিনিটের খেলা ছিল আগের ৯০ মিনিটের মতোই। এ সময় এক মিনিট এক্সট্রা টাইম দেন রেফারিরা। আর বাকি থাকা এই কয়েক সেকেন্ডই কাজে লাগান নেইমার।
অনবদ্য দক্ষতায় ক্রোয়াট ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে দেয়াল হয়ে থাকা লিভানকোভিচকে বোকা বানিয়ে কঠিন কোণ থেকে বল জালে পাঠান নেইমার। সেই সঙ্গে পুরো গ্যালারি গর্জে ওঠে সাম্বার তালে।
নেইমারের এই গোলের পর জয় থেকে মাত্র ৩ মিনিট দূরে ছিল ব্রাজিল। কিন্তু এখানে যেন অন্য কিছু ভেবে রেখেছিলেন বিধাতা। আর তাই যেন আচমকা আক্রমণে ব্রাজিলকে স্তব্ধ করে দেন ব্রুনো। তার গোলে যেন আরেকবার লড়াই করার লাইফলাইন পায় ক্রোয়াটরা।
এখন টাইব্রেকার তথা পেনাল্টিতে নির্ধারিত হয় ম্যাচের ফলাফল।