প্রকাশ: শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮:২০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
পিতার দারিদ্র্যতা রুখতে পারেনি সাদিয়ার লেখাপড়ার প্রতি অদম্য সাহস আর আগ্রহ। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সহযোগিতায় নিজের আগ্রহ নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে এ বছর রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের অধীনে পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে সে।
মোছা. সাদিয়া খাতুন পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের বোঁথড় গ্রামের মো. আব্দুস সামাদ ও জামেনা খাতুন দম্পতির মেয়ে। হতদরিদ্র দিনমজুর সামাদ দারীদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে চালিয়ে যাচ্ছেন মেয়ের লেখাপড়ার ব্যয়ভার।
স্থানীয়রা জানান, অভাব অনটনের সংসার হলেও মেয়ে সাদিয়ার লেখাপড়ায় প্রবল আগ্রহ তার। সাদিয়া পঞ্চম শ্রেণিতে পি.ই.সি পরীক্ষায় এবং অষ্টম শ্রেণির জে.এস.সি পরীক্ষায় জি.পি.এ ৫ পেয়েছে।
সাদিয়ার বাবা আব্দুস সামাদ আক্ষেপের সুরে বলেন, বাবার রেখে যাওয়া বসত বাড়ির ১০ শতক ভিটে ছাড়া আর কোন সম্পদ নেই এবং বাড়তি আয়ের উৎসও নেই। এ কারণে মেয়েটার উচ্চ শিক্ষার আশা পূরণ করা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।
সাদিয়ার মা জামেনা খাতুন কষ্টের সাথে জানান, কোনদিন একটা ভাল জামাকাপড় দিতে পারেননি আমার মেয়েকে। ভাল খাবারও দিতে পারেননি তাকে। মেয়েকে প্রাইভেট পড়াতে পারেননি। অনেক কষ্টে পড়ালেখা করছে সে। এবার একটা ভাল কলেজে ভর্তি হতে চায় মেয়ে। কলেজে লেখাপড়ার যে খরচের প্রয়োজন, তার যোগান দেওয়ার সামর্থ তাদের নেই। তাই মেয়ে এত ভাল ফল করলেও তারা মেয়ের কলেজে ভর্তি ও পড়াশুনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় প্রহর গুনছে।
জিপিএ ৫ পাওয়া সাদিয়া জানায়, তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেনসহ অন্যান্য শিক্ষকগন লেখাপড়ায় তাকে অনেক সহযোগিতা দিয়েছেন। এ জন্য স্যারদের কাছে সে চির কৃতজ্ঞ।
বিলচলন ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, সাদিয়া পড়ালেখায় অত্যন্ত আগ্রহী। ৬ষ্ঠ শ্রেণি হতে প্রতিটি পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করেছে। বাবার দারিদ্র্যতা ভয় না করে জয় করেছে সাদিয়া। উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করে সে ডাক্তার হয়ে সমাজের অসহায় মানুষের সেবা করতে চায়। তাই উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল কলেজে পড়ার ইচ্ছে তার। কিন্তু এই ইচ্ছে পূরণের জন্য সমাজের বিত্তবান ও শিক্ষানুরাগী মানুষের সহযোগিতার প্রয়োজন। সাদিয়ার লেখাপড়ায় মানবিক মানুষের সহযোগিতা পেলে পুরণ হতে পারে তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন।