শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বিএনপির বড় বিশৃঙ্খলার চেষ্টা আ.লীগের সতর্কতায় বিফল: তথ্যমন্ত্রী   সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিতে কাজ করছে সরকার: কাদের   নাটোরে ট্রেনে কাটা পড়ে ৩ জনের মৃত্যু   ‘কিছুই করি নাই শ্রেণিটা’ চোখ থাকতেও দেখে না: প্রধানমন্ত্রী   রাজকে আমার জীবন থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম: পরীমনি   সৌদি আরবের ক্লাবে যোগ দিলেন রোনালদো   বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
ঝিনাইগাতী অবহেলা-অযত্নে পড়ে আছে বধ্যভূমি
ঝিনাইগাতী প্রতিনিধি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:৩৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ঘাগড়া কুনাপাড়া গ্রামে স্বাধীনতাযুদ্ধে নির্যাতনের কালের সাক্ষী হয়ে অবহেলা অযত্নে পড়ে আছে বধ্যভূমিটি। উপজেলার হাতীবান্দা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ভবন থেকে পশ্চিমে প্রায় ৫০০ মিটার কাঁচা রাস্তা পেরোলেই দেখা মিলবে পবিত্র স্থানটি। কোনো নামফলক না থাকায় স্থানীয়রা ছাড়া নতুন কেউ বুঝতেই পারবে না এই ঐতিহাসিক বধ্যভূমির অস্তিত্ব।

বাঁশঝাড়ের নিচে নাম না-জানা শত শত শহীদের স্মরণে এখানে শুধুমাত্র স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের কোনো উদ্যোগ না থাকায় বধ্যভূমিটি অযত্নে পড়ে আছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ ও এলাকাবাসী জেলার সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি রক্ষায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

জানা গেছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী জেলার সবচেয়ে বড় ক্যাম্প স্থাপন করে কয়ারি রোড় এলাকায়। এখানে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে মানুষকে ধরে এনে নির্যাতন করে হত্যা করা হতো। ক্যাম্পের পাশেই ছিল টর্চার সেল। যুদ্ধের সময় মানুষের আর্তচিৎকার এখান থেকে ভেসে আসত। ক্যাম্পের ৫০০ মিটার পশ্চিম পাশে ১০ শতাংশ জমিজুড়ে তিন ফুট গভীর গর্ত ছিল। যুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি বাহিনী অসংখ্য মানুষকে ধরে এই ক্যাম্পে এনে নির্যাতন করে মেরে ফেলত। পরে এই গর্তে মরদেহ ফেলে দিত। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর গ্রামবাসী এলাকায় ফিরে এসে বড় গর্তটিতে অসংখ্য লাশ দেখতে পান। পরে গ্রামবাসী মিলে গর্তে থাকা লাশগুলো মাটিচাপা দেন।

পাকিস্তানি বাহিনী চলে যাওয়ার পর পরিত্যক্ত ঘরে মুক্তিযোদ্ধাদের শরণার্থীশিবির করা হয়। ভারতে আশ্রয় নেওয়া মানুষ বাড়ি ফেরার পথে এই শিবিরে দুই-তিন দিন বিশ্রাম করতেন। ২০০৮ সালে সেনাবাহিনী ১২ শতাংশ এই বধ্যভূমির জমি অধিগ্রহণ করে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে।

সরেজমিনে দেখা যায়, অযত্নের ফলে স্মৃতিস্তম্ভে শেওলা পড়ে গেছে। অসংখ্য পরগাছা জন্মেছে। বধ্যভূমিটির সীমানাপ্রাচীর না থাকায় স্মৃতিস্তম্ভের বেদিতে খড়ি শুকানো হচ্ছে। বেদির ওপর পড়ে আছে  গোবর ও খড়। 

স্থানীয় বাসিন্দা মো. মোজাফর আলী বলেন, পাকিস্তানি হানাদারেরা টর্চার সেলে মানুষকে নির্যাতন করত। 
তাদের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে যরা মারা যেতেন, তাদেরকে এখানের গর্তে ফেলে দিত। এখানে শত শত মানুষের লাশ পুঁতে রাখা আছে। এটি সরকারিভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য দাবি জানিয়েছেন তিনি। 
জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আয়েশা সিদ্দিকা রুপালী বলেন, এই বধ্যভূমির কোনো সীমানাপ্রাচীর নেই। এমনকি দেখাশোনার জন্য কোনো কমিটিও নেই। এটি রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। 

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুরুজ্জামান আকন্দ বলেন, এ উপজেলার ঘাগড়া কুনাপাড়া গ্রামের স্মৃতিস্ত¢টি অযতœ ও অবহেলায় পড়ে আছে। আজ পর্যন্ত এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় এখানে অবাধে বিচরণ করে গরু-ছাগল। শুকানো হয় গরুর গোবর। এটি জাতির জন্য খুবই লজ্জা ও দুঃখজনক বিষয়।

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও ভবিষৎ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অবহিত করতে হলে এসব বধ্যভূমি (গণকবর) সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আল মাসুদ বলেন, বিষয়টি তিনি জানেন। দ্রুত একটি প্রকল্পের মাধ্যমে বধ্যভূমির সীমানাপ্রাচীরসহ সারা বছর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ছাড়া নতুন প্রজন্ম যেন এই বধ্যভূমির ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারে, সে জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]