#বিজয়ের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণ করছেন শেখ হাসিনা: অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত। #ডিসেম্বর মাস আমাদের গৌরবের মাস: সাখাওয়াত হোসেন।
প্রকাশ: বুধবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০৫ এএম আপডেট: ০৭.১২.২০২২ ১২:১৭ এএম | অনলাইন সংস্করণ
আসলে বিজয় ছাড়া কিন্তু কখনোই স্বপ্ন পূরণ সম্ভব নয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে শুধু নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন জাতি কম আছে যে যারা দীর্ঘ সংগ্রাম করে স্বাধীনতার বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের মাস। আমাদের গৌরবের এবং গর্বের মাস ঠিক একই ভাবে এই মাসটি আমাদের জন্য বেদনার মাসও। কারণ এই মাসে আমরা যেমন বিজয় অর্জন করেছি ঠিক একইভাবে তৎকালীন সময়ে এই মাসে আমাদের অনেক বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়েছিল। একটি গর্বিত জাতি হিসেবে সগর্বে মাথা উঁচু করার স্পর্ধা আমরা অর্জন করি এ মাসেই।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৯০৮তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস এন্ড রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিজের গভর্নিংবডির সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সভাপতি মোঃ সাখাওয়াত হোসেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিনিয়র সাংবাদিক, ভোরের পাতা সংলাপের সমন্বয়ক মাকসুদা সুলতানা ঐক্য।
অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত বলেন, আজকের ভোরের পাতা সংলাপের আলোচ্য বিষয় বিজয়ের চেতনায় স্বপ্ন পূরণের পথে। আসলে বিজয় ছাড়া কিন্তু কখনোই স্বপ্ন পূরণ সম্ভব নয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে শুধু নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন জাতি কম আছে যে যারা দীর্ঘ সংগ্রাম করে স্বাধীনতার বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। আমাদের বিজয়ের চেতনা, বাঙলার স্বাধীনতার বীজ বপন কিন্তু শুরু হয়েছিল পাকিস্তানের সৃষ্টির লগ্ন থেকেই। অধিকারহারা বাঙালি পাকিস্তান হওয়ার পরও দেখলো যে তাদের বঞ্চনার দখলদারিত্বের কষাঘাত একেবারেই আষ্টেপিষ্টে লেগেছিল। বাঙালি জাতি হাজার বছরের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির লক্ষ্যে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে আসে। এ আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানের উপনিবেশিক শাসন, শোষণ, নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলন এক পর্যায়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে রূপ নেয়। ধারাবাহিকভাবে চলে আসা এ আন্দোলন-সংগ্রাম ১৯৭১-এর মার্চে এসে স্ফুলিঙ্গে রূপ নেয়। দীর্ঘ ৯ মাস পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে চলে বাঙালির মরণপণ যুদ্ধ। বীরত্বপূর্ণ মুক্তিযুদ্ধের এক পর্যায়ে বাঙালি বিজয়ের দিকে ধাবিত হতে থাকে। এক পর্যায়ে বাঙালির বীরত্বের কাছে পরাজয় স্বীকার করতে বাধ্য হয় পাকিস্তানের আধুনিক অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত সামরিক বাহিনী। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। সেজন্য স্বভাবতই এই মাসটা আমাদের জন্য একটি আনন্দের মাস। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর পিতার স্বপ্নকে হৃদয়ে লালন করে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার জন্য। গত ১৪ বছরে তিনি তাঁর লক্ষ্য পূরণের দিকে এগিয়ে চলেছেন। বাংলাদেশে যে প্রক্রিয়ায় উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে, উন্নয়নের এই গতি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের মাস। আমাদের গৌরবের এবং গর্বের মাস ঠিক একই ভাবে এই মাসটি আমাদের জন্য বেদনার মাসও। কারণ এই মাসে আমরা যেমন বিজয় অর্জন করেছি ঠিক একইভাবে তৎকালীন সময়ে এই মাসে আমাদের অনেক বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়েছিল। একটি গর্বিত জাতি হিসেবে সগর্বে মাথা উঁচু করার স্পর্ধা আমরা অর্জন করি এ মাসেই। সীমাহীন ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং আত্মদানের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রতিষ্ঠার সরল রাজপথে আমরা প্রবেশ করেছি ডিসেম্বরেই। তাই জাতির কাছে ডিসেম্বর হয়ে উঠেছে বিজয়ের মাস। কিছুদিন আগে ভারতের সাংবাদিক লিখেছেন বাঙালি গৌরবের জাতি কারণ তারা কষ্ট করে, সংগ্রাম করে বিজয় অর্জন করেছে এবং তাদের একটি বিজয় দিবস আছে। কিন্তু ভারতের কোন বিজয় দিবস নেই। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ডাক দিয়েছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। ঐতিহাসিক সেই ভাষণে উদ্দীপ্ত বাঙালি জাতি সেদিন দৃঢ় শপথ নিয়েছিল স্বাধীনতা অর্জনের। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বর্বরোচিতভাবে বাংলাদেশের নিরীহ মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এরপরই ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। শুরু হয় বর্বর পাকিস্তানি বাহিনীর বাঙালি নিধন অভিযান। তবে পাকিস্তানের এ বর্বরতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় বাংলার সর্বস্তরের মানুষ। হাতে তুলে নেয় অস্ত্র, শুরু হয় রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ। এক সাগর রক্ত, ৩০ লাখ প্রাণ আর দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বীর বাঙালি বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল ১৬ ডিসেম্বর।