#শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ: কর্ণেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দীন। #বাংলাদেশ আর কখনোই পথ হারাবে না: ভাস্কর অলি মাহমুদ।
প্রকাশ: বুধবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২২, ১০:৩৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
রাত পোহালেই আমাদের জন্য আনন্দের মাস আসছে। ডিসেম্বর মাস আমাদের বিজয়ের মাস। এই মাসটি আমাদের জন্য অনেক আনন্দের। এই মাসে আরেকটি আনন্দের দিন হচ্ছে ২ ডিসেম্বর। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানি বাহিনী ১৬ ডিসেম্বর যৌথবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। এর মধ্য দিয়ে বাঙালির চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। সুতরাং আমাদের স্বাধীনতা যেহেতু অনেক কষ্টে এসেছে তাই আমরা সহজে পথও হারাবো না।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৯০২তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক কর্নেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দীন, শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মী ভাস্কর অলি মাহমুদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিনিয়র সাংবাদিক, ভোরের পাতা সংলাপের সমন্বয়ক মাকসুদা সুলতানা ঐক্য।
অধ্যাপক কর্ণেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দীন বলেন, রাত পোহালেই আমাদের জন্য আনন্দের মাস আসছে। ডিসেম্বর মাস আমাদের বিজয়ের মাস। এই মাসটি আমাদের জন্য অনেক আনন্দের। এই মাসে আরেকটি আনন্দের দিন হচ্ছে ২ ডিসেম্বর। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর খাগড়াছড়িতে তৎকালীন ও আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতির প্রধান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা এবং বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ও সাংসদ আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ ৭২ দফার একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এটি ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি নামে অভিহিত। সেই সময় বিশ্ব গণমাধ্যম এই চুক্তি স্বাক্ষরকে ব্যাপকভাবে প্রাধান্য পায়। বিভিন্ন সরকার এবং মানবাধিকার সংস্থা এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার জন্য সরকারপ্রধান শেখ হাসিনাকে অভিনন্দনও জানায়। এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে দুই দশকের বেশি সময় চলে আসা বিরোধ, সংঘাত ও সংঘর্ষ নিষ্পত্তির সুযোগ সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের ইতিহাস রক্তাক্ত ইতিহাস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারিয়েছি। সেদিন যদি আমরা তাঁকে না হারাতাম তাহলে আরও আগেই হইত আজকে যে অর্জনটা আমরা পেয়েছি তার থেকেও বেশি অর্জন পেয়ে যেতাম আমরা। আজ তারই কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নের কারিগর এবং উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের রূপকার। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচারসহ জাতীয় জীবনের বহু ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে তার হাত ধরেই। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পৌঁছে যাচ্ছে এক সমৃদ্ধ মানবিক বাংলাদেশ হিসেবে অনন্য উচ্চতায়। তাইতো তিনি আজ জননেত্রী থেকে বিশ্বনেত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনন-মেধা, সততা-নিষ্ঠা, প্রখর দক্ষতা এবং সৃজনশীল উদারমুক্ত গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। তার সফল ও ভিশনারি নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ স্বপ্ন দেখছে ২০৪১ সালের আগেই একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হওয়ার।
ভাস্কর অলি মাহমুদ বলেন, আজকে ভোরের পাতা সংলাপের যে বিষয়টি নির্ধারণ করা হয়েছে যে পথ হারাবে না বাংলাদেশ। কিন্তু আমি প্রশ্ন রাখতে চাই আমরা কেন আর পথ হারাবো? আমরা আর কখনই পথ হারাবো না। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বপ্নসাধ পূরণ হয় ডিসেম্বর মাসে। বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় আসে এ মাসের ১৬ ডিসেম্বর। স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূখণ্ড আর সবুজের বুকে লাল সূর্যখচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। সুতরাং আমাদের এই স্বাধীনতাটা খুব সস্তা নয়। ’৫২-এর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়লাভ, ’৫৬-এর সংবিধান প্রণয়নের আন্দোলন, ’৫৮-এর মার্শাল ’ল বিরোধী আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ’৬৬-এর বাঙালির মুক্তির সনদ ৬-দফার আন্দোলন, ৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ’৬৯-এর রক্তঝরা গণঅভ্যুত্থান, ৬-দফা ভিত্তিক ’৭০-এর ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন মুক্তিযুদ্ধকে অবধারিত করে তোলে। এই সব আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দিলে তার ডাকে সাড়া দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙালি জাতি। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানি বাহিনী ১৬ ডিসেম্বর যৌথবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। এর মধ্য দিয়ে বাঙালির চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। সুতরাং আমাদের স্বাধীনতা যেহেতু অনেক কষ্টে এসেছে তাই আমরা সহজে পথও হারাবো না।