কক্সবাজার হোটেল মোটেল জোনে ১শ ৫০টি থেকে ২০০ রেস্তোরাঁ অনিবন্ধিত। পাশাপাশি শুধু মাত্র ১৭টি আবাসিক হোটেল এর বৈধ পরিপূর্ণ কাগজ পত্র রয়েছে। এছাড়া তারকা মানের হোটেল রয়েছে ১২টি। হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির অধিনে রয়েছে ৭৭ টি আবাসিক হোটেল এবং মেরিন ড্রাইভ হোটেল মালিক সমিতির অধিনে রয়েছে ৫৫ টি। বাকি যে সব আবাসিক হোটেল মোটেল ও রেস্তোরাঁ রয়েছে তা সব অনিবন্ধিত ও অবৈধ। কক্সবাজার পর্যটন শিল্প নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশ করার অনুরোধ জানিয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলন কালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন, হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি হোটেল মোটেল গেষ্ট হাউস মালিক সমিতি ও মেরিন ড্রাইভ হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে শহরের কলাতলীর একটি অভিজাত হোটেল হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় শালিক রেস্তোরাঁসহ কোন আবাসিক হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিক যেন বাড়িতি টাকা আদায় করতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সর্তক করে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।
পাশাপাশি কক্সবাজার পর্যটন শিল্পকে সমৃদ্ধ করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তাঁরা।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উনার স্বপ্নের কক্সবাজারকে বাংলাদেশ ও বিশ্বের দরবারের আধুনিক মানের পর্যটন রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে ১২টিরও অধিক মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। এসব প্রকল্প সমূহের মধ্যে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ষ্টেডিয়াম, আন্তর্জাতিক মানের বিমান বন্দর, সাবরাং ইকো ট্যুরিজম পার্ক, পেচারদ্বীপ সমুদ্র গবেষণা ইনষ্টিটিউট, রামু বি.কে.এস.পি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, খুরুশকুলে শেখ হাসিনা আশ্রয়ন প্রকল্প ও পর্যটর টাওয়ার, মহেশখালীতে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প, এলএনজি প্ল্যান্ট মাতারবাড়ী বঙ্গবন্ধু গভীর সমুদ্র বন্দর, পর্যটন গলফ মাঠের পাশে আধুনিক ফুটবল ও হকি স্টেডিয়াম সহ ১২টি মেঘা প্রকল্প। দ্রুত গতিতে বাস্তবায়নের পথে আধুনিক পর্যটন নগরীর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। এজন্য তারা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আগামী ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রীর সফরকে স্বাগত জানান। এছাড়া সরকার কক্সবাজারকে ঢেলে সাজানোর জন্য লক্ষ কোটি টাকা ব্যয়ে যখন উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে তখন একটি বিশেষ মহল কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে বলে দাবী করেন তাঁরা। স্বার্থন্বেষী এই মহলের কারণে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প আজ নানাবিধ সংকট ও টানা পড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। পর্যটকরা কক্সবাজার বিমূখ হচ্ছে। বেকার হওয়ার আশংকায় রয়েছে কক্সবাজারে এই শিল্পে নিয়োজিত ২ লাখ মানুষ।
তারা বলেন, পর্যটন মৌসুম শুরু হলেই একটি মহল পরিবেশের কথা বলে পর্যটন শিল্পের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নামে। প্রশাসনের বিভিন্ন অযৌক্তিক শর্ত চাপিয়ে দিয়ে তাদের হয়রানী করা হচ্ছে। হোটেল রেস্টোরেন্টের লাইসেন্স পেতে হয়রানী এখনো শেষ হয়নি। তারা এক্ষেতে ওয়ানস্টেপ সার্ভিসের দাবী জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, তারা সরকারকে যথা নিয়মে শতভাগ ভ্যাট প্রদান করে থাকি। শুধুমাত্র আবাসিক হোটেল খাতে বিগত (২০২০-২০২১) অর্থ বছরে ২৫ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা,(২০২১-২০২২) অর্থ বছরে ৩৫ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা এবং বর্তমান চলিত অর্থ বছরের ০৪ মাসে (২০২২-২০২৩) ১৪ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার অধিক সরকারী খাতে ব্যাংক মারফতে জমা প্রদান করা হয়। একই ভাবে রেস্তোঁরা সেক্টর থেকে তারা বিগত অর্থ বছর (২০২০-২০২১) এ ১ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা ও বিগত (২০২১-২০২২) অর্থ বছরে ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা এবং চলতি অর্থ বছরের ০৪ মাসে (২০২২- ২০২৩) ৮৪ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা সরকারী খাতে ব্যাংকে জমা দেয়।
১ এসময় তাঁরা আরও বললেন" কক্সবাজার পর্যটন শিল্প বাঁচলে দেশ সমৃদ্ধির পথে যাবে। অথচ কিছু লোক এই দেশের উন্নয়ন চায়না। তারা নেতিবাচক অসত্য প্রচারণা চালায় বলেও দাবি করেন তাঁরা। এই ধরনের অপপ্রচারণা কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন, অগ্রগতি, সাফল্য, সমৃদ্ধি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথে বিশাল প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। পর্যটন শিল্পে বিরাজমান নানা সংকট ও সমস্যা সমাধানে সরকারের কাছে আহবান জানান তাঁরা।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে হোটেল মোটেল গেষ্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি নইমুল হক চৌধুরী টুটুল, হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) শাহ আলম চৌধুরী, মেরিন ড্রাইভ রির্সোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খাঁনসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।