আলজেরিয়ায় ১ ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার দায়ে ৪৯ জনের মৃত্যুদণ্ড
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২২, ৫:০১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আলজেরিয়ায় এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার দায়ে ৪৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত। এ ঘটনায় আরও ২৮ জনকে ১০ থেকে ২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মূলত গত বছর আলজেরিয়ায় ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগে দণ্ডপ্রাপ্ত এসব আসামিরা ভুলভাবে সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে পিটিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার বরাত দিয়ে শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
তবে আলজেরিয়ায় বর্তমানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ওপর স্থগিতাদেশ থাকায় দণ্ডপ্রাপ্ত এসব আসামির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
বিবিসি বলছে, ২০২১ সালে নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলের সম্মুখীন হয় আলজেরিয়া। ওই বছর একাধিক দাবানলে উত্তর আফ্রিকার এই দেশটিতে ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তবে দাবানল শুরুর কারণ হিসেবে জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার জন্য স্থানীয়দের ভুল সন্দেহের বশে পিটুনিতে প্রাণ হারান জামেল বেন ইসমাইল।
তবে আগুন ছড়িয়ে দিতে নয়, বরং দাবানল মোকাবিলায় অন্যদের সহায়তা করতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গত বছরের আগস্টে দাবানল ছড়িয়ে পড়ার পর একটি টুইট করেন ৩৮ বছর বয়সি জামেল বেন ইসমাইল। সেখানে তিনি বলেন, কাবিলি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া দাবানল মোকাবিলায় সহায়তা করতে তিনি তার বাড়ি থেকে ৩২০ কিলোমিটার (২০০ মাইল) দূরে যাবেন। বস্তুত রাজধানী আলজিয়ার্সের পূর্বে অবস্থিত ওই অঞ্চলটিই ছিল দাবানলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা।
তবে কাবিলি অঞ্চল থেকে নিজের এলাকায় ফিরে আসার পরপরই স্থানীয়রা জামেলকে মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করে। সেসময় স্থানীয়রা দাবি করেন, জামেল নিজেই জঙ্গলে আগুন লাগিয়েছেন।
এরপর গত বছরের ১১ আগস্ট সহিংসতার গ্রাফিক ফুটেজ ছড়াতে শুরু করে। যেখানে দেখা যায়, বেন ইসমাইলকে আক্রমণ করা হয়েছে। তাকে নির্যাতন ও পুড়িয়ে হত্যার পর লোকজন তার মরদেহ গ্রামে নিয়ে যায়। এই ঘটনা ও ভিডিওগুলো আলজেরিয়ায় ব্যাপক ক্ষোভের কারণ হয়েছিল।
তাঁর বাবা নুরদ্দীন বেন ইসমাইল বলেছেন, তিনি ‘বিধ্বস্ত’। তাঁর ভাষায়, ‘আমার ছেলে দাবানল মোকাবেলায় সাহায্য করার জন্য কাবিলি গিয়েছিল। এ অঞ্চলটি তাঁর পছন্দের ছিল। কিন্তু তাঁরা তাকে জীবন্ত পুড়িয়ে দিয়েছে।’