প্রকাশ: বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২২, ১০:২৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বৃটিশ আমল থেকে ভারত বর্ষের রেল যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ের রুট হিসাবে পরিচিত গোয়ালন্দ বাজার রেল স্টেশন। তৎকালিন ভারত বর্ষের রাজধানী মুর্শিদাবাদ অথবা কোলকাতা সাথে ঢাকায় যাতায়াতের জন্য ঢাকা সদরঘাট, নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর নৌপথ হয়ে ঐতিহ্যবাহী গোয়ালন্দ বাজার রেলস্টেশন ছিলো যাতায়াতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশন। গোয়ালন্দ থেকে সরাসরি ট্রেন চলতো পশ্চিম বঙ্গের শিয়ালদহ ষ্টেশনে।পদ্মার রুপালি ইলিশ মাছ সহ বহু পন্য আমদানি রপ্তানি হতো এ রেল পথ দিয়ে। বঙ্গবন্ধু সহ বহু জাতীয় নেতারা যাতায়াত করতেন এই রুট দিয়ে। লোকবল ও ট্রেন সংকটে ঐতিহ্যবাহী গোয়ালন্দ বাজার রেলস্টেশন আজ পরিত্যক্ত।
পাচুরিয়া রেলওয়ের ষ্টেশন মাষ্টার পরিত্যক্ত স্টেশনটি তে থাকা সরকারি ট্রেন টিকিট গুলো দেখভাল করেন। এছাড়া রেলওয়ের কোন কার্যক্রম নেই এখানে। ষ্টেশনের ঘরটি তালা বদ্ধ অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে।
১৯৮৪ সালে রেলওেয়ের পরিধি বাড়িয়ে গোয়ালন্দ বাজার থেকে গোয়ালন্দ ঘাট পর্যন্ত (দৌলতদিয়া ঘাট) নতুন করে বৃদ্ধি করা হয়, এতে দক্ষিণ ও উত্তরঞ্চলের সঙ্গে রেল যোগাযোগের অন্যতম রোড হয় গোয়ালন্দ ঘাট রেল স্টেশন। খুলনা থেকে আন্তঃনগর তিতুমীর এক্সপ্রেস, লালন শাহ এক্সপ্রেস, রাজশাহী থেকে আন্তঃনগর যমুনা এক্সপ্রেস, সৈয়দপুর থেকে পন্যবাহী শিশুগুড়ি, চুয়াডাঙ্গা দর্শণা থেকে নকশীকাঁথা মেইল, পোড়াদহ থেকে সাটেল লোকাল, চলাচল করতো এ রেল পথে। বর্তমানে এ রুটে কোন আন্তঃনগর ট্রেন নেই। প্রথমে খুলনা গামী আন্তঃনগর তিতুমীর ও ২০২০ সালে রাজশাহী গামী যমুনা এক্সপ্রেস প্রত্যাহার করে নিয়েছে রেল কতৃপক্ষ। পন্যবাহী শীলুগুড়ি টেন টিও বন্ধ রয়েছে দীর্ঘ দিন। খুলনা ও রাজশাহী গামী যাত্রীদের সরাসরি যাতায়াতের ট্রেন বন্ধ থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
দৌলতদিয়া রেলওয়ে ষ্টেশন সংলগ্ন ইসলামী হোটেলের ব্যবসায়ী মো. সোহান খান বলেন, খুলনা ও রাজশাহী গামী ট্রেন প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর ওই রোড়ে যাতায়াত কারী যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এবং পন্যবাহী ট্রেন না থাকায় ব্যবসায়ীদের সড়ক পথে মালামাল আনতে কয়েক গুন খরচ বেশি হচ্ছে।
গোয়ালন্দ ঘাট রেল স্টেশনে রাজশাহী গামী যাত্রী মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, গেয়ালন্দ ঘাট থেকে আগে সরাসরি রাজশাহী যাতায়াত করতে পারতাম। রাজশাহী গামী ট্রেনটি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ট্রেনটি পুনরায় চালু করার দাবী জানাচ্ছি।
গোয়ালন্দ বাজার রেলওয়ে ষ্টেশন দেখাশোনার অতিরিক্ত দায়িত্বে পাচুরিয়া রেলওয়ে ষ্টেশন মাষ্টার জয়ন্ত কুমার ঘোষ বলেন, গোয়ালন্দ বাজার রেলওয়ে ষ্টেশন টি কতৃপক্ষ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। এখানে রেলওয়ে কোন কার্যক্রম নেই। শুধু ষ্টেশনটিতে কিছু সরকারি টিকিট থাকায় ওগুলো দেখার জন্য আমি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি।
গোয়ালন্দ ঘাট ( দৌলতদিয়া) রেলওয়ে ষ্টেশন মাষ্টার মো. আ. জলিল বলেন, খুলনা গামী তিতুমীর এক্সপ্রেস ও রাজশাহী গামী যমুনা এক্সপ্রেস এখান থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এ রুটে কোন আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন নেই। নকশীকাঁথা মেইল ও একটি সাটেল লোকাল ট্রেনে পোড়াদহ পর্যন্ত দুই বার যাতায়াত করছে।