আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে খেলা হবে, খেলা হবে ভোট চোরের বিরুদ্ধে। আজিজ মার্কা কমিশনের বিরুদ্ধে খেলা হবে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে খেলা হবে। আমরা আর আগুন নিয়ে খেলতে দেব না।
বুধবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে বরগুনা সার্কিট হাউস ইদগাহ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ছাগল তো নাচে, ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চাও নাচে। সে কী লাফ বাম রাজনীতি দলের! যারা মানুষের কথা বলে, যারা খেটে খাওয়া মানুষের কথা বলে, আদর্শের কথা বলে, এরা আবার হাওয়া ভবনের যুবরাজের সঙ্গে তার নেতৃত্বে আন্দোলন করে।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সুর ও আওয়াজ আগের মতো নেই। এখন কমে গেছে। লন্ডনে এখন আর টাকা পাঠাতে পারছেন না ফখরুল সাহেব। ফখরুল সাহেব বরগুনার এই সম্মেলনে বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউ দেখে যান।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির কাজই অন্যের সমালোচনা করা। পদ্মাসেতু নিয়ে তারা কী ধরনের বিদঘুটে মন্তব্য করেছে তা সবারই জানা। আজতো পদ্মাসেতু হয়েই গেল, এই পদ্মাসেতু পার হয়েই বিএনপির নেতারা বরিশাল গিয়েছিলেন। আপনাদের কি কোনো লজ্জা নাই? ঘরের কোনে বসে সমালোচনা না করে মাঠে আসুন, খেলা হবে। ডিসেম্বরের পর খেলা হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়ে গেছে। এখন আর কষ্ট পোহাতে হয় না। আর কিছু দিন পরেই ফরিদপুর থেকে কুয়াকাটার রেললাইনের কাজ এসে পড়বে এই দক্ষিণ অঞ্চলে।
বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক নিরীক্ষণ কমিটির সভাপতি আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনিসুর রহমান, গোলাম রব্বানী চিনু প্রমুখ।
সম্মেলনে উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে,পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ কমিটির সভাপতি ও সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের রূপকার। শেখ হাসিনার সরকার শুধু পদ্মা সেতু করেই থেমে থাকেনি। এ সরকারের আমলে বরিশাল থেকে কুয়াকাটা সড়কে তিনটি সেতু, লেবুখালীতে শেখ হাসিনা সেনানিবাস, বরিশাল সিটি করপোরেশন, পায়রা সমুদ্রবন্দর, বরগুনার বহুল প্রতীক্ষিত ২৫০ শয্যার হাসপাতালসহ অসংখ্য উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনা সরকারের বিকল্প নেই।
তিনি আরও বলেন, যে বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেতাম তা, সেই বঙ্গবন্ধুকে তারা সপরিবারে হত্যা করেছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। যাদের জন্মই খুন-রাহাজানির মধ্য দিয়ে তারা ইদানীং গণতন্ত্রের কথা বলছে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কথা বলছে। কিন্তু এই গণতন্ত্র হত্যা করেছে জিয়াউর রহমান। তা সবাই জানে।
আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ বলেন, রাতের আঁধারে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করে জিয়াউর রহমান। সেদিন রাতে আমার বাবাকেও হত্যা করা হয়। তখন আমরা মামলাও করতে পারিনি। জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পরেই বঙ্গবন্ধু ও বাবার হত্যার বিচার পেয়েছি। দেশ আজ কলঙ্কমুক্ত। তবুও বিএনপি বলছে দেশে বিচার নেই। বহু হত্যাকাণ্ডের বিচার এই সরকারের আমলে হয়েছে, এমন অনেক নজির রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালে সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ জাহাঙ্গীর কবির নির্বাচিত হন। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে শীর্ষ এই দুটি পদে সভাপতি সম্পাদক হিসেবে তারা দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সর্বশেষ ২০১৪ সালে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও তারাই সভাপতি-সম্পাদক নির্বাচিত হন।