দীর্ঘ আট বছর পর সোমবার টাঙ্গাইল জেলা আ. লীগের সম্মেলন
দীর্ঘ আট বছর পর সোমবার (৭ নভেম্বর) টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে। টাঙ্গাইল জেলা স্টেডিয়ামে লক্ষাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থক জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করেছে।এ সম্মেলনকে ঘিওে বিরাট ম ও প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। ব্যানার,ফেস্টুন ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে সম্মেলনস্থল।তৈরি হয়েছে শুভেচ্ছা তোরণ। দীর্ঘদিন পর ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ। নাম ‘ত্রিবার্ষিক' সম্মেলন হলেও এবারের সম্মেলনটি হচ্ছে আট বছর পর। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।
জানাগেছে, পুরো টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত থাকলেও নবম থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার ৮টি আসন আওয়ামী লীগের হাতে চলে যায়। এ ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী দিনের নেতৃত্বে কারা আসছেন, এমন আলোচনা এখন সবখানে।তবে নতুন কমিটি ভোটের মাধ্যমে হবে নাকি কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন নেতাকর্মীরা। সোমবার ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে ফের নতুন কমিটি পেতে যাচ্ছে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ।
সম্মেলনটি উদ্বোধন করবেন,দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষি মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এমপি। প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।প্রধান বক্তা কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। এ ছাড়া সম্মেলনে বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা।
সম্মেলনকে সফল করার লক্ষ্যে জেলার ১২টি উপজেলা ইউনিটের নেতাকর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন মোকাবেলায় কাকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, এ নিয়েও ব্যাপক আলোচনা চলছে।
ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলে সভাপতি পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে দুজনের নাম উল্লেখযোগ্য।এর মধ্যে একজন হলেন, বর্তমান সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক ও অপরজন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং ঘাটাইল আসনের এমপি আতাউর রহমান খান।
সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে আছেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক টাঙ্গাইল-৮(সখিপুুর-বাসাইল) আসনের এমপি এড.জোয়াহেরুল ইসলাম,বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক জামিলুর রহমান মিরন,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাহার আহমেদের নাম শোনা যাচ্ছে।
গত শুক্রবার সকালে সম্মেলন স্থল পরিদর্শনে এসে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষি মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন,এ সম্মেলনের মাধ্যমে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামীলীগ শক্তিশালী হবে। সাংগঠনিক ভাবে মজবুত হবে।আগামী জাতীয় নির্বাচনে এই কমিটির ভূমিকা রয়েছে। তাই সম্মেলনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমান সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক বলেন,এবারের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। লক্ষাধিক লোকের জমায়েতের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।সাংগঠনিকভাবে আমরা আগের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় আছি।আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা যার হাতে জেলার নেতৃত্ব দেবেন তার নেতৃত্বে আমরা কাজ করব।কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠিত হবে।কাউন্সিলররা সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দেবেন,সেটাই মেনে নেওয়া হবে।
বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এড.জোয়াহেরুল ইসলাম এমপি বলেন,যখন যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে,সেই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার চেষ্টা করেছি।নেত্রী আবারও আমাকে দায়িত্ব দিলে আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করার কাজ করব।
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জামিলুর রহমান মিরন বলেন,নতুন নেতৃত্ব চাই সবাই। আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নতুন নেতৃত্বের বিকল্প নেই।
জেলার তৃণমূল নেতাকর্মীরা বলছে,টাঙ্গাইল জেলায় একটি আসনে এক জন মন্ত্রী রয়েছেন।টাঙ্গাইল জেলা দেশের অন্যতম সাংগঠনিক ইউনিট।এ ইউনিটকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে না পারলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন মোকাবেলা সম্ভব হবে না।তাই নতুন নেতৃত্বের পাশাপাশি অভিজ্ঞ নেতৃত্বের যথেষ্ট প্রয়োজন রয়েছে বলে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের অনেকে মনে করছেন।
উল্লেখ্য,২০১৫ সালের ১৮ অক্টোবর টাঙ্গাইল আউটার স্টেডিয়ামে ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।দীর্ঘ ৮ বছর টাঙ্গাইল আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।