পায়রা সমুদ্রবন্দরকে বিশ্বমানের করতে ১১ হাজার ৭২ কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিং, ৮টি জাহাজের উদ্বোধন, প্রথম টার্মিনাল এবং ৬ লেনের সংযোগ সড়ক ও একটি সেতু।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বন্দরটিকে তার পূর্ণ সক্ষমতায় কাজ করতে সক্ষম করবে এবং দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে নতুন মাত্রা যোগ করবে, যার সুফল জাতি যুগ যুগ ধরে ভোগ করবে। পায়রা সমুদ্রবন্দর কতৃপক্ষ এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা সমুদ্রবন্দর উদ্বোধন করেন উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ পর্যন্ত ২৬০টি সমুদ্রগামী জাহাজ বন্দরে এসেছে, যার মাধ্যমে প্রায় ৫৪৮ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল এবং পায়রা বন্দর কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহাইল পটুয়াখালির কলাপাড়ায় অনুষ্টিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। এ সময় পায়রা বন্দর এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর ওপর প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শণ করা হয়।
সমুদ্রবন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ে একটি ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ, ১০০-১২৫ মিটার-চওড়া এবং ১০ দশমিক ৫ মিটার-গভীর চ্যানেল তৈরি হবে, যা বন্দরে ৪০ হাজার টন কার্গো বা ৩ হাজারটি কনটেইনার বোঝাই জাহাজ ডক করার ক্ষমতা থাকবে।
ক্যাপিটাল ড্রেজিং চ্যানেলে আনুমানিক ৪,৯৫০ কোটি টাকা খরচ হবে এবং বেলজিয়াম ভিত্তিক ড্রেজিং কোম্পানি-জান ডি নুল ড্রেজিংয়ের কাজ করবে।
পায়রা সমুদ্রবন্দরের জন্য ২০৯.৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত জাহাজ ও নৌযানগুলো বন্দর কর্তৃপক্ষকে বিদেশী জাহাজের আগমন ও প্রস্থান পর্যবেক্ষণ এবং চ্যানেল রক্ষণাবেক্ষণে সহায়তা করবে।
এদিন দু’টি পাইলট ভেসেল, দু’টি হেভি ডিউটি স্পিডবোট, একটি বয় লেইং ভেসেল, একটি সার্ভে বোট এবং দু’টি টাগবোটসহ আটটি জাহাজের উদ্বোধন করা হয়।
প্রথম টার্মিনাল, ছয় লেনের মহাসড়ক এবং সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে পায়রা সমুদ্রবন্দরে তিনটি বিদেশী জাহাজ পরিবহনকারী কন্টেইনার বা বাল্ক কার্গো পায়রা বন্দরে ডক করতে পারবে।
৪,৫১৬.৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথম টার্মিনালের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কার্যক্রমের জন্য এটি চালু করা হবে।
৬.৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ছয় লেনের সংযোগ রোডটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ নির্মাণ করছে। ৬৫৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটি নির্মাণে স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পায়রা সমুদ্রবন্দরের পণ্য পরিবহনের জন্য আন্ধারমানিক নদীর ওপর ৭৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে ১ হাজার ১৮০ মিটার দীর্ঘ সেতু। সেতুটি ৩০ মাসে (আড়াই বছরে) নির্মিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। খবর: বাসস