প্রকাশ: বুধবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২২, ৯:০১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
নাটোরের গুরুদাসপুরে কুলসুম নামের (৭৫) বছরের এক বিধবাকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে দুই যুবকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার আনুমানিক রাত ৮টার দিকে ওই ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের পমপাথুরিয়ার আদর্শ গ্রামে। গুরুদাসপুর থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে ওই বিধবা নারীকে উদ্ধার করেছে। নির্যাতনের শিকার বিধবা নারী ওই এলাকার মৃত-সুরত আলীর স্ত্রী।
বিধবা নারী কুলসুম অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী অনেক দিন আগে মারা গেছে। আমার ৪টি মেয়ে। সব গুলোর বিয়ে হয়েছে। মেঝো মেয়ে রফেলার বিয়ের পর থেকেই আমার বাসায় জামাই নিয়ে বসবাস করে। আমার ছোট মেয়ের বাচ্চা হওয়ার কারণে হাসপাতালে মেয়েরা দেখতে যায়। বাসায় আমি আর আমার জামাই ছিলাম। আমি জোরে অসুস্থ হয়ে পরলে আমার জামাই আবুল কাশেম(৫৫) বাজারে গিয়ে ঔষুধ কিনে নিয়ে এসে আমার ঘরে প্রবেশ করে। তার কিছুক্ষন পরে পমপাথুরিয়া গ্রামের আমার প্রতিবেশি আলমের ছেলে রতন ও বকুলের ছেলে উজ্জল হইচই করতে থাকে। প্রতিবেশিদের ডেকে আমার নামে যৌন মিলনের মিথ্যা অপবাদ দেয়। ওই দুই ছেলে প্রতিবেশিদের কাছে বলে আমার জামাইয়ের সাথে অবৈধ্য সম্পর্ক আছে। এ কথা বলার পরেই তারা আমাকে টেনে হেছওে প্রথমে পুকুরে ফেলে দেয়। তারপর পুকুর থেকে আবার তুলে কাঁদা পানির মধ্যে দিয়ে নিয়ে ডাব গাছের সাথে আমাকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং মারধর করে।
ওই বিধবার জামাই আবুল কাশেম(৫৫) জানান আমি দীর্ঘ ২২ বছর যাবত ওই বাড়িতে ঘর জামাই হিসেবে রয়েছি। আমার শাশুড়ি অসুস্থ থাকায় আমি ওষধ খাওয়ায়ে মাথায় তৈল দিচ্ছিলাম। তখনি কয়েকজন যুবক এসে কিছু বুঝে উঠার আগেই আমাকে এবং আমার শাশুড়ীকে মারধর শুরু করে। পরে আমার শাশুরিকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যতন করে।
এলাকাবাসির পক্ষে মোঃ প্রত্যক্ষদর্শি দাবি করে মৃত বিশ্বাস ফকিরের ছেলে কমেদ (৪০) নামের এক ব্যাক্তি জানান, আমি ওই ঘটনা চাক্ষুস দেখেছি এবং অরো পাঁচ ছয়জনকে দেখিয়েছি। তবে ঘটনাস্থলে ওই স্বাক্ষীদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।এমনকি কোন জনপ্রতিনিধিকেও দেখা যায়নি। ওই যুবককে আইন হাতে তুলে নেবার ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন কাজটি করা ঠিক হয়নি।
তবে অভিযুক্ত রতন আলী ও উজ্জল হোসেন দাবী করেন, দীর্ঘদিন যাবৎ তারা জামাই শাশুড়ি অবৈধ সম্পর্কের সাথে লিপ্ত রয়েছে। মঙ্গলবার রাতে তাদের জামাই শাশুড়িকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করা হয়েছে। তবে তাড়াহুড়া করে গাছে বেঁধে ফেলেছিলাম। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে ঠিক করিনি। জানতে চাইলে চাপিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহাবুর বহমান জানান,তিনি ঘটনার দিন নাটোরে ছিলেন। এবিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তবে এলাকাবাসি মুঠোফোনে তাকে ওই ঘটনার বিষয়ে অবগত করেছেন।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আব্দুল মতিন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ওই বৃদ্ধা ও তার জামাইকে উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ১১টায় গনউপদ্রৌবের কারনে তাদের নাটোর কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।