স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এখন বিএনপি-জামায়াতের একটা খায়েশ হয়েছে। তারা নাকি ১০ তারিখ এসে ঢাকায় আমাদের (আওয়ামী লীগ) সবাইকে তাড়িয়ে দেবে। আমরা ঢাকা ছেড়ে দেব, আর তারা দখল করে বসে পড়বে। দখল করবে। আবার সেই নৈরাজ্য, হাজার হাজার মানুষকে হত্যা, অগ্নিসংযোগ, জঙ্গির উত্থান- এই সমস্ত ঘটনা আবার ঘটবে।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফার্মগেটে একটি অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সফলতার বিশ্লেষণ যদি করি, সেটা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বললেও শেষ হবে না।এই প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়ে তারা নাকি (বিএনপি) কে কোন দায়িত্বে নেবেন সেটা পর্যন্ত ঠিক করে ফেলেছেন। কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, কে মন্ত্রী হবেন, অর্থমন্ত্রী হবেন সেই প্লান হয়েছে। শুনছি.... রাষ্ট্রপতি করে তারেক রহমানকে কীভাবে ক্ষমতায় আনবেন সেই নীল নকশা হয়ে গেছে বলে শোনা যাচ্ছে। আমরা এগুলো শুনছি বিভিন্ন ভাবে।
তিনি বলেন, ৮১তে শেখ হাসিনা এই দেশে যখন এল তখন তিনি দেশব্যাপী ঘুরে বেড়ালেন। তখন সবাই বঙ্গবন্ধুর মতো শেখ হাসিনাকেও বুকে জড়িয়ে ধরলো। তখন সবাই বলল- এই তো শেখের বেটি এসেছে। শেখ হাসিনার ডাকে সবাই একত্রিত হলো, তখন থেকে বাংলাদেশ আলোকিত হয়ে গেল।
২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বিএনপির আমলের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, বিএনপি ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালে ৬০ লক্ষ টন খাদ্য শস্যের ঘাটতি ছিল। তাদের আমলে ২১ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। আর গুমের কথা বলে... আমরা নাকি ৭৬ জনকে গুম করেছি! অথচ ২০০৫ সালে গুম হয়েছিল ৪৬০ জন। এটা আমাদের কথা না, আমেরিকান একটা ওয়েবসাইটের তথ্য।
তিনি আরও বলেন, আমাদের আমলে যে ৭৬ জন গুম বলা হচ্ছে তাদের বিষয়ে আমরা আমেরিকার মানবাধিকার প্রধানকে দেখিয়ে দিয়েছি- ১০জন বিএনপির রাজনীতি করছেন, দুইজন আমাদের কারাগারে রয়েছেন। আর ৩৫ জনকে আমরা খুঁজে বেড়াচ্ছি বিভিন্ন অপরাধে। এদের অনেকে পোড়ানো, জ্বালানো, মানুষ হত্যায় অভিযুক্ত। গুমের যে ধরনের অভিযোগ আমাদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছিল তা হাস্যকর। আমরা গুমের তথ্য প্রকাশ করেছি, কে কোথায় আছেন। আবার দুই একজনকে ইতিমধ্যে ফিরেও পেয়েছি। এই বিএনপি সবশেষ ক্ষমতায় থাকাকালে আমাদের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে লাপাত্তা করে দিয়েছিল। লাখ লাখ মামলা দিয়েছিল; সবাই ভয়ে তটস্থ থাকত। বিএনপি আবারও একটা অন্ধকারচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য নীল নকশা তৈরি করছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, একাত্তরে যারা রাজাকার ছিল তারা এখনও রাজাকারই রয়েছে। জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি করেন তিনি।
এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে হানিফ বলেন, বাংলাদেশকে কোন পেছনের দিকে নিয়ে যেতে চান মির্জা ফখরুলরা। বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর স্বপ্ন হবে দুঃস্বপ্ন।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন হায়দার চৌধুরী মানিক, আইনজীবী তুরিন আফরোজ, ঢাকা উত্তর ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান খান ইরান, অপরাজেয় বাংলার সদস্য সচিব এইচ মিলু।