বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ডে বিএনপি-জামাতের অশুভ চরিত্র দেশের মানুষ দেখেছে। এখনো তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়নি। এখনও বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে তারা তাদের আসল চরিত্র দেখাচ্ছে।
তাদের আদর্শ হলো পাকিস্তানি আদর্শ। তারা সবসময় দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করতে চায়। এখনও তারা তাদের বিষ দাঁত বের করে দেশকে ধ্বংস করতে চায়। তারা ১০ ডিসেম্বর নিয়ে আমাদের ভয় দেখায়। আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আমরা কোনদিন তাদের ভয় পাইনি, সামনেও পাবনা।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয় মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষক লীগের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে প্রতিপক্ষকে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু তাদের পরিবারের কাউকে হত্যা করা হয়নি। সে সব হত্যাকাণ্ডে কোনো অন্তঃসত্ত্বা নারী বা শিশুকে হত্যা করা হয়নি।
১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট ঘাতকরা কত নিষ্ঠুর, কত বর্বর ছিল যে তারা শুধু বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি, রাষ্ট্রপতির স্ত্রী, ভাই, সন্তান, এমনকি তার পরিবারের অন্তঃসত্ত্বা নারী সদস্যকেও বর্বরোচিতভাবে হত্যা করেছিল। শেখ রাসেলের মতো নিষ্পাপ শিশুকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছিল। এ বর্বরতা কারবালার বর্বরতাকেও হার মানিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা খুনি জিয়া শিশু রাসেলসহ বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের যারা হত্যা করেছে তাদের বিচার করা যাবে না, এই আইন পাশ করেছিল। শুধু এখানেই শেষ নয়, বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যাকারীদের এদেশে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পুনর্বাসন করা হয়েছিল।
তাদের সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে চাকুরি দিয়েছে। একইভাবে বেগম জিয়াও তাদের পুরষ্কৃত করেছিলো। তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছে। এরা আমাদের জন্য ছিলো লজ্জার।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ১৫ আগস্টের খুনিরা ও ৭১ এর ঘাতকরা এখনো দেশে বিচরণ করার সাহস দেখায়। শেখ হাসিনা যখন দেশকে এগিয়ে নিয়েছে, তখন এই খুনিদের বংশধররা অপপ্রচার চালাচ্ছে, হুমকি দিচ্ছে। সাম্প্রদায়িক অপশক্তি, জঙ্গিবাদকে উসকে দিচ্ছে তারা।
তারা বিজয়ের মাসে রাজাকারদের সাথে মিলে মহাসমাবেশের নামে আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছে। সেদিন নাকি খালেদা জিয়াকে নিয়ে দেশকে নেতৃত্ব দেয়াবে। আজকে তারা হুমকি দিয়ে ভয় দেখিয়ে গণতন্ত্রকে শেষ করে দিতে চায়। বেআইনিভাবে তারা নব্য কায়দায় ক্ষমতায় বসতে চায়।
তিনি বলেন, আজকে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ একটি রোল মডেল। এটি সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার জন্য। আমাদের উন্নয়ন ও আদর্শের নেত্রী হলেন শেখ হাসিনা। তিনি হলেন সততার নেত্রী ও যোগ্য নেত্রী, যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অন্ধকার থেকে আলোর দিকে এসেছে।
শেখ হাসিনার কারণে আমরা বিশ্ব দরবারে সম্মানিত ও সম্মানের জাতি হিসেবে মর্যাদা পেয়েছি। একজন শেখ হাসিনার কারণে আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পেয়েছি। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন কিভাবে মানুষকে ভালোবাসতে হয়। বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে সম্মানিত।
কৃষক লীগের নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এরপরও ষড়যন্ত্রকারীরা সরকার উৎখাত করার ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপি’র বিরুদ্ধে আমাদের সব সময় সজাগ থাকতে হবে।
জনতার শক্তিতে ও জাতির পিতার আদর্শে বলীয়ান হয়ে এ সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে আমাদের মোকাবেলা করতে হবে। এরা যদি দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় তাদের আমারা যোগ্য জবাব দিবো। আমরা আর এদের দেশ ও দেশের মানুষের ক্ষতি করতে দিবো না।
বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটুর সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য এ্যাড. জাহাঙ্গীর করিব নানক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।