কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পশ্চিম ধনিরাম এলাকার দেখা দিয়েছে ধরলার তীব্র ভাঙন। ভাঙনে নদী গিলছে বসতভিটা, ফসলি জমিসহ বিস্তৃর্ণ এলাকা। অব্যাহত ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দারা।
শুক্রবার দুপুরে উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পশ্চিম ধনিরাম গ্রামের মেলেটারির চর এলাকায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে শত শত নারী-পুরুষ অংশ নিয়ে ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান।
ভাঙনে বসতভিটা ও ফসলি জমি হারিয়ে নি:স্ব মানব বন্ধনে আসা আলতাফ হোসেন বলেন, গত প্রায় একমাস থেকে এই এলাকায় ধরলার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙনে আমার বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। আমি পরিবার নিয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমি ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
মহির উদ্দিন নামের অপর একজন বলেন, নদীর ভাঙনের কারণে এপর্যন্ত আমি কয়েকবার আমার বসতভিটা হারিয়েছি। এবারের ভাঙনেও আমার বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন আর আমার বসতি গড়ে তোলার কোন জমিজমা নাই। পরিবার নিয়ে কোথায় যাব ভেবে পাচ্ছি না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইলিয়াস হোসেন বলেন, আমার এই ওয়ার্ডের প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ধরলার ভাঙন দেখা দিয়েছে। ধরলার ভাঙনে এ অ লের চল্লিশটিরও বেশি পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়েছেন। বর্তমানে দিশেহারা অবস্থা তাদের। এখনও শতাধিক পরিবার ভাঙন আতঙ্কে আছেন। আমন ধানের খেত, ভুট্টা ও কলার খেতসহ শতশত বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে গোটা মেলেটারির চর অচিরেই নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। আমি এই মানববন্ধন কর্মসূচির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট ভাঙনরোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাচ্ছি।
বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু বলেন, বড়ভিটা ইউনিয়নের ধরলা তীরের মানুষের দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ধরলার ভাঙন। নদীর অব্যাহত ভাঙনে দিনে দিনে দীর্ঘ হচ্ছে নিঃস্ব মানুষের তালিকা। আমি ভাঙন রোধে উপজেলা প্রশাসনসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
অন্যদিকে একই দাবিতে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে দুধকুমার নদীর ভাঙ্গন রোধ ও তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের ২ ও ৪ নং ওয়ার্ডের চর বটতলা দুধকুমার নদীর পূর্বপাড়ে নদী ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন করেন তারা। এতে নারীসহ সহশ্রাধিক স্থানীয় মানুষ অংশ নেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন সাবেক ইউপি সদস্য রইচ উদ্দিন, স্থানীয় আব্দুল গফুর, জামাল উদ্দিনসহ অন্যরা।
এ সময় স্থানীয়রা তাদের বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, দুধকুমারের ভাঙ্গনে শতশত বাড়িঘর ও ফসলী জমি, স্কুল, মসজিদ, মাদরাসাসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে চলেও গেলেও ভাঙ্গন রোধে উদাসীন পানি উন্নয়ন বোর্ড। দ্রুত ভাঙ্গন রোধে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান তারা।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তিলাই ইউনিয়নে দুধকুমার নদের ভাঙ্গন রোধে প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। তবে বড়ভিটা ইউনিয়নের পশ্চিম ধনিরাম এলাকায় ভাঙ্গন রোধের কোন প্রকল্প নেই। প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে কাজ করা হবে।