বৃষ্টি এলেই ভাঙ্গা বিদ্যালয় ভবনের ছাদ চুয়ে পানি পড়ে শিক্ষার্থীদের মাথায়, বেঞ্চে, বইয়ের উপর। আবার শ্রেণি কক্ষের সেখানেই পাঠদানের সময হঠাৎ হঠাৎ ওই ছাদ থেকে খসে পরে পলেস্তা। শুধু তাই নয়, শ্রেণি কক্ষের দেয়াল, ছাদ, পিলার ও গ্রেড বিমে রয়েছে অসংখ্য ফাটলও। পাশাপাশি দেবে গেছে চারটি কক্ষের মেঝে। আর এরকম একটি ঝুকিপূর্ণ ভবনেই কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের জীবনের সমূহ ঝুঁকির মধ্যেই চলছে পাঠদান। আর বিদ্যালয়টি হচ্ছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়নের নাদোসৈয়দপুর মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
জানা গেছে, ১৯৪৬ সালে নাদোসৈয়দপুর মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে বর্তমানে শিশু শেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন’শ কোমলমতি শিক্ষার্থী নিয়মিত পাঠদানে অংশ নেয়।
নাদোসৈয়দপুর মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুর ইসলাম জানান, ২১ শতাংশ জায়গার উপর অবস্থিত বিদ্যালয়টির দুটি ভবন আছে যার মধ্যে একটি দুই কক্ষ বিশিষ্ট প্রায় নতুন ও ভাল মানের। কিন্তু নতুন এ ভবনে সকল শিক্ষার্থীর স্থান সংকুলান হয়না। ফলে শ্রেণি কক্ষ সংকটের কারনে ১৯৬০ সালে নির্মিত চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি ঝঁকিপূর্ণ পুরাতন ভবনে নিরুপায় হয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে হচ্ছে তাঁদের। অবশ্য নাজুক ঝঁকিপূর্ণ ভবনটির বিষয় একাধিক বার শিক্ষা ও প্রকৌশল বিভাগের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ও মৌখিক ভাবে জানানো হযেছে। তবে হবে হচ্ছে বলে এখন নতুন ভবন পাওয়া যায়নি।
তারপরও যতটুকু সর্তক থাকা যায় তা থেকেই প্রায় ৬২ বছরের পুরোনে সে ভবনে কোমলমতি শিক্ষাথীদের পাঠদান করাতে হচ্ছে। যদিও তাড়াশ উপজেলা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে কর্মকর্তাগন ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান বন্ধ রাখার কথা বলেছেন বলে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম যোগ করেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আয়সা খাতুন, আমিনা খাতুন, তানজিলা জানান, ক্লাস করার সময় ছাদ চুয়ে পানি পড়ে, বালি পরে তারপর ভেঙ্গে পড়ার ভয়ও করে। চতুর্থ শ্রেনীর নাইম হোসেন বলেন, ঘরে বৃষ্টিতে পানি পরে এ কথা ভেবে অনেকে ছাত্র-ছাত্রী বৃষ্টির দিনে স্কুলে আসেনা।
এ দিকে ছাত্র অভিভাবক সাইফুল ইসলাম বলেন, নাদোসৈয়দপুর মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কক্ষের সংকটে পড়ে ঝুঁকিপূর্ণ ওই ভবনে ছেলে-মেয়েদের পাঠদান চলায়। এতে তাঁরাও ছেলে-মেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে অজানা আশংকায় থাকেন। আবার দু-একজন অভিভাবক ওই ভবনে পাঠদান কালে বাচ্চাদের জীবনের ঝুঁকির কথা ভেবে তাদের সন্তানকে বিদ্যালয়েই পাঠান না।
তা ছাড়া নাদোসৈয়দপুর মধ্যপাড়া গ্রামের অপর ছাত্র অভিভাবক মো. আনোয়ার হোসেন দাবী জানান, কোমলমতি শিক্ষার্থীর মূল্যবান জীবনের কথা ভেবে নাদোসৈয়দপুর মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কক্ষের সংকট মেটাতে একটি নতুন ভবন নির্মান করা হোক জরুরী ভিত্তিতে।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আকতারুজ্জামান বলেন, বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে আবেদন পেয়েছেন। আর এর প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে নতুন ভবনের জন্য প্রস্তাবনাও তিনি পাঠিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আশা করছি চলতি বছরেই নাদোসৈয়দপুর মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মানের অনুমোদন হতে পারে।