নগরীর পথে চলতে-ফিরতে দেখা মিলে ছিন্নমূল মানুষের। শহুরে সভ্যতার মাত্রা যত বাড়ছে, শহরের ওলিতে গলিতে বাড়ছে ছিন্নমূল মানুষের সংখ্যা। এদের সাধারণত তিন কুলে কেউ নেই, নেই কোনো পিছুটান বা কিছু পাবার আশা। সভ্য ভাষায় যাকে আমরা বলি, চাল-চুলোহীন। প্রতিটা জেলা শহরে এই ছিন্নমূল মানুষদের বেশিরভাগই থাকে শিশুরা। তাদের সবার একটাই কমন নাম, 'পথশিশু'।
হুহু করে দেশ এগিয়ে গেলেও, এই পথশিশুদের পুনরুদ্ধার বা এ জাতীয় কোনো উদ্যোগ বা প্রয়োগ তেমন একটা দেখা যায়নি রাষ্ট্রীয়ভাবে।
তবে এই পথশিশুদের একটু ভালো রাখা বা জীবনযাত্রাকে একটু পাল্টে দিতে বদ্ধপরিকর পথশিশুদের উন্নয়নে কাজ করে যাওয়া সংগঠন- "কাম ফর রোড চাইল্ড" ( সিআরসি)।
সারাদেশের মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জে সাংগঠনিক ধারা অব্যাহত রেখে কাজ করে যাচ্ছে, "সিআরসি, বশেমুরবিপ্রবি শাখা। পথশিশুদের দেখাশোনা, ইদসহ বিভিন্ন উপলক্ষ/ সংকটে উপহার প্রদানের মতো নিয়মিত কার্যক্রমের বাহিরেও তারা যাত্রা করেছে "হাতেখড়ি" নামক একটি স্কুলের। যেখানে ছিন্নমূল এসব শিশুদের পাশাপাশি, সুবিধাবঞ্চিত বা সমাজে অবহেলিত ও হতদরিদ্র পরিবারের শিশুরা পড়াশোনা করার সুযোগ পায়।
এবিষয়ে, সিআরসি, বশেমুরবিপ্রবি শাখার সভাপতি রাফিউজ্জামান ওয়াসিক বলেন, অনেক প্রতিকূল পরিবেশ এর মধ্যে দিয়েও আমরা স্কুল টি পুনরায় চালু করে পরিচালনা করে যাচ্ছি, এখানে বেশিরভাগ শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায় না, আমাদের উদ্দেশ্য সবাইকে স্কুল মুখি করা। এখানে একদম
তাছাড়া আমরা পুর্বে যাদের পড়িয়েছি তারা অনেকেই এখন উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ে। বশেমুরবিপ্রবির যে কোনো শিক্ষার্থী চাইলে স্বেচ্ছায় এখানে পাঠদান করাতে পারে।
স্কুলটিতে প্রায় নিয়মিত ক্লাস নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী পুলকেশ মন্ডল।
তিনি জানান, হাতেখড়ি স্কুল যেটা বর্তমানে গোপালগঞ্জ শহরের পাশে যে বস্তি বাড়ি আছে সেখানের শিশুদেরকে নিয়েই। আমরা সপ্তাহে দুদিন (শুক্র, শনি) ছুটির দিনে গোপালগঞ্জ শহরে অবস্থিত অডিটোরিয়াম এ বাচ্চাদের ক্লাস নিয়ে থাকি। এখানে এমনও ছেলে-মেয়ে আছে যারা বোতল কুড়ানো থেকে শুরু করে নানা কাজে জড়িত একটু ভাতের জন্য।
খুবই ভালো লাগে যখন ওখানে ক্লাস নিতে যাই আর ওরা দৌড়ে আসে। সমাজের বিত্তবানদের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে সমাজকে আরেকটু সুন্দর করতে এদের পাশে দাঁড়ানোর।