শেরপুরের নকলা উপজেলার ৬ নম্বর পাঠাকাটা ইউনিয়নে কৈয়াকুড়ি কান্দাপাড়া তোফাজ্জল হোসেনের বাড়ি থেকে দুধেরচর মোল্লা বাড়ি হয়ে কুটেরচর মাদ্রাসা মোড় পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার সড়কের দুধেরচর অংশে দীর্ঘদিন ধরে একটি কালভার্টের ছাদ ভেঙে বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে পথচারীসহ এলাকাবাসি। এতে প্রায়ই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। আহত হচ্ছেন পথচারী, যানবাহনের চালকসহ যাত্রী ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা।
এলাকাবাসির সাথে কথা বলে জানা যায় চরাঞ্চলের দুধেরচর ও পার্শবর্তী বারারচর গ্রামসহ আশপাশের প্রায় ৩ হাজার মানুষ প্রতিদিন এ কালভর্টির উপর দিয়ে পাঠাকাটা ইউনিয়নের বালিগঞ্জ বাজার, কৈয়াকুড়ি কান্দাপাড়া, কৈয়াকুড়ি নামাপাড়া, দশকাহনীয়া ও পার্শ্ববর্তী চরঅষ্টধর ইউনিয়নের নারায়নখোলা বাজারসহ উপজেলা সদরে যাতায়াত করে থাকেন। চলাচল করে পিকআপ, ভ্যানসহ টলি, ঠেলাগাড়ি, অটোরিকশা, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও সাইকেলের মত যানবাহন। কালভার্টের উপর দিয়ে দুধেরচর গ্রাম থেকে নামাকৈয়াকুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে আসে প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী। কৃষি নির্ভর এ এলাকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য এ কালভার্টটির উপর দিয়ে সড়ক পথে উপজেলা সদর ও আশপাশের বাজারগুলোতে বিক্রি করে থাকেন।
প্রায় দু'বছর আগে কালভার্টের ছাদের বড় একটা অংশ ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন কালভার্টের উপর দিয়ে যাতায়াতকারীরা। এ ছাড়াও ভেঙে গেছে কালভার্টের দু'পাশের রেলিং। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। আহত হচ্ছেন অনেকেই। রাতে এ পথে চলাচলকারী অচেনা পথচারী ও যানবাহন চালকেরা বেশির ভাগ দুর্ঘটনায় পড়ছেন।
কৈয়াকুড়ি কান্দাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছায়েদুল ইসলাম জানান কালভার্টের ভাঙা অংশে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। গরু, মহিষ, ছাগল ও শিশুদের নিয়ে সাবধানে চলাচল করতে হয়।
দুধের চর গ্রামের কৃষক হামিদুল ইসলাম বলেন কালভার্টের ছাদের বড় একটা অংশ ভেঙে পড়ার পর থেকে যানবাহন চলাচল সীমিত হয়ে গেছে। এতে কৃষিপণ্য পরিবহনে সমস্যায় পড়েছি। রাতের বেলা যানবাহন না চলায় পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতে হয়।
নামা কৈয়াকুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী দুধেরচর গ্রামের শিমলা বেগম জানায় প্রতিদিন পায়ে হেঁটে বিদ্যালয়ে আসি। কালভার্টের ছাদ ভাঙা থাকায় যানবাহন খুব একটা পাওয়া যায় না পেলেও দ্বিগুণ ভাড়া দাবি করে।
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিফাত মিয়া জানায় বাড়ি থেকে সাইকেলে করে বিদ্যালয়ে আসি। কালভার্টের কাছে এসে একটু অমনোযোগী হলেই বিপদের আশংকা। ইতিমধ্যে আমাদের বেশ কয়েকজন সহপাঠী কালভার্টের ভাঙা জায়গায় পড়ে আহত হয়েছে।
নামা কৈয়াকুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফকরুল আলম জানান কালভার্টের ছাদ ভেঙে যাওয়ায় বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীরা অসুবিধায় পড়েছে।
পাঠাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের(ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম সরকার বলেন, কালভার্টের ছাদ ভাঙা থাকায় এলাকাাসির সমস্যা দিনদিন বাড়ছে। সম্প্রতি ঢাকা থেকে একটি তদন্ত দল এসে কালভার্টটির সার্বিক পরিস্থিতি দেখে গেছেন। আশা করি অচিরেই সুব্যবস্থা হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী আরেফিন পারভেজ জানান কালভার্টটি নতুন করে নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু হবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, ইতিমধ্যে উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে কালভার্টটি পুন:নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।