প্রকাশ: শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২২, ৬:২০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
সোনাগাজীর আলোচিত মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও পিবিআই প্রধান বনজ কুমারের বিচারের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী।
শনিবার দুপুরে পৌর শহরের জিরো পয়েন্টে অনুষ্ঠিত এ কর্মসুচীতে নুসরাত হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামীর পরিবার পরিজন ও স্বজনরাসহ আওয়ামীলীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহন করেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারীরা মিড়িয়া ট্রায়াল,ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব ও আত্মহত্যা করবে বলে আসামী আবসার উদ্দিনকে প্রেরিত নুসরাতের সেই এসএমএস গায়েব করে আত্মহত্যার ঘটনাকে হত্যায় রুপ দেওয়ার জন্য পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারদাকে দায়ী করেন। তাদের দাবী ঢাকায় বসে কোটি টাকার বিনিময়ে বনজ কুমার আসামীরা জবানবন্ধি দেওয়ার আগেই তারা দোষ স্বীকার করেছে বলে গনমাধ্যমে তথ্য প্রকাশ করে। তার সরাসরি নির্দেশনায় ফেনীর পিবিআই কর্মকর্তারা অভিযুক্তদের রিমান্ডে বৈদ্যতিক শক দিয়ে, ড্রিল মেশিন দিয়ে পা ছিদ্র করে ও নারী আসামীদের বিবস্ত্র করে যৌন হয়রানীর মাধ্যমে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করেন। রিমান্ডে আসামীদের নির্যাতন করে তাদের পরিবার থেকে লাখ লাখ টাকা আদায়ের জন্য বনজ কুমার মজুমদারকে সরাসরি অভিযুক্ত করেন। মামলাটি পুন:তদন্তের ব্যবস্থা করে ন্যায় বিচার করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট আহবান জানান তারা।
ভুক্তোভোগী পরিবারের দাবি তারা রায়ের আগে ও পরে সোনাগাজীতে মানববন্ধন করতে চাইলে প্রশাসন ও পিবিআইয়ের বাধায় তা করা সম্ভব হয়নি। তারা কাফনের কাপড় পরে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। দীর্ঘ প্রায় ৪ বছর যাবত তাদের বুক ফাটা আর্তনাদ কেউ শুনেনি, তাই তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ন্যায়বিচার দাবি করেন । সবার একটাই দাবি মামলাটি পুনরায় তদন্তের মাধ্যমে নির্দোষ মানুষগুলো যেন মুক্তি পায়।
মৃত্যদন্ডপ্রাপ্ত সাবেক পৌর কাউন্সিলর মকসুদ আলমের ছেলে বলেন, পিবিআই কর্মকর্তা শাহআলম রিমান্ডে আমার বাবাকে বর্বর নির্যাতন করে বনজ কুমারের কথা বলে ৫০ লাখ টাকা দাবী করেন। নির্যাতন থেকে বাঁচাতে বাধ্য হয়ে ৪০ লাখ টাকা দিতে হয়েছে। টাকা আদায়ের যাবতীয় প্রমান আমাদের কাছে রয়েছে।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আবসার উদ্দিনের স্ত্রী সুরাইয়া হোসেন বলেন, অগ্নিদগ্ধ হওয়ার তিনদিন আগে নুসরাত আত্মহত্যার চেষ্টা করে যাহা এলাকার সবাই জানে। ঘটনার আগের দিন সে আমার স্বামীর কাছে অধ্যক্ষ সিরাজের জামিন ঠেকাতে প্রয়োজনে আত্মহত্যা করবে বলে এসএসএম দেয়। আমার স্বামী পিবিআইকে সেই এসএমএম দেখালে তারা সেগুলো গায়েব করে আমার স্বামীকে ফাঁসিয়ে দেয়।
মানববন্ধনে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত থেকে মুহুমুহু শ্লোগান দিয়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত সবার মুক্তি দাবী করেন। পরে মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারীরা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড বহন করে মৃত্যদন্ডপ্রাপ্তদের দ্রুত মুক্তি ও বনজ কুমারের বিচার চেয়ে শ্লোগান দিয়ে পুরো পৌর এলাকা প্রদক্ষিন করে কর্মসুচি সমাপ্ত করেন।