প্রকাশ: শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২২, ৬:১৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
সখিনা (১১০) ও রুবিনা (৮০) সর্ম্পকে মা ও মেয়ে। তাদের বাড়ি পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুর ইউনিয়নের চরদেওকান্দি গ্রামে। তারা দুজনই পুরোপুরি অন্ধ। একজন জন্ম থেকেই অন্ধ, অন্যজন জন্মের কিছুদিন পর থেকে অন্ধ। কোনো চিকিৎসাই কাজে আসেনি। সঠিক ও উন্নত চিকিৎসার অর্থও ছিল না। বাবা নেই। মা বৃদ্ধা, অসুস্থ। তাদের পার্থিব সম্পদ বলতেও কিছূ নেই। জীর্ণশীর্ণ একটি ঘরে তাদের বসবাস।
জন্মান্ধ হওয়ায় বেঁচে থাকার তাগিদে কিছুটা অনুমান বা আন্দাজ করে কাজ করতেন তিনি। বর্তমানে বয়সের বাড়ে বিছানায় শায়িত সখিনা। সামান্য কিছু জমিতে টিনের ছাউনি দিয়ে কোনো মতে পরিবার নিয়ে জীবন যাপন করছে। আত্মবিশ্বাস ও প্রবল স্মরণশক্তির মাধ্যমে জন্মান্ধ সখিনা।
বসতঘরের দূরে বাথরুম। বাথরুমে আসা যাওয়া তাদের পক্ষে অনেকটা অসম্ভব হয়ে পড়ে। রাতের বেলায় তো কথাই নেই। নিজেরা রান্না করতে পারে না, পাড়া প্রতিবেশীরা সহযোগিতা করে, লাঠি ভর দিয়ে চলে ওরা, তাও দিনে কতবার যে পড়ে গিয়ে, ঠেস লেগে আঘাত পায় তার কোনো হিসাব নেই। আল্লাহর দুনিয়ায় শক্তিহীন, দৃষ্টিহীন এক অসহায় সৃষ্টি সখিনা ও রবিনা। তাদের কোনো উত্তরসূরী নেই, স্বামী নেই, সন্তান নেই। তাদের কেউ মারা গেলে প্রতিবেশীর সহযোগীতায় দাফন কাফন করা যাবে।
মানবতার ঘরের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক মমতাজ উদ্দিন বলেন, আমার সীমিত সাধ্যের মধ্যে বেশ কিছুদিন যাবত আমি তাদের পাশে আছি। মাঝে মধ্যে কিছু শুকনো খাবার নিয়ে আসি এগুলোতে হয়তো কিছুদিন তাদের চলবে। কিন্তু তা ক্ষনস্থায়ী। তারা জানিয়েছে- আমরা অন্ধ, সাহায্যের জন্য কারো কাছে যেতে পারি না, কেউ যদি সাহায্য দেয়, তাহলে আমরা খাই, কিন্তু একই প্রতিবেশী কতবার দেবে? কেউ তো আর আমাদের অন্ধদের খুজে খুজে আমাদের বাড়িতে এসে সাহায্যও দিয়ে যাবে না।