প্রকাশ: শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০২২, ৮:১৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ৫ নাম্বার ফেরি ঘাট গত এক মাসেও চালু করা সম্ভব হয়নি। ফেরি ঘাটটির এ্যাপ্রোচ সড়কের বেশ কিছু অংশ নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যায়, তার পর থেকে ফেরি ঘাটটি বন্ধ রয়েছে।
বিআইডব্লিটিএ সুত্রে জানাযায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি ও তীব্র স্রোতের কারনে ৫ নং ফেরি ঘাট নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। এর পর থেকে এ ঘাট দিয়ে সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া ২০১৪ সালে পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙ্গনে দৌলতদিয়ার ১ ও ২ নম্বর ঘাট ভেঙ্গে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। আজ প্রর্যন্ত ১ ও ২ নাম্বার ফেরি ঘাট বন্ধ রয়েছে। ২ নাম্বার ফেরি ঘাট দিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির সিমেন্ট, পাথর, বালুর কার্গো জাহাজ তাদের পন্য রপ্তানির কাজে ব্যবহার করছে। ৭ টি ফেরি ঘাটের মধ্যে ৩ টি ঘাট দিয়ে সকল যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। বাকি ৪ টি ফেরি ঘাট নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়লেও জোড়া তালি দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।
এদিকে গুরুত্ব বিবেচনায় বিআইডব্লিউটিসি’র চাহিদা মোতাবেক বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ ২০১৪ সালে দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ঘাট আধুনীকায়ন প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প গ্রহন করে। নানা জটিলতার কারনে ৮ বছরেও ওই প্রকল্পের কাজ শুরু করতে
পারেনি কর্তৃপক্ষ। এই ৮ বছরে এক দপ্তর হতে অন্য দপ্তরে শুধু ফাইল চালাচালিই হয়েছে। মূলত নদী ভাঙ্গন এলাকায় দৃশ্যমান কোন কাজই হয়নি। এই আট বছরে প্রতি বছরই পদ্মার পানি বৃদ্ধির সময় ঘাট এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। কোন মতে জোড়াতালি দিয়ে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গনরোধের চেষ্টা করা হয়। তা তেমন একটা কাজে আসে না নদী ভাঙ্গন রোধে।
দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ঘাটকে স্থায়ীভাবে রক্ষা করতে পাউবো বিআইডব্লিটিএকে প্রস্তাব দিলে বিআইডব্লিটিএ দৌলতদিয়া প্রান্তে লঞ্চঘাট থেকে ৭ নম্বর ফেরি ঘাট পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার ও পাটুরিয়া ৪ টি ঘাট এলাকায় আড়াই কিলোমিটার এলাকায় স্থায়ী কাজসহ ৭ কিলোমিটার এলাকার জন্য ৬৩৪ কোটি টাকার একটি বিল একনেকে জমা দেওয়া হয়। ২০১৬ সালে বিলটি পাশও হয়। কিন্তুু দ্রব্যমূল্যে উর্দ্ধগতির দোহাই দিয়ে কাজটি শুরু করা হয়নি। পরবর্তী বছরে ২০১৭ সালে বিআইডব্লিটিসি কর্তৃপক্ষ রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ৭ টি ঘাট ও পাটুরিয়ার ৪ টি ঘাট মোট ১১ টি ঘাটের তিনটি করে স্তর হাই ওয়াটার, মিড ওয়াটার ও লো ওয়াটার অর্থ্যাৎ ৩৩ টি ঘাট করার জন্য নকশার পরিবর্তন আনতে বললে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৩৫১ কোটি টাকার একটি বিল পুনরায় জমা প্রদান করে। যে কারনে ওই নকশার যাচাই বাচাই করতে ফাইলটি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েটে) পাঠায় বিআইডব্লিটিএ কর্তৃপক্ষ। নকশা অনুমোদন অপেক্ষায় সেখানেই মুখ থুবরে পড়ে আছে দৌলতদিয়া- পাটুরিয়া নৌ বন্দর আধুনিকায়ন প্রকল্পটি।
বিআইডব্লউটিএ'র আরিচা অঞ্চলের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোগবুল হোসেন বলেন, নদী ভাঙ্গনের কারনে ৫ নং ফেরি ঘাটের এ্যাপ্রোচ সড়ক বিলিন হয়ে গেছে। নদীর পানি ও স্রোত কমে যাওয়ার পর ফেরি ঘাটি পুনরায় সচল করা হবে।
দৌলতদিয়া- পাটুরিয়া ঘাট আধুনিকায়নের কাজে অগ্রগতি বিষয়ে বিআইডব্লিটিএ’র আরিচা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জহিরুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীর পানি কমার পরও নদী ভাঙন অব্যাহত আছে। নদী ভাঙ্গনরোধে আমরা জিও ব্যাগ ফেলে যাচ্ছি। তাছাড়া দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাট আধুনিকায়ন প্রকল্পটি ১৩৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে বিল জমা দেওয়া হয়েছে। নকশার
কাজও প্রায় শেষ প্রান্তে। দুই এক সপ্তাহের মধ্যেই নকশা হাতে পাওয়া যাবে। জমি অধিগ্রহনের জন্য বিআইডব্লিটিএ ভুমি মন্ত্রনালয়ে পত্র দিয়েছে। সব ঠিক থাকলে আগামী নভেম্বরে মাসে ঘাট আধুনিকায়নের কাজ শুরু হবে। সেখানে বিআইডব্লিটিএ বিআইডব্লিটিসি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমন্বয়ে কাজ করবে।