#সকল ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে: উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার। #বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ: ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়। #সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বলতম দেশ বাংলাদেশ: উৎপল সাহা।
প্রকাশ: শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০২২, ১২:৪৮ এএম | অনলাইন সংস্করণ
ধর্মীয় স্বাধীনতা বলতে বুঝায় আমার ধর্মীয় পরিচয় যেন সঠিকভাবে প্রকাশ করতে পারি। আমি কোন বিশ্বাসে বিশ্বাস করি এটা প্রকাশ করার স্বাধীনতাকে ধর্মীয় স্বাধীনতা বলে। সবাই মিলে-মিশে নিজেদের ধর্ম পালন করছেন। এই দৃষ্টান্ত প্রমাণ করে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এই দৃষ্টান্ত যদি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া যায়। তবে বিশ্ব থেকে দূর হবে সাম্প্রদায়িক হানাহানি।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৮৪৯তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক, খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, রমনা কালী মন্দিরের সভাপতি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য উৎপল সাহা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার বলেন, ধর্মীয় স্বাধীনতা বলতে বুঝায় আমার ধর্মীয় পরিচয় যেন সঠিকভাবে প্রকাশ করতে পারি। আমি কোন বিশ্বাসে বিশ্বাস করি এটা প্রকাশ করার স্বাধীনতাকে ধর্মীয় স্বাধীনতা বলে। অসাম্প্রদায়িক দেশে যার যার ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার কথা কিন্তু অনেক অসাম্প্রদায়িক দেশেও এই ধর্মীয় স্বাধীনতার ক্ষেত্রেও অনেক বিধি নিষেধ আছে। আমাদের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে স্বৈরশাসক এরশাদ আমাদের দেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে প্রবর্তন করলেন, এটা ছিল আমাদের রাষ্ট্রের সবচে নেগেটিভ পদক্ষেপ। আমাদের রাষ্ট্রের সবচে দুটি নেগেটিভ পদক্ষেপ হচ্ছে ইনডেমনিটি আইন ও এই রাষ্ট্র ধর্ম আইন প্রবর্তন করা। কিন্তু আমি জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দিতে চাই এইজন্য যে তার শাসনামলে আমাদের সংবিধানে একটি আইন সংযোজন করা হলও যে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম কিন্তু সকল ধর্মের মানুষ সমান সুযোগ লাভ করবে। এইটুকু যোগ করার মাধ্যমে আমরা অনেকটাই স্বস্তি পেলাম, যে প্রত্যাশা ছিল আমাদের সেই প্রত্যাশার প্রাপ্তি পুরোটা হয়নি।
ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয় বলেন, আগামী ৯ অক্টোবর একইসাথে মুসলিমদের ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা ও আমাদের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপিত হবে। এটাই মূলত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। আমরা একই দিনে প্রবারণা পূর্ণিমা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী উদযাপন করবো। এটাই আমাদের বাংলাদেশের আসল রূপ। আমি কিছুক্ষণ আগে একটা পত্রিকার লেখা পরছিলাম যেখানে দেখলাম যে একটি এলাকায় একই আঙিনায় পাশাপাশি মসজিদ ও মন্দিরে প্রায় ৩০ বছর ধরে সম্প্রীতির সাথে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে নামাজ ও শারদীয় দূর্গাপূজা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এবারও মসজিদের পাশেই মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুর্গাপূজা। আযান ও নামাজের সময় বন্ধ থাকছে পূজার কার্যক্রম। উভয় ধর্মের লোকজন বলছে তারা সব সময় সম্প্রীতির সাথেই নিজ-নিজ ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। আমরা সবাই মিলে মিশে এভাবে বসবাস করছি, সবাই মিলে-মিশে নিজেদের ধর্ম পালন করছেন; এটাই বাংলাদেশ। এই দৃষ্টান্ত প্রমাণ করে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এই দৃষ্টান্ত যদি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া যায়। তবে বিশ্ব থেকে দূর হবে সাম্প্রদায়িক হানাহানি।
উৎপল সাহা বলেন, এবারে দুর্গা পূজা যেভাবে বাংলাদেশে উদযাপন হয়েছে সেখানে আমি এটাকে দেখতে চাচ্ছি আমরা যে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের একটি শুভ সূচনা দেখছি। গতবারের যে দুর্গাপূজা উদযাপন এবং এবারের উদযাপন কিন্তু সম্পূর্ণই আলাদা। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই এইজন্য যে, এবারের পূজাতে প্রশাসনিক যে তৎপরতা ছিল সেটা চোখে পড়ার মতো। সবার অংশগ্রহণে সার্বজনীন সামাজিক উৎসবে পরিণত হয় দুর্গোৎসব। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে শত শত বছর ধরে সব সম্প্রদায়ের মানুষ সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির সঙ্গে ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করে আসছে। এটাই বাংলাদেশের সমাজের ঐতিহ্য ও রীতি। এই দেশে সব ধর্মই স্বাধীন ও সমান অধিকার। দলমত, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ও পেশা নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে সবকটি পূজামণ্ডপে ছিল প্রচণ্ড ভিড়। এই দুর্গোৎসবে আরও স্পষ্ট হলো অসাম্প্রদায়িক চেতনার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ। আজকে বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে বিনষ্ট করার জন্য যারা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে তাদেরকে সমূলে উৎপাটন করতে হবে।