অস্ত্র মামলায় জি কে শামীমসহ ৭ দেহরক্ষীর রায় দুপুরে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: রোববার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১০:১১ এএম | অনলাইন সংস্করণ
কথিত যুবলীগ নেতা ও বিতর্কিত ঠিকাদার এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীম ও তার ৭ দেহরক্ষীর অস্ত্র মামলায় রায় হবে আজ রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর)।
এদিন দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ ছামিদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করবেন। রায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করছে রাষ্ট্রপক্ষ।
ঢাকা মহানগর আদালতের হাজতখানার ইনর্চাজ পুলিশের উপ-পরিদর্শক সাদিকুল ইসলাম বলেন, কাশিমপুর থেকে জি কে শামীমকে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে আদালতে হাজির করা হয়। এছাড়া তার সাত দেহরক্ষিকেও হাজির করা হয় আদালতে। তাদের রাখা হয়েছে ঢাকা মহানগর আদালতের হাজতখানায়।
রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর সালাহউদ্দিন হাওলাদার বলেন, জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলার রায় রোববার দুপুর ১২টার দিকে ঘোষণা করা হবে। এ মামলায় আমরা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করছি। অস্ত্র মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তবে আসামিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে করা মামলার পৃথক তিন ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। জি কে শামীমের বিরুদ্ধে বৈধ অস্ত্র অবৈধভাবে প্রদর্শনের অভিযোগ আনা হয়েছে। যার সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছরের কারাদণ্ড।
তবে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি। রায়ে তারা খালাস পাবেন।
এর আগে ২৮ আগস্ট মামলাটির যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ ছামিদুল ইসলাম রায় ঘোষণার এ তারিখ ঠিক করেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন, মো. সামসাদ হোসেন, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. মুরাদ হোসেন।
২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিজ কার্যালয়ে সাত দেহরক্ষীসহ গ্রেফতার হন জি কে শামীম। পরে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও অর্থপাচার আইনে তিনটি মামলা হয়। মামলার এজাহারে শামীমকে চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, অবৈধ মাদক ও জুয়ার ব্যবসায়ী বলে উল্লেখ করা হয়।
২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিজ কার্যালয়ে সাত দেহরক্ষীসহ গ্রেফতার হন জি কে শামীম। নিকেতন এ-ব্লকের ৫ নম্বর রোডের ১৪৪ নম্বর বাড়িতে তার অফিসে ১১ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র্যাব।
সেসময় তার কার্যালয় থেকে এক কোটি ৮০ লাখ টাকা, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ৭৫২ সিঙ্গাপুরের ডলার, ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর, অস্ত্র, বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও অর্থপাচার আইনে তিনটি মামলা করে র্যাব। মামলার এজাহারে শামীমকে চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, অবৈধ মাদক ও জুয়ার ব্যবসায়ী বলে উল্লেখ করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলাগুলো বিচারাধীন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি আমিনুল ইসলাম জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হয়েছে মর্মে ডকুমেন্ট দেখালেও তা যাচাইয়ে তার সঠিকতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে ওই অস্ত্রের নকল কাগজপত্র নিয়ে ২০১৭ সালে প্রথমে এসএম বিল্ডাস কোম্পানিতে যোগদান করেন। পরে ২০১৯ সালের মাঝামাঝি আসামি জি কে শামীমের দেহরক্ষী হিসেবে যোগদান করে কাজ করে আসছিলেন। তিনি মূলত অবৈধ অস্ত্রটি ৭০ হাজার টাকায় ক্রয় করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করেন।
এছাড়া অন্যান্য আসামিরা নিরাপত্তার অজুহাতে অস্ত্রের লাইসেন্সপ্রাপ্ত হলেও তারা শর্ত ভঙ্গ করে অস্ত্র প্রকাশ্যে বহন, প্রদর্শন ও ব্যবহার করে লোকজনের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টি করতেন। এর মাধ্যমে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, মাদক ও জুয়ার ব্যবসা করে স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছেন।