প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:৩০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
সীমান্তের ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের উঁচু নীল তুরা পাহাড় থেকে পাখিদের সঙ্গে উড়ে আসে সাদা সাদা মেঘ। এপারে বসে কিংবা শুয়ে, মেঘালয় পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য্য দেখার অনুভূতি এক কথায় অসাধারণ। তাইতো শহরের কোলাহল ছেড়ে মানুষ ছুটে আসে প্রকৃতিতে হারিয়ে যেতে। এপার থেকে সীমান্তের ওপারে মেঘালয় রাজ্যের মানুষের জীবন ও জীবিকার দৃশ্য খুব কাছ থেকে দেখা যায়। বলছি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার কড়ইতলী স্থলবন্দর পিকনিক স্পটের কথা। হালুয়াঘাট পৌরশহর থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে মেঘালয়ের সীমান্তঘেঁষা কড়ইতলী স্থল বন্দর পার্ক। যা বর্তমানে একটি পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
হালুয়াঘাট পৌর শহরের খুব কাছে ও রাস্তা ভালো হওয়ায় দর্শনার্থীরা এখানে ছুটে আসেন। পার্কের ভেতর নানা রকমের ফুলের গাছে প্রজাপতির ছোটাছুটি দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে পার্কে করা হয়েছে নানা রকম পশুপাখির ভাস্কর্য, রয়েছে দোলনা। এ ছাড়াও বসে বিশ্রামের জন্য ছোট বড় বেশ কয়েকটি বিশ্রামাগার রয়েছে। পানির ফোয়ারা, সুন্দর ফটক, রয়েছে চা কফির ক্যান্টিন। সুন্দর রাস্তার দু’ধারে নানা ফুলের গাছ আপনার মনকে প্রশান্তির জন্য যথেষ্ট। তাই তো বন্ধু ও প্রিয়জনদের নিয়ে পাহাড় প্রকৃতিতে ঘুরে আসার জন্য চমৎকার জায়গা এটি।
এই পার্কে প্রবেশের আগে চোখে পড়বে ভারত থেকে আমদানিকৃত কয়লা। যা এ এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে স্থলবন্দরের কাজ চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা বেষ্টনির কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে বিভিন্ন অফিস গোছানোর কাজ। যা কড়ইতলীর সৌন্দর্য্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
পার্কে ঘুরতে আসা কলেজ ছাত্রী আশা মালিহা বলেন, আমি আমার বান্ধবিদের সাথে প্রায় সময় এখানে আসি, এমন সুন্দর্য্য আর কোথাও দেখিনি। এখানে সারাদিন বসে থাকলেও ক্লান্তিবোধ হবেনা।
পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা সোহেল মিয়া বলেন, আমি ঢাকায় চাকুরী করি। শ্বশুড়বাড়ি এলেই এই পার্কে একবার হলেও পরিবার নিয়ে এখানে আসি। আমার বাচ্চারাও খুব আনন্দ পায়, আবার আমারও খুব ভালো লাগে। তবে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাবো, বাচ্চাদের জন্য আরো বেশী করে বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়।
এই পার্কটির বিকাশে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন কড়ইতলী কোল অ্যান্ড কোক ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও ভূবনকুড়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এম সুরুজ মিয়া। এ বিষয়ে তিনি বলেন, স্থলবন্দরের কিছু ব্যবসায়ী মিলে পার্কটি আমরা প্রতিষ্ঠা করি। ২০১৭ সালে আমাদের পার্কের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়। বর্তমানে যা দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। আমরা দেখেছি সাধারণ মানুষ যখন পাহাড় দেখতে আসে তারা ভালো পরিবেশ পায় না। আমরা শুধু একটু পরিবেশ করে দিয়েছি। আমরা প্রচুর পরিমাণ মানুষের সাড়া পাচ্ছি। আমরা প্রকৃতির সাথে পার্কটিকে মিশিয়ে দিয়েছি। সরকারের সহযোগীতা পেলে আমরা পার্কের উন্নয়নে আরো কাজ করবো।