প্রকাশ: বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:৫৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রিচি গ্রামের ঐতিহ্যবাহী মন্দির শ্মশান দীর্ঘদিন ধরে জবরদখল করে রেখেছেন, হবিগঞ্জ লাখাই শায়েস্তাগঞ্জ ৩ আসনের প্রভাবশালী এমপি আবু জাহিরের চাচাতো ভাই নুর মোহাম্মদ। মূলত এমপি আবু জাহিরের প্রভাব খাটিয়েই দীর্ঘদিন ধরে মন্দির ও শ্মশানের বিপুল সম্পত্তি জবর দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের। মন্দির ও শ্মশান এর জমি জবরদখল করে রাখার ঘটনাটি ওই এলাকার সব ধর্মের মানুষেরই জানা আছে। কিন্তু প্রভাবশালী এমপি আবু জাহিরের ছত্রছায়ায় ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে কথা বলার মত সাহস কারো নেই। তবে গত ২০ সেপ্টেম্বর শহরের চিড়াকান্দি এলাকার বাসিন্দা সুমন দাস নামের এক ব্যক্তি মন্দির ও শ্মশানের জমি পুনরুদ্ধার এর জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেছেন।
লিখিত আবেদন সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার ২ নং রিচি ইউনিয়নের শত শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী মন্দির ও শ্মশান দীর্ঘদিন ধরে নূর মোহাম্মদ নামের এক ব্যক্তি জবর দখল করে আছেন। দখলকৃত মন্দির ও শ্মশান এর জমির এস এ পর্চা খতিয়ান নং ১, ২৬৬ দাগে মন্দিরের ৩৪ শতক জমি, ও ২৬২ দাগে শ্মশানের ৭০ শতক জমি। যেগুলো বর্তমানে মন্দিরের এস এ দাগ নং ২৬৬ থেকে আর এস দাগ নং ৩৮৬,৩৮৭,৩৮৮, ও শ্মশানের ২৬২ থেকে ৩৮২,১/১ ৩৮২ দাগে নতুন জরিপে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।তবে সবগুলোই এখন পর্যন্ত কোন ব্যক্তির নামে করা হয়নি খতিয়ান নং ১ এ লিপিবদ্ধ আছে।বর্তমানে মন্দির ও শ্মশান এর জমির বৈধ কাগজপত্রে মালিক না হয়েও নূর মোহাম্মদ বাস্তবে মন্দির ও শ্মশানের জমিতে অনেকগুলো দোকান কোঠা তৈরি করে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন। এছাড়া অবশিষ্ট জমিতে ঘর তৈরি করে পরিবারের লোকজন নিয়ে নিজেই বসবাস করে আসছেন। লিখিত আবেদনকারী সুমন দাস এর দাবি মন্দির ও শ্বশানের জমিটি পুনরুদ্ধার করে দিলে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পূজা আরাধনা ও সৎকার কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে পারবেন।
এ বিষয়ে রিচি গ্রামে সরজমিনে গিয়ে তথ্য সংগ্রহকালে ওই এলাকার একাধিক প্রবীণ মানুষ নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, আমাদের জানা মতে ঐতিহ্যবাহী রিচি গ্রামের মন্দির ও শ্মশানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা আরাধনা ও সৎকার কার্যক্রম স্বাধীনতাযুদ্ধের আগ পর্যন্ত স্বাভাবিক গতিতে চলছিল। মূলত ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় হিন্দুরা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যায়। এরপর থেকে ওই জমিটি কিছুদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। ওই অবস্থা চলাকালীন সময়ে নুর মোহাম্মদ নামের ওই ব্যক্তি চোখ পড়ে মন্দির ও শ্মশানের জমির উপরে এবং আস্তে আস্তে দখল করতে শুরু করে। বর্তমানে আবু জাহির এমপির প্রভাব খাটিয়ে মন্দির ও শ্মশানের জমিতে একাধিক দোকান কোঠা তৈরি করে মাসে আয় করছে মোটা অংকের টাকা এবং অবশিষ্ট জমিতে সে নিজেই ঘর তৈরি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছে।