প্রকাশ: বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:১০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে হাতি তাড়ানোর জন্য নিজের তৈরি বিদ্যুতের ফাঁদেই প্রাণ গেল এক যুবকের। নিহত যুবক উপজেলার ভূবনকুড়া ইউনিয়নের কড়াইতলী গ্রামের আব্দুল জব্বারের পুত্র জাহাঙ্গীর আলম(৩৫)। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধায় ভূবনকুড়া ইউনিয়নের কুচপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জাহাঙ্গীর আলম এর স্ত্রী আছিয়া খাতুন বলেন, প্রতিদিন সন্ধায় বন্যহাতির পাল হানা দিয়ে রোপনকৃত আমন ধানের ফসল নষ্ট করে। হাতি ঠেকানোর জন্য জেনারেটারের মাধ্যমে তার দিয়ে সিমান্ত এলাকায় তার স্বামী কারেন্ট শক এর ব্যবস্থা করার সময় বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে তার স্বামীর মৃত্যু ঘটে। তার সংসার জীবনে তিনটি সন্তান রয়েছে।
নিহতের বড় ভাই জয়নাল আবেদীন ও জুলহাস মিয়া সাংবাদিকদের জানান, বন্যহাতির পাল হানা দিয়ে রোপনকৃত আমন ধানের ফসল নষ্ট করে। হাতির আক্রমন থেকে বাঁচতে ও ঘর-বাড়ি রক্ষা করতে জেনারেটারের মাধ্যমে তার দিয়ে সিমান্ত এলাকায় কারেন্ট শক এর ব্যবস্থা করার সময় বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে তার ছোট ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। হাতির পাল এখনো এলাকায় বিচরণ করছে। দুদিন ধরে তারা জেনারেটারের মাধ্যমে তার দিয়ে সিমান্ত এলাকায় কারেন্ট শক এর ব্যবস্থা করেছিল।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়ি এলাকায় প্রায় রাতে বন্য হাতির পাল হানা দিয়ে সবজি খেত, ফসল ও গাছের চারার ব্যাপক ক্ষতি করেছে। হাতির আক্রমণে অতিষ্ঠ হয়ে এলাকার লোকজন নিজেদের বাড়িঘর রক্ষা করার জন্য বিদ্যুতের তার দিয়ে ফাঁদ পাতেন। একটি হাতি শক খেয়ে প্রায় আদা ঘন্টা অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিল। এ সময় তারটি ছিঁড়ে যায় পরে তারটি সংযোগ দিতে গেলে হাতি মারার ফাঁদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন জাহাঙ্গীর আলম। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।
স্থানীয় ভূবনকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এমএ সুরুজ মিঞা জানান, হাতি তাড়ানোর জন্য জেনারেটারের মাধ্যমে তার দিয়ে সিমান্ত এলাকায় কারেন্ট শক এর ব্যবস্থা করার সময় বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে জাহাঙ্গীরের মৃত্যু হয়। হাতির তান্ডবে পাহাড়ি এলাকার লোকজন অতিষ্ট হয়ে পড়ছে।
হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহিনুজ্জামান খান বলেন, আমরা সিমান্ত এলাকায় বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ প্রেরণ করেছি। নিহত ব্যক্তি জেনারেটারের মাধ্যমে হাতি তাড়ানোর জন্য নিজের পাতা ফাঁদে পড়ে নিজেই মৃত্যু বরণ করেছেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
উল্লেখ যে, সীমান্তবর্তী কড়ইতলী পাহাড়ের ঢালে ফসলি জমিতে ভারতীয় বন্যহাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের ১১২২ নম্বর পিলারের কাছে কৃষক নওশের আলীর মৃত্যু ঘটে।