মাত্র আড়াই বছরে একটি কোম্পানি কি ভাবে সুস্বজ্জিত করে সম্পূর্ন কম্প্লায়েন্স করা হলো তার ইতিকথা কখনো তার হৃদয়ে অনুভুত হবে না যতক্ষণ একজন নিজে তা না করবেন। মোঃ সিদ্দিকুর রহমান ওরফে সিদ্দিক যিনি সিমটেক্সের স্বপ্নদ্রষ্টা তিনিই পিকে হালদারের সবচেয়ে ঘনিষ্ট বন্ধু ও ৩৫০০ কোটি টাকা অর্থ আত্মসাথের সহযোগী। যে পিকে হালদারকে বর্তমানে ভারতে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিদ্দিক এক সময় সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এমডি ছিলেন এবং তিনি এখনো সিমটক্সকে বিদেশ থেকে পরিচালনার চেষ্টা করছেন। পিকের সহযোগী হওয়ায় তার নামে দুদক নানা করনে ১২/১৩ টি মামলা করলে তিনি লুকিয়ে ভারত হয়ে বাংলাদেশের বাইরে পর্তুগালে চলে যান। দুর্নীতি দমন কমিশন জি আর নং ০৩/২০২০ ও দুদক, সাজেকা, ঢাকা-১ এর মামলা নং০৩(০১)২০২০ এর এজাহারে দেখা যাই পিকে হালদার সিমটেক্সে ২৩,৩৮,১৬,২৭০ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তার সহযোগী মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, সিদ্দিকের স্ত্রী মিসেস মাহফুজা রহমান, তাদের দুই ছেলে নিয়াজ রহমান সাকিব ও ইশতিয়াক রহমান ইমরান এবং সিদ্দিকের বড় ভাই এনসান আলি শেখের নামে বিনিয়োগ করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পি কে হালদা্রের দেশত্যাগের পরপরই সিদ্দিকুর রহমান একই কায়দায় দেশ ছেড়ে পালায়। তিনি চলে যাওয়ার পর এক জন অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার লেঃ কর্ণেল মোঃ আনিসুর রহমান পরিচালক হিসেবে নাবিক ছাড়াই সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের এই নৌকার হাল ধরেন এবং চেয়ারম্যান পদে সকল ব্যাংক ও অফিসের সিগনেটরি হিসেবে কাজ করতে থাকেন। ইতিমধ্যে নানা ঘটনা ও অঘটনা ঘটে গেলেও এখনো আর জে এস সি এর ডকুমেন্ট ও কোর্টের আদেশ অনুযায়ী এই সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের একজন শেয়ার হোল্ডার ডিরেক্টর ও চেয়ারম্যান হলেন লেঃ কর্ণেল (অব.) আনিস।
এদিকে, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন, ২০২১ সালের ১২৬৮২ এবং ২০২২ সালের ৫৫৬৮ নম্বর অনুযায়ী কর্ণেল (অব.) আনিস একজন নিবন্ধিত শেয়ার হোল্ডার পরিচালক এবং সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান, যা ইতিমধ্যেই রেজিস্ট্রারের অফিস জয়েন্ট স্টক কোম্পানি ও ফার্মস এ প্রকাশিত হয়েছিল। আর জে এস সি ইস্যু নং ২৭০৯৫০ তারিখ: ০৬/০১/২০২২ এবং ইস্যু নং ২৯৯১৩৯ তারিখ: ২৫/০৫/২০২২। সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ আনিসুর রহমান (অব.) সঠিক অবস্থানে থাকায় এই মুহূর্তে এটি পরিবর্তন করা যাচ্ছে না। আনিসুর রহমানের মোট শেয়ার রয়েছে ১৫৯৪৯৬১ যা মোট শেয়ারের ২.১৫%। কাজেই তিনি আর জে এস সি এর ডকুমেন্ট অনুযায়ী কোম্পানির একজন যোগ্য পরিচালক ও চেয়ারম্যান ।
সিদ্দিক এই কোম্পানি থেকে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা নিয়ে গেছেন এবং এখনো নিয়ে যেতে যাচ্ছেন। সিমটেক্স একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হওয়ায় এখান থেকে অবৈধভাবে টাকা নেয়া, বন্ডের সেলাই সুতা, প্লাসটিক দানা ও অন্যান্য দ্রব্য অবৈধভাবে বিক্রি করা ও নানা অনিয়মে কর্ণেল (অব.) আনিস বাঁধা দিলে তাতেই বাঁধ সেজেছে সিদ্দিক ও পি কে হালদার গং এর। এই সিদ্দিক যিনি পি কে হালদার এর সব চেয়ে ঘনিষ্ট সহযোগী, তাদের আর এক সহযোগী মিঃ সরোয়ার সাহেব যিনি নারীঘটিত কারণে কিছুদিন আগেই চাকুরিচুত হয়েছে । পি কে এর নারীঘটিত বিষয় গুলো সবারই জানা। সরোয়ার ইতিপূর্বে বেশ গুরুত্ব পূর্ণ জায়গায় চাকরি করেছেন এবং সেখান থেকে পি কে হালদার ও সিদ্দিককে কয়েক হাজার কোটি টাকার অনুমদন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাইয়ে দিতে সাহায্য করেছেন। তাঁর উপরেই ভর করে পি কে হালদার গং আবার ও মাথা চেড়ে উঠেছ। তার ছেলে সাকিব যে এই কোম্পানির নামে মাত্র এমডি। সেও তার পিতা মিঃ সিদ্দিকের সাথে বিদেশে থাকে। সেই সাকিব হঠাৎ সপ্তাহ খানেক আগে গত ৮ আগস্ট ২২ দেশে এসে সরোয়ার ও পি কে গং কে সাথে নিয়ে কর্ণেল (অব.) আনিসকে হুমকি দিয়ে পরিচালক ও চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করতে বলে। তিনি পদত্যাগ না করায় কর্ণেল (অব.) আনিসকে জীবনের হুমকি দিলে তিনি আইনের আশ্রয় চেয়েছেন।
এই সিদ্দিকুর রহমান প্রশান্ত হালদার বা পিকে হালদারের সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে ২২০ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে। দুদক তার বিরুদ্ধে ১২/১৩ টি মামলা দায়ের করেছে এবং তাকে দেশ ছেড়ে যেতে না করেছে। কিন্তু তিনি দেশ ছেড়ে ভারত হয়ে পর্তুগালে চলে গেছেন। হাই কোর্ট তার সকল শেয়ার ও হিসাব ফ্রিজ করেছে। তা দেশের মানুষের সকলের নিশ্চয় জানা। পূর্বেই তিনি পর্তুগালের নাগরিকত্ব করে রেখেছিলেন। কারণ প্রয়োজনে তিনি পালিয়ে যাওয়ার জন্য আগেই পরিকল্পনা করেছিলেন।
সিদ্দিকের সব শেয়ার এ্যাকাউন্ট সরকার/দুদক/ কোর্ট কর্তৃক ফ্রিজ করায় আদালত লেঃ কর্ণেল মোঃ আনিসুর রহমান বা কর্ণেল আনিস কে চেয়ারম্যান হিসেবে RJSC তে নথি ভুক্ত করার নির্দেশে দিলে RJSC তা নথি ভুক্ত করেন। অথচ কোন প্রকার অফিসিয়াল আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই সিদ্দিকের নির্দেশে তার ছেলে দেশে ফিরে হঠাৎ করেই পি কে হালদার গং সারয়ার সাহেবকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছে গত ১৭ আগষ্ট সন্ধ্যায়। প্রশান্ত, সিদ্দিক ও সরোয়ার এরা সবাই মদ,নারী ও জুয়ার জীবনে জড়িয়ে ছিল। পি কে হালদার ও সিদ্দিক কে দেশে ফিরিয়ে আনলেই পি কে হালদার গং এর সরোয়ার সাহেব এর সকল কর্মের ফিরিস্তি জানা যাববে।
কোন অফিসিয়াল আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই সিমটেক্সের ওয়েবসাইট থেকে কর্ণেল (অব.) আনিসের সকল ছবি ও পদ তারা মুঝে ফেলেছে। এখানে উল্লেখ্য যে RJSC ও Court এর আদেশ অনুযায়ী কর্ণেল আনিস এখনো সিমটেক্সের শেয়ার হোল্ডার ডাইরেক্টর ও চেয়ারম্যান। এখন সিদ্দিকের ছেলে সাকিব, ও পি কে হালদার গং নেপথ্যে যারা কাজ করছে তাদের কারণে কর্ণেল আনিসের জীবন আজ হুমকির মুখে পড়েছে। আইন অনুযায়ী সরকারি সকল সংস্থার সাহায্য কামনা করে এবং Court & RJSC অনুযায়ী তাঁর পদে বহাল রাখতে অনুরোধ করেছেন।
কর্ণেল আনিস ট্রাস্ট ব্যাংক এর মিলিনিয়াম শাখায় সিমটেক্সের সকল এ্যকাউন্টের সিগনেটরি। উনার অনুপস্থতিতে কি ভাবে ট্রাস্ট ব্যাংক অর্থ আদান প্রদান করছে ? আনিসুর রহমান ও নিয়াজ রহমান সাকিব ছাড়া পি কে গং এবং সিদ্দিক পরিচালিত ফারমাগ্নিক কোম্পানির সাজানো দুই পরিচালকের শেয়ার নুন্যতম ৪% হওয়া দরকার কিন্তু আছে মাত্র ২.৩৬% যা ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন বিষয়টির উপর নজড় রাখছে। এ ছাড়াও কম্পানি সেক্রেটারির নিকট ব্যাখ্যা চেয়েছে। যে কোন পরিচালক কে বাদ দিতে হলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের মতামত ও অনুমতি নেয়া প্রয়োজন ছিল। তা পি কে গং এবং সিদ্দিক পরিচালিত বর্তমান মানেজমেন্ট নেন নাই। কাজেই তাদের সকল কার্যক্রম অবৈধ এবং তা বন্ধ রাখার ব্যবস্থা নিতে সকল অফিসের সাহায্য করা উচিত। সিমটেক্সের মত পাবলিক লিমিটেড
কোম্পানিকে এই সব ভয়ংকর অর্থ আত্মসাতকারী পিকে হালদার গং সারোয়ারের হাত থেকে বাঁচাবেন বলে দাবি করেন কর্ণেল (অব) আনিস।
ইতিমধ্যে গত ২৯ আগস্ট কর্ণেল আনিস, কর্ণেল পদবীর আরো এক জন অফিসার ও কর্ণেল আনিসের স্ত্রী বর্তমান অবৈধ চেয়ারমান সারোয়ারের বাসা ডি ও এইচ মিরপুরে গেলে তিনি এই বিষয়ে আলোচনা করতে চাইনি। তিনি ৩১ আগস্ট ২০২২ তারিখ বেলা ৪ টায় ফ্যাক্টরীতে যেতে বলে। ঐ একই দিন ডি জি এস সিকিউরিটি এর এম ডি মাসুদ পারভেজ কেও ফ্যাক্টরীতে যেতে বলেন সারোয়ার সাহেব। কর্ণেল আনিস ফ্যাক্টরীতে গেলে তিনি সাথে দেখা না করে পি কে গং এবং সিদ্দিক পরিচালিত বহিরাগত পি কে গং এর লোক জনকে লেলিয়ে দেই। কয়েক জন প্রহরীর মাথা ফাটাই। তার অস্ত্র কেড়ে নিয়ে তাদেরই এক জন শ্রমিকের পায়ে গুলি করে সমস্ত পরিবেশ ঘোলাটে করে তুলে। এর পর থানায় মামলা হয়েছে। তারা এখনো প্রতিনিয়ত অবৈধ ভাবে বন্ডের সুতা রাতের আন্ধকারে তারা বিক্রি করছে।
পূর্ব নিরধারিত সময় অনুযায়ী ৩১ আগস্ট ২২ তারিখ বিকাল ৩.৫০ ঘটিকায় সেখানে গেলে এক পর্যায়ে নিয়াজ লোহার রড দিয়ে কর্ণেল আনিসের মাথায় আঘাত করে এবং তিনি মেঝেতে পড়ে যান। তার ব্যাগসহ গুরুত্বপূর্ণ সকল কাগজপত্র, ল্যাপটপ, মোবাইল ও টাকা নিয়ে যায়। এরপর কর্ণেল আনিসকে একটি কক্ষে বন্দী করে ফাঁকা/ ব্লাঙ্ক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়। কিন্তু তিনি স্বাক্ষর না করেই ছিঁড়ে ফেলে। তখন তারা কর্ণেল আনিসের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এরপর তারা দ্বিতীয়বার আবারও বেশী লোক এনে কর্ণেল আনিসকে ফাঁকা/ ব্লাঙ্ক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। কিন্তু এরই মধ্যে পুলিশ এসে তাকে থানায় নিয়ে যায়। সম্প্রতি সিমটেক্সে নিয়োগকৃত অজ্ঞাত এক ব্যক্তি জাহিদ মাহমুদ সাভার থানায় একটি মামলা করেছেন। থানা ম্যানেজ করে তারা সফলভাবে কর্ণেল আনিসকে জেলে পাঠায়। তারা সম্পুর্ন ভিডিও না দিয়ে তাদের নিজেদের সাজানো নাটকের কাট পিস ভিডিও বিভিন্ন মিডয়ায় পাঠিয়ে কর্ণেল আনিসের মান সম্মানেরর ক্ষতি করছে। পুরো এনভিআর/সিসিটিভি রেকর্ড নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন কর্ণেল আনিস।
RJSC অনুযায়ী এহসান আলী খান এবং হাফিজা খানম এখনো সিমটেক্সের পরিচালক কিন্তু দুদক ও কোটের নির্দেশে তাদের সকল এ্যকাউন্ট ফ্রিজ ও তাদের সিআইবি ক্লিয়ার নয়। এমতাবস্থায় কি ভাবে তারা তাদের শেয়ার বিক্রি করলো এটা তদন্তের অবকাশ রাখে। এছাড়া পরিচালক হিসেবে তাদের পদত্যাগ ও নতুন পরিচালকের নিয়োগ সংক্রান্ত কোন অনুমতি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন থেকে তারা তা গ্রহণ করে নি। একই ভাবে কর্ণেল আনিসের ক্ষেত্রেও কোন অনুমতি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন থেকে গ্রহণ করেনি।
কর্ণেল আনিস ভোরের পাতাকে বলেন, এই যে সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি এটাকে বাঁচাতে তিনি সকলের আশ্রয় কামনা করেছেন। তিনি সকলের কাছে আরো অনুরোধ করেছেন এই যে বিষয়টি RJSC & Court থেকে সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সকল প্রকার নথিভুক্তির কাজ বন্ধ রাখতে এবং তাকে তার পদে বহাল রাখতে সাহায্য চেয়ে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করছেন।