পুলিশ সুপার পদে কারা পদোন্নতি পাচ্ছেন? সম্ভাব্য পদোন্নতির তালিকায় কারা আছেন? পদোন্নতির জন্য পুলিশ সদর দপ্তর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিসিএস ২৭ ও ২৮ ব্যাচের যেসব অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নাম পাঠিয়েছে সেই তালিকায় কারা আছেন?
এ নিয়ে পুলিশের ভেতরে-বাইরে নানা কৌতূহল আছে। পাশাপাশি জল্পনারও শেষ নেই। আছে নানা প্রশ্নও।
পুলিশ মহলে প্রশ্ন হলো, বিসিএস ২৭ ব্যাচের যেসব কর্মকর্তা এর আগে পদোন্নতি পাননি তাঁরা কজন এবার বিবেচিত হবেন? এ নিয়ে দুই রকম আলোচনা সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। প্রথমত, যারা আগে বাদ পড়েছেন তারা কি সুনির্দিষ্ট কোনো কারণে বিবেচিত হননি? একাধিক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে তাদের বিষয়ে নেতিবাচক কোনো তথ্য ছিল কিনা? দ্বিতীয়ত, সরকারের রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গে যাদের মিল নেই তারা কি পুলিশ সুপারের মতো স্পর্শকাতর পদে পদোন্নতি পাবেন কিনা?
এ ব্যাপারে পুলিশের সাবেক এআইজি মালিক খসরু পিপিএম বলেন, পুলিশ সুপারের মতো একটি স্পর্শকাতর পদে পদোন্নতির জন্য শুধুমাত্র সিনিয়রিটিই একমাত্র মাপকাঠি হতে পারে না।
এক্ষেত্রে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সততা, দক্ষতা, স্বতন্ত্র ইউনিট পরিচালনায় নেতৃত্বদানের ক্ষমতার বিচার করা জরুরি। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার ব্যাপারে গোয়েন্দা প্রতিবেদনকেও বিবেচনায় নিতে হয়। কারণ ওই কর্মকর্তার অতীত রাজনৈতিক পরিচয় দর্শনের সঙ্গে কতটা খাপ খায় সেটিও গ্রাহ্য করার দরকার হয়ে পড়ে।
এসব কারণেই এখন প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে পদোন্নতির জন্য বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটির বৈঠকে (ডিপিসি) কাদের ব্যাপারে সুপারিশ করা হবে? এর আগে যারা বাদ পড়েছিলেন তাদের ব্যাপারে এবার গোয়েন্দা প্রতিবেদন কী বলছে? পুলিশের সূত্রগুলো বলছে, অর্ধশতাধিক পুলিশ সুপার পদে এর আগে বাদ পড়া ২৭ ব্যাচের কাউকে কাউকে পদোন্নতির জন্য বিবেচনায় নেওয়া হবে। আর প্রথমবারের জন্য এসপি পদে পদোন্নতি পাবেন ২৮ ব্যাচের কিছু কর্মকর্তা। তবে আগামীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বর্তমান সরকারবিরোধী আন্দোলন মোকাবিলায় পুলিশের ভূমিকা অতি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় এবারের পুলিশ সুপার পদোন্নতির বিষয়টি নতুন মাত্রা পাবে বলে মনে করেন পুলিশ সদর দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তরের একাধিক সূত্র জানায়, এর আগে পুলিশে পদোন্নতি ও পদায়ন নিয়ে কিছু নেতিবাচক আলোচনা ছিল। বিশেষত, সরকারের রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গে মিল নেই এমন কেউ পদোন্নতি, গুরুত্বপূর্ণ পদায়ন পান কিনা এ নিয়ে একাধিক চোখ থাকবে ডিপিসি সদস্যদের দিকেও।
তাই তদবির, ব্যক্তিগত যোগাযোগের চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিষয়ে গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদনকেই হয়তো বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে।
সব মিলিয়ে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি কমিটির বৈঠকের দিকে নজর সরকারের নীতিনির্ধারকদেরও। ডিপিসি কোন কোন বিবেচনাকে প্রাধান্য দিয়ে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত দেন সেই অপেক্ষা পুলিশেও। দেখা যাক শেষমেশ কী হয়!