তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের তদন্তকাজ শেষ করা হয়েছে। রাজধানীর মতিঝিলে যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেগুলো মূলত আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে। দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মুসাকে ওমান থেকে ফিরিয়ে আনা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার কাছ থেকেই হত্যাকাণ্ডের অনেক বিষয় সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান, ফ্রিডম মানিক, সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল শাহরিয়ারসহ ২০ থেকে ২২ জনের নাম থাকবে চার্জশিটে।
সূত্র বলছে, ২০১৯ সালে ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে গ্রেফতার হন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূইয়া। এর পরপরই মতিঝিল এলাকার নিয়ন্ত্রণ চলে যায় জাহিদুল ইসলাম টিপুর হাতে। শুরুর দিকে টিপুর সঙ্গে বেশ সখ্য ছিল শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ও ফ্রিডম মানিকের। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তাদের মধ্যে দূরত্ব বেড়ে ঘটে সম্পর্কের অবনতি। সম্পর্কের অবনতির জের ধরে টিপুকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী দায়িত্ব দেওয়া হয় সুমন সিকদার ওরফে মুসাকে। যুবলীগ নেতা মিল্কি ও বাবু হত্যা নিয়ে টিপু-বিরোধীদের এই হত্যার পরিকল্পনায় যুক্ত করে মুসা। হত্যার পরিকল্পনায় অংশ নেয় আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল শাহরিয়ার, দামাল, মানিক, ফারুক, পলাশ, সালেহসহ ১২ জন।
হত্যাকাণ্ডের জন্য অস্ত্র সরবরাহ এবং গুলি সরবরাহের দায়িত্ব পায় সাগর ইশতিয়াক জিতু রাকিব বাবু। মূল কিলিং মিশনে দায়িত্ব দেওয়া হয় শুটার মাসুম মোহাম্মদ আকাশকে। আর হত্যায় ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর জন্য মোটরসাইকেলের সহায়তা করে মোল্লা শামীম। হত্যাকাণ্ড ঘটানোর সময় সহায়তায় ছিল মারুফ, একরাম, সৈকত ও সেকান্দার।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, হত্যাকাণ্ডের পর একটি মোবাইল নম্বরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর সূত্র ধরে তদন্তে উঠে আসে শুটার মাসুমের নাম। গ্রেফতার করা হয় মাসুম ওরফে আকাশকে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে মুসার নাম। ওমান থেকে গ্রেফতারের পর নিয়ে আসা হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় বিদেশে অবস্থানরত শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ও ফ্রিডম মানিকের।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে। মামলাটির সব বিষয় মাথায় রেখেই তদন্ত করা হয়েছে। তদন্তে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।