প্রকাশ: বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১১:৩১ এএম আপডেট: ১৪.০৯.২০২২ ১১:৩১ এএম | অনলাইন সংস্করণ
নতুন করে যুদ্ধে জড়িয়েছে দুই প্রতিবেশী দেশ আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান। গত সোমবার রাতভর হওয়া এই যুদ্ধে উভয়পক্ষের প্রায় ১০০ সেনা নিহত হয়েছেন।
আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান জানান, রাতভর লড়াইয়ে দেশটির ৪৯ সেনা নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, নিজেদের ৫০ সেনা নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রতিবেশী দুটি দেশ এখন পর্যন্ত তিনবার পুরোদমে যুদ্ধে জড়িয়েছে। পাশাপাশি তিন দশক ধরে নিয়মিত বিরতিতে ছোটখাটো সংঘর্ষে জড়িয়েছেন দুই দেশের সেনারা। সর্বশেষ এ সংঘাত বন্ধে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় গতকাল মঙ্গলবার একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে।
আর্মেনিয়া প্রথম জানিয়েছিল, লড়াইয়ের তীব্রতা কমেছে, তবে পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। অন্যদিকে, প্রতিবেশী দেশটির ‘উসকানির’ পর নিজেদের উদ্দেশ্য সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আজারবাইজান।
দুটি দেশের এ সংঘাতের নেপথ্যে রয়েছে নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল। আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সীমানা অনুযায়ী অঞ্চলটি নিঃসন্দেহে আজারবাইজানের অংশ। তবে সেখানকার বাসিন্দারা জাতিগতভাবে আর্মেনীয়।
এই সাংস্কৃতিক বিভাজন রাজনীতি ছাড়িয়ে ধর্মীয় বিষয়েও গড়িয়েছে। কারণ, আর্মেনিয়া খ্রিষ্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। অন্যদিকে, আজারবাইজানের জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই মুসলিম। ১৯৯১ সালের শেষের দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তি হয়। এর আগে দুটি দেশই সোভিয়েত ইউনিয়নের সদস্য ছিল।
নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে গত শতকের আশি ও নব্বইয়ের দশকে দুবার পুরোদমে যুদ্ধে জড়ায় আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। এতে ওই অঞ্চলের পাশাপাশি নিজেদের বিশাল ভূখণ্ড হারায় আজারবাইজান। দেশটির সাত লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।
এরপর সীমান্ত সংঘাতের জের ধরে ২০২০ সালে আবার পুরোদমে যুদ্ধে জড়ায় দেশ দুটি। ছয় সপ্তাহের লড়াইয়ে নিহত হয় প্রায় ৬ হাজার ৫০০ মানুষ। পরে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি হয়।
এ লড়াইয়ে নিজ ভূখণ্ড উদ্ধার করে আজারবাইজান। তবে চুক্তিতে নাগোরনো-কারাবাখের ‘স্ট্যাটাস’ অনিষ্পন্ন ছিল। আলোচনার মাধ্যমে সেটি নির্ধারণ করার কথা বলা হয় চুক্তিতে। মস্কো সেখানে দুই হাজার শান্তিরক্ষী মোতায়েন করে।
সর্বশেষ সংঘাতের জের ধরে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে নতুন করে পুরোদমে যুদ্ধ শুরুর শঙ্কা সৃষ্টি করেছে। তবে দুপক্ষকেই সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়াসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।