শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা, মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ: ড. মো. হারুন-উর-রশিদ আসকারী
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১০:৩৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
শেখ রেহানা; যিনি ‘ছোট আপা’ বলে দলের নেতাকর্মীদের কাছে পরিচিত। বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে পরিবারের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি সেই পরিবারের একজন শেখ রেহানা। বাংলা ও বাঙালির প্রয়োজনে তিনি নির্মোহ একজন মানুষ। শেখ রেহানার মহানুভবতার তুলনা নেই। মা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পর্দার অন্তরালে থেকে বঙ্গবন্ধুকে সাহস ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন। যার অনুপ্রেরণায় শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু হতে পেরেছিলেন। আর এখন পর্দার অন্তরালে বড় বোন শেখ হাসিনাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাচ্ছেন তিনি
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৮২৬তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী, ব্যারিস্টার, লিংকনস ইন লন্ডন (পাবলিক একসেস) ১২ ওল্ড স্কয়ার চেম্বার, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা চৌধুরী হাফিজুর রহমান, কবি স্নিগ্ধা বাউল। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
অধ্যাপক ড. মো. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানার ৬৮তম জন্মবার্ষিকীতে ভোরের পাতা যে সংলাপের আয়োজন করেছে তার জন্য আমি তাদেরকে অভিনন্দন জানাই। শেখ রেহানা; যিনি ‘ছোট আপা’ বলে দলের নেতাকর্মীদের কাছে পরিচিত। বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে পরিবারের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি সেই পরিবারের একজন শেখ রেহানা। বাংলা ও বাঙালির প্রয়োজনে তিনি নির্মোহ একজন মানুষ। আমার সৌভাগ্য যে শেখ রেহানার যে একটি গ্রন্থ রয়েছে তার সাথে আমার সম্পৃক্ততা রয়েছে। তার গ্রন্থ থেকে আমরা তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমান সম্বন্ধে অনেক কিছুই জানতে পেরেছি। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পর্দার অন্তরালে থেকে বঙ্গবন্ধুকে দিয়েছিলেন সাহস ও অনুপ্রেরণা। অন্যদিকে বড় বোন শেখ হাসিনার পাশে শেখ রেহানার ভূমিকাও সমার্থক। বরং আরও সুস্পষ্ট। বোন শেখ হাসিনা আজ বিশ্ব নেতৃত্বের অংশীদার, তার পেছনে অন্যতম উৎসাহ শেখ রেহানার। ১৫ আগস্টের নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড বঙ্গবন্ধুর পরিবারের জন্যই নয়, গোটা জাতির জীবনেও এক কলঙ্কজনক ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। শেখ রেহানা সেই সময় বড় বোনের সঙ্গে ইউরোপে থাকার কারণে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। ১৫ আগস্টের খবরে শুধু সর্বহারা মানুষের মতো তারা ভেঙে পড়েননি। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত, পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াতে হয়েছিল। সেটি ছিল এক বেদনা ও মর্মস্পর্শী জীবন সংগ্রামের অধ্যায়। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারি করে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশের শাসনভার তুলে নিলে বিপর্যয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের পর তার মুক্তির প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আওয়ামী লীগ সম্পর্কে যথাযথ ধারণা দিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। আশির দশক থেকে আজ পর্যন্ত গত ৪০ বছরের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহে, প্রতিটি নির্বাচনে বড়বোনের পাশে থেকে তাকে শক্তি ও সাহস জুগিয়েছেন, অনুপ্রাণিত করেছেন। শেখ রেহানা লন্ডনে অবস্থানকালে সন্তানদের মানুষ করার পাশাপাশি সেখানে বসবাসকারী বাঙালি কমিনিউটির সঙ্গে নানাভাবে যুক্ত থেকে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারের দাবিতে যুক্ত থেকেছেন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তিনি এই দাবি নিয়ে সরকার ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা সরকার গঠন করার পর তিনি বোনের পাশে বেশ কিছুদিন অবস্থান করেছিলেন এবং তাকে নীরবে নিভৃতে থেকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছিলেন। তিনি ঢাকা এবং লন্ডনে তার সন্তানদের পাশে থাকার পাশাপাশি সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে যুক্ত রাখতেন। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে তিনি বোনের পাশে ছায়ার মতো অবস্থান করার চেষ্টা করছেন। ছোট আপার জন্মদিনে আমার পক্ষ থেকে তাকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানাচ্ছি এবং আমি মনে করি ছোট আপা এবং বড় আপা যেভাবে দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন এবং আস্থা ও ভরসার জায়গায় নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তাদের কাছে এই দেশ এবং জাতির আরও কিছু পাবার রয়েছে।