রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাউয়াজানি গ্রাম এবং ছোটভাকলা ইউনিয়নের ছোট জলো নামক স্হানে মরা পদ্মা নদীর ক্যানাল পারাপারের জন্য দীর্ঘ দিন এলাকাবাসীর যাতায়াতের খেয়া নৌকাই ছিল একমাত্র ভরসা। এতে দুই ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ ও চরাঞ্চলের কৃষিপন্য পরিবহনে সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হতো।
শুকনো মৌসুমে নদী শুকিয়ে গেলে অল্প পানিতে যখন নৌকা চলতো না, তখন পানিতে ভিজেই পারাপার হতে হতো। সেক্ষেত্রে মেয়ে মানুষ, শিশু ও স্কুল -কলেজের শিক্ষার্থীদের অনেক কষ্টের শিকার হতে হতো। এখন তাদের সেই কষ্ট নেই। একটা বাঁশের তৈরী সেতু কিছুটা হলেও দুঃখ - কষ্ট অনেকটাই দূর করে দিয়েছে।
চরঞ্চলবাসীর এ দুঃখ লাঘবে সম্প্রতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামিলীগের সভাপতি মো. মোস্তফা মুন্সি তার নিজস্ব অর্থায়নে সেখানে ৫ ফুট প্রস্থ এবং ১৮০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি দৃষ্টিনন্দন বাঁশের সেতু নির্মান করে দেন। এলাকাবাসী দাবী স্থায়ী সেতু নির্মাণের।
দেবগ্রাম ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. মালেক মন্ডল বলেন, এখানে যারা আছে সেই বৃটিশ আমল থেকেই অনেক কষ্টে বসবাস করছে। কাউয়ালজানি গ্রামে প্রায় ১০ হাজার মানুষ এই সেতুটি ব্যাবহার করে। তাদের কষ্ট কিছুটা হলেও দুর্ভোগ কমেছে। আমরা এখানে একটা স্থায়ী পাঁকা সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
অন্জনা আক্তার নামে চরের এক গৃহবধূ বলেন, সারাটা জীবন খেয়া নৌকায় পারাপার হয়েছি। সীমাহীন কষ্ট সহ্য করেছি।এতদিন আমাদের অঞ্চলটি ছিল একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো। আগে রাতে জরুরি রোগি নিয়ে হাসাপাতালের যেতে অনেক কষ্ট হতো। এখন বাঁশের সেতু নির্মাণ করে দেওয়ায় দুর্ভোগ কিছুটা কমেছে। সেতু হওয়ায় আমরা অনেক খুশি।
দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা চেয়ারম্যান বাঁশের সেতুটি নির্মাণ করে দিয়েছে । তবে এখানেই শেষ নয়, আগামীতে এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করার জন্য আমি চেষ্টা চালিয়ে যাব।
গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা মুন্সি বলেন, জনগণের কষ্টের কথা বিবেচনা করে আপাতত একটা বাঁশের সেতু নির্মান করে দিয়েছি। এলাকাটি পদ্মা নদীর ভাঙ্গন কবলিত। ভবিষ্যতে ওখানে নদী শাসন করার সরকারি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা রয়েছে।সেটা হওয়ার পর সেখানে একটি বড় পাকা স্থায়ী সেতুর ব্যাবস্থা করা হবে।