প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৫:৩৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
নাইক্ষ্যংছড়ির পাশ্ববর্তী রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার গভর্নিং বডির একতরফা ভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় অভিভাবক মহলে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ওই এলাকাবাসীর একাধিক সূত্রে জানান সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় রামু উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) নিরুপম মজুমদার ও পুলিশের উপস্থিতিতে বরখাস্ত কৃত অধ্যক্ষ আব্দুল হামিদ ও মাষ্টার রেজাউল করিম মাদ্রাসার তালা ভেঙ্গে মাদ্রাসা ক্যাম্পসে প্রবেশ করে প্রতিদন্দ্বীতা বিহীন একটি লোকদেখানো সাজানো নির্বাচন করান। যদিওবা তফসিল অনুযায়ী ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ইং তারিখ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন ছিল।
এদিনের বিষয়ে এলাকাবাসী ও ভোটাররা জানান, একাধিক ভোটার তালিকা হওয়ার কারণে নির্বাচন প্রায় অনিশ্চিত ছিল। এখানে একটি ভোটার তালিকা তৈরী করেন বরখাস্তকৃত ও ১২ বৎসর অনুপস্থিত সাবেক অধ্যক্ষ আবদুল হামিদ, অন্যদিকে আরেকটি ভোটার তালিকা তৈরী করেন বর্তমান (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম। দুইটি ভোটার তালিকার কারণে সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একারণে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম ১২ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করেন। অন্যদিকে ১২ সেপ্টেম্বর ছিল নির্বাচনের দিন। পূর্ব ঘোষিত তারিখ মতে পুলিশ ফোর্সসহ প্রিজাইডিং অফিসার সকাল ৯ ঘটিকায় মাদ্রাসায় আসেন, কিন্তু মাদ্রাসার প্রধানসহ দুইটি গেইট বন্ধ থাকায় তারা মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারেনি। এরপর এসিল্যান্ড (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) নিরুপম মজুমদার আসেন। তিনি গেইটের তালা ভাঙ্গতে পারবেনা বলে জানান। কিন্তু বরখাস্তকৃত শিক্ষক হামিদের পরামর্শে মাষ্টার রেজাউল করিমের নেতৃত্বে এবং এসিল্যান্ডের উপস্থিতিতে ১০/১২ জন লোক লোহার রড় ও হাতুড়ি দিয়ে মাদ্রাসার ২য় গেইটের তালা ভেঙ্গে ক্যাম্পাসে ঢুকে একটি ক্লাস রুমের তালা ভেঙ্গে খুলে দিলে ১ ঘন্টা পর এসিল্যান্ড, প্রিজাইডিং অফিসার জাহিদুল ইসলাম ও পুলিশ ঢুকে উক্ত রুমে নির্বাচন শুরু করে দেন। ভোটার তালিকায় প্রায় ৭০০ জনের মত ভোটার দেখা গেলেও ভোট কাস্ট হয় মত্র ১শত ৭ ভোট।
প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্বে থাকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নুর মোহাম্মদ ও জাহিদুল ইসলাম জানান, নির্বাচন মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়। মাদ্রাসার গেইটের তালা কে ভাঙ্গছে জানতে চাইলে তিনি বলেন মাষ্টার রেজাউল করিম ও আবদুল হামিদ। এসিল্যান্ডের সাথে কথা বলা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য আমি পুলিশ ফোর্সসহ সার্বক্ষণিক উপস্থিত ছিলাম। তিনি তালা ভাঙ্গার নির্দেশ দেননি। এ বিষয়ে ছাত্র অভিভাবক ছুরত আলম,মোঃ নবী আলম জানান প্রশাসন আসলো এখানে যারা ১২ বছর ধরে এ মাদ্রাসায় ছাত্র-ছাত্রীদের পড়া লেখা করায় তারা নেই। আর যারা ১২ বছর বাহিরের থেকে পড়া লেখার বিগ্ন ঘটায় তাদের কথা মতে প্রশাসন একতরফা ভাবে নির্বাচন করায় আমরা এ নির্বাচন বয়কট করেছি।
শিক্ষক আলাউদ্দিন জানান, এ মাদ্রাসায় ৭ শত ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবক আছে সেখানে সামান্য ভোটারের উপস্থিতি হয়েছে। ৬ শত অভিভাবক এ একতরফা নির্বাচন বয়কট করেছে। মাত্র ১০০ শত অভিভাবক ভোট দিয়েছে এর মধ্যে অনেকেই মাদ্রাসার প্রকৃত অভিভাবক নয়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল হামিদ তিনি নিজেকে মাদ্রাসার বৈধ অধ্যক্ষ দাবি করে বলেন, আদালতের আদেশ মতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এবিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম জানান, মাদ্রাসার দীর্ঘদিনের সমস্যা নিরসন ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হওয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। এর পরেও কেন এবং কি কারণে উপজেলা ভূমি অফিসার, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, আমাদের ছাড়া একতরফা ভাবে নির্বাচন করেছেন আমি অবগত নয়।
মাদ্রাসাটিতে প্রশ্নবৃদ্ধ এ নির্বাচন নিয়ে এলাকার সচেতন মহল ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।