ভারতের দক্ষিণ মধ্যপ্রদেশ এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আজ (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে ভারতের দক্ষিণ মধ্যপ্রদেশ ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। এটি স্থলভাগের উপর দিয়ে আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে।
মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থা থাকায় রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে অস্থায়ীভাবে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। পরবর্তী তিন দিনের আবহাওয়ার অবস্থায় বলা হয়েছে, এ সময়ের শেষের দিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানায়- খুলনা, বরিশাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া ও বিজলি চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরণের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালার সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। সমুদ্র বন্দরসমূহ, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোতে আজও ৩ (তিন) নম্বর (পুনঃ) তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পূর্ণিমা ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১ থেকে ২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসাথে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়, মৌসুমী বায়ুর অক্ষ রাজস্থান,স্থল নিম্নচাপের কেন্দ্রস্থল, উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
আজ সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া ও বিজলি চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরণের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।
আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় পটুয়াখালীতে সর্বোচ্চ ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও বরিশালে ৬৭, খেপুপাড়ায় ৬০, কক্সবাজার ৫৪, গোপালগঞ্জ ও খুলনায় ৪৮, মাদারীপরে ৪১, ভোলা ও নেত্রকোনায় ৪০ এবং টেকনাফে ৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ সময় ঢাকায় ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয় বলে আবহাওয়া অফিস জানায়।
এছাড়া সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
সোমবার শ্রীমঙ্গলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং কক্সবাজারে সর্বনিম্ন ২৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকায় আজ দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘন্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে, যা অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া আকারে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে বাড়তে পারে। সকালে ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে এবং আগামিকাল সূর্যোদয় ভোর ৫টা ৪৪ মিনিটে। খবর: বাসস