# বান্দরবানের সীমান্ত এলাকায় প্রতিদিন গুলির শব্দ। # দেশে এসে পড়ছে মর্টারশেল, গোলা ও একে-৪৭ এর গুলি। # মিয়ানমার ফের গোলা ফেললে আন্তর্জাতিক ফোরামে জানাবো: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
প্রকাশ: রোববার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ২:৫৫ এএম আপডেট: ১১.০৯.২০২২ ২:৫৯ এএম | অনলাইন সংস্করণ
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রায় মাসখানেক ধরে চলছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষ ও গোলাগুলি। এতে প্রায়ই বাংলাদেশের সীমান্তে এসে পড়ছে মিয়ানমারের মর্টারশেল ও গোলা। সবশেষ গতকাল তুমব্রু সীমান্তে পাওয়া গেছে দেশটির ছোড়া একে-৪৭ এর গুলি। এমন পরিস্থিাতিতে মৃত্যু আতঙ্কে দিন পার করছেন সীমান্তে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা।
জানা যায়, গত বুধবার এবং বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকার পর শুক্রবার বিকেল থেকে আবারও গোলাগুলি ও সংঘর্ষ শুরু হয়। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন এপারের বাসিন্দারা। গোলাগুলির কারণে শুক্রবার একটি গুলি এসে পড়েছে বাংলাদেশের তুমব্রু সীমান্তের এপারে।
স্থাানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় মাসখানেক ধরে ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাইশ ফাঁড়ি বিওপির সীমান্ত পিলার ৩৬-এর বিপরীতে আনুমানিক তিন কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে মিয়ানমারের মেধাইক ক্যাম্প এলাকায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষ ও গোলাগুলি চলছে। সংঘর্ষ ও গোলাগুলির কারণে প্রতিদিন আনুমানিক ৪০০-৫০০ রাউন্ড গুলির শব্দ ও ২০-২৫টি মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এরই মধ্যে প্রথমবার মর্টার শেল, দ্বিতীয়বার গোলা ও তৃতীয়বার গুলি এসে সীমান্তের এপারে পড়েছে। সবশেষ গতকাল এসে পড়েছে একে-৪৭ এর গোলা। এতে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও স্থাানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শূন্যরেখার আশ্রয়শিবির ব্যবস্থাাপনা কমিটির চেয়ারম্যান দিল মোহাম্মদ বলেন, গত শুক্রবার বিকাল থেকে আবারও সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গোলাগুলির শব্দ শুনেছি আমরা। এ নিয়ে আতঙ্কের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছি।
এদিকে সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে থাকা একাধিক সূত্র ও রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, গত ৩১ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী টানা ছয় দিন স্থাল ও আকাশপথে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়েছিল। আরাকান আর্মির লক্ষ্যবস্তুতে ছোড়া হয়েছিল শত শত আর্টিলারি, মর্টার শেল ও বোমা। বাংলাদেশের ভূখ-েও দুবার মর্টার শেল এসে পড়ার ঘটনা ঘটেছিল। এরপর দুই দিন বিরতি দিয়ে আবার দুপক্ষের গোলাগুলি শুরু হয়।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার গোলাগুলি বন্ধ থাকার পর শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে আবারও গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। শনিবার সারাদিন প্রচুর গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। এতে আতঙ্কে আছেন সীমান্তের এপারের বাসিন্দা ও শূন্যরেখায় বসবাসকারী রোহিঙ্গারা।’
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা ফেরদৌস বলেন, ‘দুদিন বন্ধ থাকার পর সীমান্তের ওপারে আবারও দু’দিন ধরে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি চলছে। আমাদের সীমান্তে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেছি। সেইসঙ্গে প্রতি মুহূর্তের খবর রাখছি। স্থাানীয়দের আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য বলেছি।’
বান্দরবানের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম তারিক বলেন, ‘আমাদের সীমান্তে গোয়েন্দা নজরদারি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাা জোরদার করা হয়েছে। এপারের বাসিন্দাদের আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’