প্রকাশ: বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৮:৪৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা দৌলতদিয়া পদ্মা নদীতে মাছ না থাকায় জেলেরা অলস সময় পার করছে এবং জাল নদীর পাড়ে জমা করে রেখে দিয়েছে।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন ঘুরে জেলেদের সাথে আলাপ করে জানাযায়, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীতে তীব্র স্রোত দেখা দিয়েছে। যার কারনে নদীতে জাল ফেললে জাল জমাট হয়ে যায়, তার পর নদীতে একে বারেই মাছ নেই, শুধু কষ্ট করতে হয়। এভাবে আর কতদিন চলবে, ছেলে মেয়ে নিয়ে সংসার চালাতে পারছি না। অনেক কস্টে আছি আমরা। আমাদের মধ্যে অনেক জেলারা মানুষের বাড়ীতে জন( কামলা) খাটছে। আমরা তো দুই ধরনের জাল নদীতে বেয়ে বেড়াই একটি হলো ফ্যাশন জাল আর একটি হলো গুটিকোনা। এসব জালের মাছ নদীতে একেবারেই নেই। আজ ১০ থেকে ১৫ দিন যাবৎ বেকার হয়ে বসে আছি ।
মানিকগঞ্জ জেলার বাল্লা গ্রামের জেলে প্রফুল্ল হালদার বলেন, প্রায় এক মাসের মত হলো মাছ ধরতে নদীতে যাচ্ছি না কারন আমরা যে মাছ ধরি সে সকল মাছ নদীতে নেই। দেখেন আমাদের জাল গুলো নদীর পাড়ে ফেলে রেখেছি। আমাদের নৌকার ভাগিরা কেউ আর নৌকায় আসছে না। তারা এলাকাতে কামলা ( জন) দিচ্ছে সংসার চালাচ্ছে। এই মাসটি আমাদের এভাবেই যাবে। আগামী মাস থেকে যদি মাছ নদীতে আসে তখন আমরা আবার নদীতে মাছ ধরতে যাব।
আরেক জেলে ছালাম ফকির বলেন, নদীতে জাল বাইতে বাইতে বুড়ো হয়ে গেছি কিন্তু আজও একটি জেলে কার্ড পেলাম না। সারা বছর নদীতে জাল দিয়ে মাস ধরি কম বেশি নদীতে মাছ পাই। নদীতে পানি বৃদ্ধি হওয়ায় কারণে আজ এক মাস ধরে নদীতে তেমন কোন বড় মাছ পাই না।
রাজবাড়ী মৎস্যজীবি সমিতির সাধারন সম্পাদক মো.ওয়াসিল শেখ বলেন, পদ্মা নদীতে মাছ ধরার জন্য ৪২টি বড় নৌকা রয়েছে। প্রায় সব গুলো নৌকা নদীর পাড়ে বাধা এবং জাল নদীর পাড়ে পালা দিয়ে রাখা হয়েছে। আমাদের মৎস্যজীবি সংগঠনে সদস্য সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৭শত জন। তাদের মধ্যে সবার জেলে কার্ড নেই। কিছু জেলেদের কার্ড আছে। নদীতে মাছ খুব কম ধরা পড়ছে। জেলেরা এক মাস যাবৎ অলস সময় পার করছে। কিছু জেলেরা বাড়ীতে গিয়ে অন্য কোন কাজ করছে। আবার যখন নদীতে মাছ আসবে তখন সবাই নৌকায় চলে আসবে।
উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা শাহারিয়ার জামান (সাবু) বলেন, যে সকল জেলেরা নদীতে ফ্যাশন ও গুটিকোনা জাল বেয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তারা জেলে কার্ডের আওতাধীন না। শুধু মাত্র নদীতে সারা বছর যে সকল জেলেরা ইলিশ মাছ ধরেন তারাই জেলে কার্ডের আওতাধীন। পুরাতন জেলেদের কার্ড করা আছে ১৬ শত ২৭ জন। এবার আবার নতুন করে ২২শত জন জেলে ফরম পূরণ করে জমা দিয়েছে। তাদের মধ্যে থেকে যাচাই বাছাই করে কার্ড দেওয়া হবে।