বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের মোল্লা পাড়ায় গরীবদেরর জন্য নির্মিত আবাসনের পাকা ভবন পুকুরের পানিতে ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভবনের ধস ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন নজর নেই বলে অভিযোগ আবাসনের বাসিন্দাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৯ সালে আমতলীর হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের মোল্লা পাড়ায় ৭ একর ৭০ শতাংশ জমিতে ১৯০টি ভূমিহীন পরিবারের জন্য জাপান সরকারের আর্থিক সহায়তায় ৩৮টি পাকা ভবন নির্মান করে বাংলাদেশ সরকার। এজন্য এ আবাসনের পরিচিতি পায় জাপানী ব্রাক হাউস নামে। ভবন নির্মানের সময় ভিটি ভরাটের জন্য মাঝখানে বিশাল একটি পুকুর খনন করা হয়। যার চারদিক ঘিরে ভবনগুলো নির্মান করা হয়।
প্রতিনিয়ত পুকুরের পাড়ের মাটি ভেঙ্গে এখন ভবন ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পুকুরের পূর্ব পারে ৬টি ভবন রয়েছে। ভবনগুলো ভাঙ্গনের ঝুকিতে রয়েছে। এরমধ্যে ১৪ নম্বর ভবনটি অধিক ঝুঁকিতে রয়েছে। ভবনটির পশ্চিম পাশের মাটি সরে ধসের আশঙ্কায় ওই ভবনের বাসিন্দারা অন্যত্র চলে গেছে।
ওই ভবনের বাসিন্দা বাবুল মাতুব্বর বলেন, স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে অনেকদিন এখানে ছিলাম। এখন বিল্ডিং ভেঙে পড়তেছে। ভয়ে আমরা এখানে থাকি না।
আবাসনে বসবাসরত রিজিয়া বেগম বলেন, পুকুরের পার খালি ভাঙ্গে আর ভাঙ্গে। এহন ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে মোগো বিল্ডিং ও ধরছে।
রোকেয়া নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, পুকুর পারের মাটি ভেঙে পানিতে পরতেই থেকে। এমনে ভাঙতে থাকলে সব শ্যাষ হইয়া যাইবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পুকুরের পারের মাটি ভাঙনের ফলে আবাসনের ৬টি ভবন ঝুঁকিতে রয়েছে। এরমধ্যে ১৪ নম্বর ভবনের গোরার মাটি
সরে যাওয়ায় যে কোন সময় একাংশ পানিতে ধসে পরতে পারে। পশ্চিম পারের বাধানো পাকা ঘাটের একাংশের মাটি ধসে পরেছে। পানিতে ধসে পরছে বাসিন্দাদের চলাচলের সড়ক। এছাড়া ভবনগুলো নির্মানের পর সংস্কার না করায় দরজা জানালা খসে পরেছে। খসে পরেছে অনেক ভবনের পলেস্তারা। মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনেক ভবনের দরজা জানালা আটকানো যায় না ঠিক মতো। এতে রাতের বেলায় ঝুঁকি নিয়ে ঘুমাতে হয় বসবাসরতদের।
আবাসনের সভাপতি মো. ফারুক মুছুল্লী জানান, আবাসনের কয়েকটি ভবন, চলাচলের সড়ক, পুকুরের পাকা ঘাট পুকুরের পানিতে ধসে পরার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একটি ভবন খুব ঝুঁকিপূর্ন হয়ে পরেছে। যে কোন সময় পানিতে ধসে পরতে পারে।
আবাসনের সাধারণ সম্পাদক বেল্লাল হাওলাদার জানান, নির্মানের পর ভবনগুলো সংস্কার না করায় অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে গেছে। দরজা জানালা খুলে পরে গেছে, ভবনের পলেস্তারার খসে পরেছে। অনেক ভবনের দরজা জানালা আটকানো জায় না। খোলা রেখেই রাতে ঘুমাতে হয়। তাই অনেক পরিবার আবাসনের ঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায় কর্মকর্তা মো. জামাল হুসাইন বলেন, আবাসেনের ভবনগুলো সরেজমিন দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।