প্রকাশ: শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:২৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
কক্ষে ঢুকতেই চোখে পড়ল ইতালীয় জনপ্রিয় কমিক চরিত্র হারলেকুইনের গিটার বাজানোর একটি চিত্র। একটু সামনে এগোতেই দেখা গেল ফরাসি ঔপন্যাসিক জুল ভার্নের ওপর আঁকা একটি ছবি। পাশে চোখ ফেরাতেই দেখা মিলল ভ্রমণের জন্য ব্যবহৃত একটি বেলুনের চিত্র। মূলত জুল ভার্নের লেখা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই এই ভ্রমণ-বেলুনের চিত্রটি আঁকা হয়েছে। ধানমন্ডি গ্যালারি চিত্রকে চলছে শিল্পী তামিম জলিলুরের একক চিত্র প্রদর্শনী ‘ছাপচিত্রের গল্প’। সেখানে গেলেই দেখতে পাবেন এসব ছবি। ১৯ আগস্ট বিকেল পাঁচটায় প্রদর্শনীটি উদ্বোধন করেন শিল্পী রফিকুন নবী।
প্রদর্শনীতে রয়েছে ৭২টি চিত্র। বেশির ভাগ ছবির মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হয়েছে সেরিগ্রাফি, লিথোগ্রাফি, মনোটিক ও অ্যাকুয়াটিন্ট। এ ছাড়া মাধ্যম হিসেবে আরও ব্যবহার হয়েছে লিনোকাট, স্ক্র্যাচ বোর্ড এচিং, প্যাস্টেল, চারকোল, লাল চক ইত্যাদি।
প্রদর্শনী ঘুরে দেখছিলেন ধানমন্ডি থেকে আসা সিদরা করিম। কানাডা থেকে কিছুদিন আগে বাংলাদেশে এসেছেন তিনি। জানালেন, শিল্পীর আঁকার মাধ্যমগুলো ভিন্ন ভিন্ন। এটা ভালো লেগেছে। রঙের কাজও দারুণ।
বর্তমানে ফ্রান্সে থাকেন শিল্পী তামিম জলিলুর। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে প্যারিসে কাজ করেন। দেশে ১০টির মতো একক প্রদর্শনী করেছেন তামিম। দেশের বাইরেও অনেক প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন।
প্রদর্শনী সম্পর্কে শিল্পী তামিম জলিলুর বলেন, ‘ক্রমাগত কাজের মাধ্যমে নিজেকে আবিষ্কার করি। নিজের চিত্রের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ও বন্ধন তৈরি করতে চাই। সর্বশেষ ২০১৮ সালে বাংলাদেশে আমার একটি প্রদর্শনী হয়। এরপর এ বছর করলাম। বিশ্বাস করি, আমার এই প্রদর্শনী থেকে দর্শকেরা ভিন্ন মাত্রার স্বাদ পাবেন।’
ফ্রান্সের মানুষ ও তাদের জীবনযাপন উঠে এসেছে তাঁর চিত্রে। রয়েছে ইউরোপের ঐতিহাসিক বরেণ্য সংগীতজ্ঞদের প্রতিকৃতি এবং তাঁদের ভাবনা। এর সঙ্গে মিলে গেছে বাঙালির দুর্গোৎসব, শরৎ, কাশফুল। বাংলা ও ইউরোপ দুটি অঞ্চলের জীবনধারার মিশেলে প্রদর্শনীটি পেয়েছে ভিন্ন এক বৈচিত্র্য।
শিল্পী রফিকুন নবী বলেন, ‘তামিম বাংলাদেশ থেকে শিখেছেন। প্যারিস থেকেও শিখেছেন। তাঁর কাজে দুটোরই মিশেল আছে। প্রদর্শনীর ছবিগুলো বিষয় হিসেবে ভালো ছিল। আমার ভালো লেগেছে।’ অন্যদের থেকে আলাদা হয়ে একটি নিজস্বতা তৈরি করার চেষ্টা করছেন শিল্পী তামিম, জানালেন শিল্পী আবুল বারক আলভী।
প্রদর্শনী চলবে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রদর্শনীটি বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সূত্র: প্রথম আলো