মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বিএনপির বড় বিশৃঙ্খলার চেষ্টা আ.লীগের সতর্কতায় বিফল: তথ্যমন্ত্রী   সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিতে কাজ করছে সরকার: কাদের   নাটোরে ট্রেনে কাটা পড়ে ৩ জনের মৃত্যু   ‘কিছুই করি নাই শ্রেণিটা’ চোখ থাকতেও দেখে না: প্রধানমন্ত্রী   রাজকে আমার জীবন থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম: পরীমনি   সৌদি আরবের ক্লাবে যোগ দিলেন রোনালদো   বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
নামছে চালের চড়া বাজার
ইউসুফ আলী বাচ্চু
প্রকাশ: শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৩:০৮ এএম | অনলাইন সংস্করণ

বাজারজুড়ে অভিযান ও আমদানি শুল্ক কমানোর পর চালের দাম কিছুটা নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে; চার দিনের ব্যবধানে পাইকারিতে কমেছে কেজিপ্রতি দুই টাকা। 

শুক্রবার রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, চার দিনের ব্যবধানে সব পাইকারি বাজারেই চালের দাম কেজিতে সর্বোচ্চ দুই টাকা করে কমেছে। মাঝারি পর্যায়ের খুচরা দোকানে দাম কমলেও প্রান্তিক মুদি দোকানে এখনও চালের দাম কমার প্রভাব পড়েনি। সেপ্টেম্বরের প্রথম দিন থেকে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় (ওএমএস) সারাদেশে খোলাবাজারে ৩০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু হওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে মোটা চালের বাজারে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চালের কেজিতে দাম কমেছে ছয় টাকা পর্যন্ত। 

গত সপ্তাহে ৫৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া মোটা চাল (স্বর্ণা, চায়না ও ইরি) এখন বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা কেজি দরে। একইভাবে মাঝারি ধরনের অর্থাৎ লতা ও পাইজাম চালের দাম কমেছে কেজিতে ৪ টাকা। তবে গত সপ্তাহে যে মিনিকেট ও নাজির চাল ৭৫ টাকা কেজি দরে পাওয়া যেত, সেই একই চাল এই সপ্তাহে অর্থাৎ গতকাল বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। 

সরকারের বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে চিকন বা সরু চালের দাম বেড়েছে কেজিতে পাঁচ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চিকন বা সরু চালের দাম বাড়লেও কমেছে মোটা চাল ও মাঝারি ধরনের চালের দাম। গত সোমবার চালের আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১৫ দশমিক ২৫ শতাংশ করা হয়। এর আগে জুনের শেষ দিকে মোট করভার ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছিল। 

মিরপুর পীরেরবাগে চাল বিক্রেতা ফেরদাউস হাসান জানান, ব্যাপক অভিযান শুরুর পর বিআর আটাশ চালের দাম প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) সর্বোচ্চ ১০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। মোটা চালও বস্তায় ৫০ টাকা করে কমেছে। তবে সরু চাল ওইভাবে কমেনি। এখন গুটি স্বর্ণা চাল প্রতিবস্তা ২২৫০ টাকা আর পাইজাম চালের দাম বস্তা ২৬৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, বিআর আটাশ চাল এখন ২৬২০ টাকায় নেমেছে। গত সপ্তাহে এটা ২৬৮০ থেকে ২৭০০ টাকা ছিল। 

তিনি বলেন, “মিল থেকে দাম কমিয়েছে কি না বলবে পারব না। আমি যতদূর জানি, কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও মিরপুরসহ চালের বড় বড় আড়তগুলোতে ব্যবসায়ীরা দাম কমিয়ে চাল ছেড়ে দিচ্ছেন। সবার মধ্যে একটা ভয় আছে, সে কারণে প্রতিটি দোকানদার মাল ছেড়ে দিচ্ছে। আমদানি চালের শুল্ক কমানোর কারণে তারা তাড়াতাড়ি চাল ছেড়ে দিচ্ছে। ভারতীয় চাল ঢুকে পড়লে প্রতিবস্তা ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কমে যাবে।” 

মিরপুর শাহ আলী মার্কেটের চাল বিক্রেতা মহিউদ্দিন হারুন জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় কিছু চালে বস্তায় ১০০ টাকা, কিছু চালে ৫০ টাকা করে কমেছে। তবে পোলাও চাল বা সুগন্ধি চালের দান কমেনি। ‘গতরাতে চাপাই থেকে গাড়ি এসেছে। মিনিকেটের বস্তায় ৫০ টাকা করে কম ধরেছে। আমরাও এখন আগে কেনা চালগুলো ছাড় দিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছি- যোগ করেন তিনি। চালের দাম কমে যাওয়ার আরেকটি কারণ হিসেবে বেচাকেনা কমে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে হারুন। হারুন বলেন, ‘এখন কাস্টমার খুবকম, বেচাকেনা খুবকম। আবার চতুর্দিক থেকে সরকার চাপ দিচ্ছে। সেকারণে বাজারটা কমে আসছে।' 

গোপীবাগ এলাকার চাল ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন জানান, তারা গত সপ্তাহে মাঝারি সাইজের যে চাল ৬২ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন, এই সপ্তাহে সেই একই চাল বিক্রি করছেন ৫৮ টাকা কেজি দরে। ঢাকার পাইকারি বাজারে দাম কমলেও অনেক স্থানেই গলির মুদি দোকানগুলোতে এখনো দাম কমার প্রভাব পড়েনি। 

টিসিবির বাজার তদারকি প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে চালের দাম কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। গত সপ্তাহে যেখানে সরু চাল প্রতিকেজি ৬৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, চলতি সপ্তাহে সেটা বিক্রি হচ্ছে ৬৪ থেকে ৭৫ টাকায়। একইভাবে পাইজাম বা মাঝারি চাল ৫৪ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৫ থেকে ৬২ টাকা। মোটা চাল চলতি সপ্তাহে ৫২ থেকে ৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা গত সপ্তাহে প্রতিকেজি ৫৫ থেকে ৫৮ টাকায় উঠেছিল। 

কুষ্টিয়া জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুস সামাদ বলেন, এক সপ্তাহ ধরে চালের কোনো বেচাকেনা নাই। কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা পর্যন্ত কমিয়ে দিয়েছি আমরা। এর আগে তেলের দাম বাড়ানোর পর মানুষের মধ্যে একটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। চালের দাম কোথায় গিয়ে ঠেকে- সেই ভয়ে অনেকেই অতিরিক্ত চাল কিনে ফেলেছিলেন। এখন কেউ মাল কিনতেই চাচ্ছে না। 

ভারতীয় চাল কি মূল্যে দেশে ঢুকে সেটা দেখার জন্যও অনেকে অপেক্ষা করছেন। সে কারণে আমরা দাম কমিয়ে দিয়েছি। কুষ্টিয়ায় এখন ৩২৫০ টাকার মধ্যে সরু চাল বিক্রি হচ্ছে। কাজল লতা ২৯০০ টাকা মিল রেট, পাইজাম শেষের পথে- ২৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইজামের দাম ২৬৫০ টাকায় উঠেছিল। চালের দাম কমতে থাকায় ধানের দামও কমছে জানিয়ে তিনি বলেন, ধানের দাম অস্বাভাবিক পর্যায়ে যেটা ছিল সেই রকম এখন নাই। এখন মিনিকেটের ধান প্রতিমণ ১৫০০ টাকা চলে; যেটা সাড়ে ১৬০০ টাকায় উঠেছিল। কাজল লতা ১৪০০ থেকে কমে ১৩২০ টাকায় নেমেছে। মোটা ধান এখন ১০৫০ টাকার মধ্যে আছে। 

খুলনার চাল আমদানিকারক কাজী সুজন বলেন, শুল্ক কমানোর ফলে এখন আমদানি বাড়ছে। আগে ভারতের বাজারে দাম বেশি হওয়ায় আমদানি কম হচ্ছিল। এখন প্রতিকেজি মোটা চালে ৪৭ টাকার মত খরচ হচ্ছে। সরু চাল ৬৫ টাকার মধ্যে আমদানি খরচ পড়ছে। ডলারের দাম স্থিতিশীল না হওয়ার কারণে আমদানি খরচ একই রকম থাকছে না।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]