#বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সব সময় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকবে: ড. ওয়ালি-উর রহমান। #বর্তমানে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের স্বর্ণালি সময়: কর্ণেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দীন। #এই সফরে দুদেশের মধ্যে অমীমাংসিত বিষয় মীমাংসিত হবে: শাহিদুল হাসান খোকন।
প্রকাশ: শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১১:৩৯ পিএম আপডেট: ০৩.০৯.২০২২ ১২:৫৬ এএম | অনলাইন সংস্করণ
আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মাসের ৫ তারিখে ভারত সফরে যাচ্ছেন। এইযে আসা-যাওয়াটা, এরমধ্যে নতুন কিছু নেই; এটা খুব স্বাভাবিক পক্রিয়া। ভারতের প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশে আসবেন এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রী তাদের দেশে যাবেন, এটাই হয়ে আসছে এবং সামনেও হবে। যখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে যাবেন তার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্কের মেল বন্ধন আরও শক্ত হবে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৮১৫তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক বিশেষ দূত, বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ড. ওয়ালি-উর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক কর্নেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দীন, সেন্টার ফর ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ রিলেশনসের পরিচালক শাহিদুল হাসান খোকন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
ড. ওয়ালি-উর রহমান বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মাসের ৫ তারিখে ভারত সফরে যাচ্ছেন। এইযে আসা-যাওয়াটা, এরমদ্ধে নতুন কিছু নেই; এটা খুব স্বাভাবিক পক্রিয়া। ভারতের প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশে আসবেন এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রী তাদের দেশে যাবেন, এটাই হয়ে আসছে এবং সামনেও হবে। কিন্তু আমি চাইবো আরও এই যাওয়া-আসা বাড়ুক। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের ভূমিকা ভোলার কোনো সুযোগ নেই আমাদের। তখন বাংলাদেশের মানুষ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এক ভয়ংকর দানবীয় আক্রমণের মধ্যে পতিত হয়েছিল। সে সময় ভারত ছিল বাংলাদেশের মানুষের জন্য বড় ভরসা। বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি শরণার্থীর পাশে ভারতের মানুষ, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়সহ বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ যেভাবে নিঃস্বার্থভাবে দাঁড়িয়েছিলেন, তা অবশ্যই অবিস্মরণীয় ঘটনা। আমরা সব সময়ই তাদের সেই অবদান কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করব। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সব সময় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল, আছে এবং থাকবে। ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্কের কিন্তু একটু ছেদ পড়েছিল কিন্তু যখন শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসলেন তখন থেকে পুনরায় তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক আরও মসৃণ হতে থাকে।
কর্ণেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দীন বলেন, আজকের ভোরের পাতা সংলাপের আলোচ্য বিষয়, বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্ব চিরজীবী হোক। এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের বন্ধুত্ব মানে দুই দেশে আত্মার সঙ্গে মিল, ঐতিহ্যের সঙ্গে মিল, সংস্কৃতির সঙ্গে মিল; এখানেই দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ মিল থাকে। এর বাইরেও একটি রাষ্ট্রের সাথে আরেকটি রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আরেকটি সম্পর্ক হচ্ছে কূটনৈতিক সম্পর্ক। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৭৫-এর ১৪ আগস্ট পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেছিল সে সময়ে বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক খারাপ পর্যায়ে পৌঁছায়। এরপর যখন থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছে তখন থেকে সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ হতে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক চমৎকার। বিশেষ করে দুদেশের সরকারের মধ্যে তো বটেই। সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুদেশের মন্ত্রী-আমলাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে প্রায়ই এ সম্পর্ক নিয়ে বক্তব্য দিতে শোনা যায়। স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসেও এ সম্পর্ক নিয়ে আরও বেশি কথা হয়। বাংলাদেশ সবসময়েই ভারতের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করবে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বরে যখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে যাবেন তার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্কের মেল বন্ধন আরও শক্ত হবে।
শাহিদুল হাসান খোকন বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আত্মার সম্পর্ক। ভারতের মূল্যবান ভূমিকা এবং অকৃত্রিম বন্ধুত্বের কারণে আমরা ১৯৭১ সালে স্বল্প সময়ের মধ্যে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছিলাম। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে এই সম্পর্কটি যে জায়গায় যাওয়ার কথা ছিল সেই জায়গায় এখনো পৌছায়নি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং এর মাধ্যমে ক্ষমতার দখল নেয় ৭১-এর পরাজিত শক্তি। ক্ষমতায় এসেই তারা শুরু করে ভারত বিরোধিতা এবং জাগিয়ে দেয় সাম্প্রদায়িক উসকানি। দীর্ঘ ২১ বছর অপশক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে ক্ষমতায় আসেন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। ক্ষমতায় এসেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দেশের সম্পর্ক পূর্ব অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা শুরু করে বাড়িয়ে দেন বন্ধুত্বের হাত। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সময়কালে বর্তমানে দু দেশের সম্পর্কে একটি স্বর্ণযুগ চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের ভারত সফরে ভারতের মানুষের মধ্যে অন্যরকম আগ্রহের জায়গা তৈরি হয়েছে। তাদের দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে এখন পর্যন্ত যে অমীমাংসিত বিষয়গুলো রয়েছে সেগুলো এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে মীমাংসিত হবে।