#শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করবো: আতিয়ার রসুল কিটন। #আগস্টের ষড়যন্ত্র পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোথাও নেই: আব্দুর রহিম শামীম।
বাঙালি জাতির জন্য নিষ্ঠুরতম মাস। কান্নার মাস। বেদনার মাস। শোকাবহ আগস্টে বাঙালি জাতি হারিয়েছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। শুধু বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের প্রায় সকল সদস্যকে হত্যা করেই শান্ত হয়নি শত্রুপক্ষ। এ মাসেই তার সুযোগ্যা কন্যা, দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে মারার চেষ্টা করা হয়। বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতি সেই হত্যাকারী-ষড়যন্ত্রকারীদের কোনোদিনও ক্ষমা করবে না।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৮০৯তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইতালি আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার রসুল কিটন, লন্ডন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক, সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুর রহিম শামীম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
আতিয়ার রসুল কিটন বলেন, বাঙালি জাতির জন্য নিষ্ঠুরতম মাস। কান্নার মাস। বেদনার মাস। শোকাবহ আগস্টে বাঙালি জাতি হারিয়েছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। শুধু বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের প্রায় সকল সদস্যকে হত্যা করেই শান্ত হয়নি শত্রুপক্ষ। এ মাসেই তার সুযোগ্যা কন্যা, দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে মারার চেষ্টা করা হয়। ভাগ্যক্রমে সেদিন তিনি বেঁচে গেলেও অনেক নেতাকর্মীকে ওইদিন জীবন দিতে হয়। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের কয়েক বছর পর একদল অকৃতজ্ঞ বাঙালি নৃশংসভাবে হত্যা করে জাতির পিতাকে। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ দেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর তিন ছেলে- শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল। পৃথিবীর এই ঘৃণ্যতম হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসের, ভগ্নীপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মণি, তার সহধর্মিণী আরজু মণিসহ পরিবারের ১৬ সদস্য ও আত্মীয়স্বজন। বাঙালি জাতি এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড মেনে নেয়নি। বঙ্গবন্ধুকন্যা, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রুখে দাঁড়িয়েছে। হত্যাকাণ্ডের যে খলনায়কদের বিচার না করে পুরস্কৃত করা হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার করেছে। জাতিকে করেছে কলঙ্কমুক্ত।আগস্ট আমাদের শোকের মাস, যে শোক থেকে পুনর্জন্ম হয়েছে শক্তির, আর শক্তি থেকে জাগরণ, জাগরণ থেকে সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়নের শপথ। সুতরাং এ মাসে আমাদের সজাগ থাকতে হবে, সচেতন হতে হবে, সোচ্চার হতে হবে সব অপশক্তির বিরুদ্ধে। সুতরাং আমাদের উচিৎ জাতির পিতার স্বপ্ন সম্পূর্ণ রূপে বাস্তবায়নের জন্য জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
আব্দুর রহিম শামীম বলেন, আগস্ট মাস আসলেই মনে হয় আমাদের পিতা আমাদের মাঝে নেই। আগস্ট মাস আমাদের বেদনাকাতর করে দেয়। এখনো আমার বিশ্বাস হয় না যে তিনি আমাদের মধ্যে নেই। আগস্ট মাসে এত শোকাবহ ঘটনা ঘটেছে, বাংলাদেশের মানুষ, আগস্ট এলে শোকে পাথর হয়ে যায়। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট দীর্ঘ ষড়যন্ত্র ও নীলনকশার অংশ হিসেবে হত্যা করা হলো হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। নিষ্ঠুরতা, বর্বরতা এতটাই উৎকট ছিল, ঘাতকের বুলেটের নির্মমতা থেকে বঙ্গবন্ধু স্বজনদের কেউ রেহাই পায়নি। সেদিন অকল্পনীয় নির্মমতায় হত্যা করা হলো বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধু অনুজ শেখ নাসের, বঙ্গবন্ধুর পুত্র শেখ জামাল, শেখ কামাল, শেখ রাসেল এবং কামাল-জামালের নববিবাহিত স্ত্রী সুলতানা কামাল ও রোজী জামালকে। ঘাতকরা এতটাই পাষণ্ড পশু হয়ে উঠেছিল, শিশু রাসেলের বেঁচে থাকার কাকুতি বুলেটের শব্দে স্তব্ধ করে দিয়েছিল তারা। ১৫ আগস্টের এই বর্বরতা শুধু কয়েকজন বিপদগামী উচ্চাভিলাষী সামরিক কর্মকর্তার দলবদ্ধ আস্ফালন ছিল না, এর পেছনে ছিল দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে সরিয়ে দিয়ে সরকারের পরিবর্তন আনাই শুধু নয়, পাকিস্তানি ভাবাদর্শে বাংলাদেশের যাত্রাপথ ঘুরিয়ে দেওয়াটাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। এই ধরণের নির্মম হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর অন্য কোন হত্যাকাণ্ডের সাথে তুলনা করা যায়না। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বাংলাদেশে ঘটেছিল একটি জঘন্য, মর্মান্তিক ঘটনা। ঢাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে পূর্বপরিকল্পিতভাবে চালানো হয় গ্রেনেড হামলা। নৃশংস এই হামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী, আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। অলৌকিকভাবে বেঁচে যান তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে মানবপ্রাচীর গড়ে তুলে রক্ষা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতিকে। ন্যক্কারজনক এই গ্রেনেড হামলার সময় রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল বিএনপি। ক্ষমতাসীনরা এই জঘন্য হত্যাকাণ্ড ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে নানা মিথ্যাচার ও নাটকের অবতারণা করে। কিন্তু আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে এই হত্যাকাণ্ড তদন্ত নতুন করে শুরু হলে বেরিয়ে আসে অনেক লোমহর্ষক ঘটনা। বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতি সেই হত্যাকারী-ষড়যন্ত্রকারীদের কোনোদিনও ক্ষমা করবে না।